reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১

এরিকো-ইমরানের আইনজীবীকে সমাধানের পথ খুঁজতে বলেছে হাইকোর্ট

দুই শিশু সন্তান নিয়ে বাংলাদেশি বাবা শরীফ ইমরান ও জাপানী মা নাকানো এরিকোর আইনজীবীদের একটি সুন্দর সমাধানে পৌঁছাবেন বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট।

বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।

একই সঙ্গে হাইকোর্টের নির্দেশনায় বলা হয়, গুলশানের ভাড়া ফ্ল্যাটে জাপানি নাগরিক নাকানো এরিকো ও বাংলাদেশি শরীফ ইমরান দুই শিশুসন্তান নিয়ে শুক্রবার থেকে একদিন বাবা, একদিন মা থাকবেন।

নির্দেশনায় বলা হয়, শুক্রবার সকাল ৮টায় প্রথমে মা যাবেন। পরদিন সকাল ৮টায় তিনি বাসা থেকে বেরিয়ে যাবেন। এরপর বাবাকেও একই নিয়ম অনুসরণ করতে বলা হয়েছে।

এরই মধ্যে তাদের দুই সন্তানের ভবিষ্যৎ ও দেশের ভাবমূর্তি রক্ষায় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বাবা ও জাপানি মায়ের আইনজীবীরা সুন্দর সমাধানের চেষ্টা করবেন বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট।

দুই পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে আইনজীবীরা বিষয়টি সমাধান করত আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর আবার শুনানির দিন ঠিক করেছেন আদালত।

আদালতে মায়ের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনি। বাবার পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ। তার সাথে ছিলেন মো. মোস্তাফিজুর রহমান।

হাইকোর্টের নির্দেশনার আলোকে জাপানি নাগরিক নাকানো এরিকো ও বাংলাদেশি-আমেরিকান শরীফ ইমরান দুই শিশুসন্তান নিয়ে বর্তমানে গুলশানের একটি ভাড়া ফ্ল্যাটে রয়েছেন। গত ৩১ আগস্ট হাইকোর্টের ভার্চুয়াল বেঞ্চ তাদের ১৫ দিন ভাড়া বাসায় থাকার আদেশ দিয়েছিলেন।

২০০৮ সালে জাপানি চিকিৎসক নাকানো এরিকো ও বাংলাদেশি-আমেরিকান নাগরিক শরীফ ইমরান (৫৮) জাপানি আইন অনুযায়ী বিয়ে করে টোকিওতে বসবাস শুরু করেন। তাদের ১২ বছরের সংসারে তিন কন্যাসন্তান জন্ম নেয়। তারা তিনজনই টোকিওর চফো সিটিতে অবস্থিত আমেরিকান স্কুল ইন জাপানের শিক্ষার্থী ছিলেন।

চলতি বছরের ১৮ জানুয়ারি শরীফ ইমরানের এরিকোর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ হয়। ২১ জানুয়ারি ইমরান আমেরিকান স্কুল ইন জাপান কর্তৃপক্ষের কাছে তার মেয়ে জেসমিন মালিকাকে নিয়ে যাওয়ার আবেদন করেন। কিন্তু এতে এরিকোর সম্মতি না থাকায় স্কুল কর্তৃপক্ষ ইমরানের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। এরপর একদিন জেসমিন মালিকা ও লাইলা লিনা স্কুলবাসে বাড়ি ফেরার পথে বাসস্টপ থেকে ইমরান তাদের অন্য একটি ভাড়া বাসায় নিয়ে যান।

গত ২৫ জানুয়ারি শরীফ ইমরান তার আইনজীবীর মাধ্যমে এরিকোর কাছ থেকে মেয়েদের পাসপোর্ট হস্তান্তরের আবেদন করেন। কিন্তু এরিকো ওই আবেদন প্রত্যাখ্যান করে মেয়েদের নিজ জিম্মায় পেতে আদেশ চেয়ে গত ২৮ জানুয়ারি টোকিওর পারিবারিক আদালতে মামলা করেন। আদালত ৭, ১১ ও ১৪ ফেব্রুয়ারি মেয়েদের সঙ্গে এরিকোর সাক্ষাতের অনুমতি দিয়ে আদেশ দেন।

কিন্তু ইমরান আদালতের আদেশ ভঙ্গ করে মাত্র একবার মায়ের সঙ্গে দুই মেয়েকে সাক্ষাতের সুযোগ দেন। এরপর গত ৯ ফেব্রুয়ারি ‘মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে’ ইমরান তার মেয়েদের জন্য নতুন পাসপোর্ট গ্রহণ করেন। ২১ ফেব্রুয়ারি জেসমিন মালিকা ও লাইলা লিনাকে নিয়ে তিনি দুবাই হয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন।

এরপর গত ৩১ মে টোকিওর পারিবারিক আদালত জেসমিন মালিকা ও লাইলা লিনাকে তাদের মা এরিকোর জিম্মায় হস্তান্তরের আদেশ দেন। তবে দুই মেয়ে বাংলাদেশে থাকায় বিষয়টি নিয়ে তিনি বাংলাদেশের একজন মানবাধিকার কর্মী ও আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শ করেন। গত ১৮ জুলাই তিনি শ্রীলঙ্কা হয়ে বাংলাদেশে আসেন।

পিডিএসও/ জিজাক

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
হাইকোর্ট,এরিকো-ইমরান,আইনজীবী
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close