তিন দিনের ভারী বর্ষণ ও বন্যায় বিপর্যস্ত ভারতের উত্তরাখন্ড রাজ্য। সেখানে অন্তত ১৬ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে সৃষ্ট বন্যায় বাড়ি-ঘর তলিয়ে এবং ধ্বংসাবশেষের নিচে লোকজন আটকা পড়ায় প্রাণহানি আরও বাড়তে পারে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।

মঙ্গলবার (১৯ অক্টোবর) উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুশকর সিং ধামী বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে রাজ্যের পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছে। বাড়ি-ঘর, সেতু ইত্যাদি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং এখন পর্যন্ত ১৬ জন মারা গেছেন। উদ্ধার অভিযান পরিচালনার জন্য সেনাবাহিনীর তিনটি হেলিকপ্টার মোতায়েন করা হবে।

টানা ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে পার্বত্য রাজ্যটির বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক বিশৃঙ্খলা ও দুর্যোগ নেমে এসেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে ছড়িয়ে পড়া বন্যার ভিডিওতে দেখা যায়, রাজ্যের অনেক এলাকার রাস্তাঘাট, বাড়িঘর তলিয়ে গেছে, সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। স্থানীয় নদীর দুকূল উপচে পানি ঢুকে পড়েছে শহরাঞ্চলেও। ভূমিধসের কারণে তিনটি প্রবেশপথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় রাজ্যের অন্যতম নৈসর্গিক পর্যটন জেলা নৈনিতালের সঙ্গে যোগাযোগ পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।

তবে বন্যায় যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে নেপালের অভিবাসী শ্রমিকও আছেন বলে জানিয়েছে সংবাদসংস্থা পিটিআই। ওই শ্রমিকরা রাজ্যের পাউরি জেলার পাহাড়ি এলাকায় থাকতেন। সেখানে পাহাড় থেকে নেমে আসা ঢলের নিচে জীবন্ত চাপা পড়েন তারা।

রাজ্যের পাশাপাশি দেশটির জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনী এবং সেনাবাহিনীকে উদ্ধার ও ত্রাণ পরিচালনার জন্য মোতায়েন করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী ধামী পিটিআইকে জানান, সেনাবাহিনীর তিনটি হেলিকপ্টার উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রমে অংশ নেবে। এর মধ্যে দুটি হেলিকপ্টারকে নৈনিতাল অঞ্চল এবং তৃতীয়টি গারওয়াল অঞ্চলে আটকে পড়া লোকজনকে উদ্ধারের জন্য পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

এএনআইয়ের আরেকটি ভিডিওতে দেখা যায়, হালদওয়ানি জেলার গাউলা নদীর ওপর একটি সেতু ভেঙে পড়া শুরু হয়েছে এবং একজন মোটরসাইকেল আরোহী সেতু পেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। সেই সময় দুই থেকে তিনজন মানুষ চিৎকার করে ওই ব্যক্তিকে সতর্ক করে দেন। পরে বিপদ বুঝতে পেরে তিনি পিছু হটে যান।

রাজ্যটির বিপর্যয়কর পরিস্থিতির কারণে সব স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া নন্দা দেবী বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ এবং বিভিন্ন বন বিভাগসহ পর্বতারোহণ, ট্রেকিং এবং ক্যাম্পিং কার্যক্রমের ওপর ও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।