সম্পাদকীয়

  ০৪ মে, ২০২১

ক্রেতা-বিক্রেতাদের স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে

ঈদ সামনে রেখে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও দোকানপাট খুলে দিয়েছে সরকার। কথা ছিল ক্রেতা-বিক্রেতা সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবেন। কিন্তু করোনার এমন ঊর্ধ্বমুখীতে কারোর মধ্যেই সতর্কতার কোনো বালাই নেই। ব্যবসায়ীদের আর্থিক ক্ষতির বিষয়টি চিন্তা করে সরকার যে উদারতা দেখিয়েছে, তা যেন গুড়েবালিতে পরিণত না হয়। এ ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। কারণ রাজধানীর দু-একটি শপিং মল ছাড়া কোথাও স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না বললেই চলে। অনেক শপিং মলে হাত ধোয়ার বা স্যানিটাইজার ব্যবহারের ব্যবস্থা নেই। তাপমাত্রা মাপার ব্যবস্থাও নেই। ক্রেতাদের প্রায় কেউই সামাজিক দূরত্ব মানছেন না। এমনকি ক্রেতা-বিক্রেতা অনেকেই মাস্ক পর্যন্ত পরেন না। করোনা-সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি কমিটি এরমধ্যে সতর্ক করেছে, এভাবে চলতে থাকলে পরিস্থিতি শিগগিরই খুব খারাপ হয়ে যেতে পারে।

গতকাল প্রতিদিনের সংবাদে প্রকাশিত ‘স্বাস্থ্যবিধি মানতে অনীহা ক্রেতা-বিক্রেতাদের’ শীর্ষক এক সরেজমিন প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, নভেল করোনাভাইরাসে সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়েই রাজধানীর শপিং মলগুলোতে ঈদ কেনাকাটায় ভিড় করছেন ক্রেতারা। তবে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষার নেই কোনো ব্যবস্থা, স্বাস্থ্যবিধি মানায়ও দেখা গেছে অনীহা। রবিবার নিউমার্কেট, বেইলি রোড, মৌচাকসহ বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে এই চিত্র। তুলনামূলকভাবে অন্যান্য দোকানের চেয়ে পোশাকের দোকানেই ক্রেতাদের ভিড় সবচেয়ে বেশি। কিন্তু অধিকাংশ পোশাকের দোকানের মূল ফটকে হ্যান্ড স্যানিটাইজার থাকলেও ক্রেতারা খুব বেশি তা ব্যবহারে আগ্রহ দেখান না। আবার কারো কারো মুখে মাস্ক থাকলেও সামাজিক দূরত্ব রক্ষায় রয়েছে প্রবল অনীহা। অন্যদিকে ক্রেতা সামলাতে ব্যস্ত দোকানিরা নিজেদের সুরক্ষার দিকেও নজর দেওয়ার সেই সুযোগ পাচ্ছেন না। যা সবার জন্য প্রবল ক্ষতির কারণ। রাজধানীর মার্কেটগুলোর মধ্যে নিউমার্কেটে করোনাকালীন স্বাস্থ্যবিধি সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত। মার্কেটের প্রবেশদ্বারে রাখা হয়নি জীবাণুনাশক টানেল। প্রায় প্রতিটি দোকানেই বড়দের সঙ্গে ভিড় থাকে শিশুদেরও। আবার একই দোকানে একাধিক লোক একসঙ্গে ভিড় করেন। জিনিসপত্র নেড়েচেড়ে দেখেন। একই জিনিস একাধিক লোক স্পর্শ করেন। এতে স্বাস্থ্যবিধি রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়ে। ফলে ক্রেতা-বিক্রেতা কেউ না কেউ করোনার ঝুঁকিতে রয়েছে। এদিকে অবশ্যই নজর দিতে হবে।

বলা সংগত, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও দোকানপাট চালু রাখার কারণে সড়কে মানুষের চলাচল আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। একই সঙ্গে স্বাস্থ্যবিধিও মানা কঠিন হয়ে পড়ছে। দোকান-ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ায় ব্যবসায়ীরা খুশি হয়েছেন। সরকারের সিদ্ধান্তে মাঝারি ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের মধ্যে কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরে এসেছে। সেক্ষেত্রে সরকারের দেওয়া শর্ত বা নির্দেশনা মেনেই দোকানপাট-শপিং মল খোলা রাখতে হবে। কোনো ধরনের অনিয়ম করা যাবে না। সরকার যেমন দেশের জনগণের কথা চিন্তা করছে, ঠিক তেমনি ব্যবসায়ীদের সরকারের নির্দেশনাও মেনে চলতে হবে। অথচ এখনো দেশে মানুষের মধ্যে সচেতনতার প্রচন্ড অভাব। যেকোনোভাবেই হোক এই অনিয়ম রুখতে হবে। নতুবা সামান্য অবহেলায় বড় ধরনের ঝুঁকিতে পড়বে দেশ। তা আমাদের করোরই কাম্য নয়। তাই ক্রেতা-বিক্রেতা সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে আর এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

পিডিএসও/হেলাল

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
ক্রেতা-বিক্রেতা,স্বাস্থ্যবিধি,সম্পাদকীয়
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close