মাওলানা মাসউদুল কাদির

  ১৫ এপ্রিল, ২০২১

রোজায় দূর হোক কোভিড

পুণ্যের আধার একটি ‘মাহিনা’র নাম রমজান। বরকতময় এই মাসের জন্য মোমিনরা সুতীব্র আশায় ছিলেন। আবেগ-ভালোবাসায় আমলের আকাঙ্ক্ষা ও বাসনায় ‘আল্লাহুম্মা বারিক লানা ওয়া বাল্লিগনা রামাদান’ উচ্চারিত হচ্ছিল মোমিনের মুখে মুখে। আবেগঘন এক ভালোবাসার পঙতিমালা। হে আল্লাহ! আপনি হায়াতে রমজান পর্যন্ত বরকত দান করুন। আমরা যারা বেঁচে আছি, মহান আল্লাহর রহমতে সিয়ামকে পেয়েছি। আল্লাহর অনেক বড় মেহেরবানি।

সত্যিকার অর্থেই আমরা পৌঁছে গেছি পবিত্র রমজানে। এ মাহিনার প্রতিটি ইফতার, সাহরি ও তারাবিতে আল্লাহ তায়ালা দোয়া কবুল করবেন। বিশ্বময় তছনছ করে দিচ্ছে করোনার মতো একটি ভাইরাস। এ থেকে বিশ্ব এমনকি আমাদের বাংলাদেশের মানুষ মুক্তি চায়। এ রোজায় আল্লাহর কাছে প্রার্থনা হোক বরকতের মাসের ছোঁয়ায় দূর হোক কোভিড মহামারি।

আমরা জানি, রোজায় আল্লাহর অবারিত রহমতে ছেয়ে যায় দুনিয়া। মানুষ নিজেকে অতীব সুন্দরতম করে গড়ে তুলতে একটা নিয়মিত তারবিয়াতে, প্রশিক্ষণে অংশ নেয়। সিয়ামের সাহরি থেকে ইফতার পর্যন্ত প্রতিটি আমলই প্রশিক্ষণের। প্রশিক্ষিত বান্দা যেন হররোজ ভালো থাকে আমল-আখলাকে। এক মাসের প্রশিক্ষণে পরের ১১ মাস যেন নিজেকে সামলে চলতে পারে। অপরাধের পথ থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে চলতে পারে।

রহমতের দশ দিন শুরু না হতেই সমাজে রহমতের প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। স্বচক্ষে দেখা যায়। কী পরিমাণ পরিবর্তন হয়েছে রহমতের আবহে গোটা সমাজ। মানুষ সবকিছুতে সংযত, সংযমী হয়। বেচাকেনায়, কথা বলায়, চলাফেরায়—ফলে সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে রহমতের ধারা প্রবাহিত হয়। রহমতের অনন্য বরকত ছড়িয়ে পড়ে।

রোজার প্রতিদান সরাসরি মহান আল্লাহ দেবেন বলে মানুষের আগ্রহও এর প্রতি অনেক। এক হাদিসে আছে, হজরত সাহল ইবন সাদ (রা.) বর্ণনা করেন, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘বেহেশতে আটটি দরজা রয়েছে। এর মধ্যে একটি দরজার নাম রাইয়ান।’ রোজাদাররা ছাড়া ওই দরজা দিয়ে আর কেউই প্রবেশ করত পারবে না। (সহিহ বোখারি ও মুসলিম)

রোজায় প্রতিটি পরিবারে শান্তি ফিরে আসে। কলহ কম হয়। ঝগড়াও কম হয়। মানুষ আগের চেয়ে অনেক বেশি সহনশীল হয়। পরিবারের সব সদস্যের মধ্যেই আলাদা একটা সহনীয় মানসিকতার সৃষ্টি হয়। তাই বিবাদ কমে যায়। পরিবারে শান্তি ফিরে আসে। একে অপরের প্রতি টানও বহুগুণে বেড়ে যায়। রোজার এই রহমতের ছায়া একান্তই পারিবারিক জীবনের প্রশান্তির পাঠশালা বলা যায়।

রোজার প্রথম দশ দিন রহমতের। রহমত কেবল এই দশ দিনের জন্য থাকে না। সারা জীবনই রহমতের এই আভা মন রাঙিয়ে রাখে। মাগফিরাত সত্যিই যেন গ্রহণ করতে পারি। মুক্তির সনদ পেয়ে আখিরাতের সব কল্যাণে যেন আমরা বরিত হই।

রোজার প্রতিটি ক্ষণ বা মুহূর্তই পুণ্যময়, বরকতময়। পুণ্য ছাড়া কোনো মুহূর্ত নেই। সাহরি, সালাত, কোরআন তিলাওয়াত, ইফতার, তারাবি, কিয়ামুল লাইলসহ নানা রকম পুণ্যময় আমলেই ডুবে থাকে মোমিন। এজন্যই মাহে রমজানকেই বলা হয় পুণ্যের আধার।

লেখক : সাংবাদিক ও কথাসাহিত্যিক [email protected]

পিডিএসও/হেলাল

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
রোজা,কোভিড,রমজান,মাসউদুল কাদির
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close