জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি

  ১১ মে, ২০২২

জাবি শিক্ষার্থীর মৃত্যুতে রহস্য, ‘হত্যা নাকি আত্মহত্যা’ : তদন্ত দাবি

ছবি : প্রতিদিনের সংবাদ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ রফিক-জব্বার হলের ‘ছাদ থেকে পড়ে নিহত’ শিক্ষার্থী অমিত কুমার বিশ্বাসের কক্ষ থেকে একটি ‘সুইসাইড নোট’ পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার (১০ মে) রাতে নিহত শিক্ষার্থীর বিছানার বালিশের নিচে সেটি খুঁজে পান তার রুমমেটরা।

শহীদ রফিক-জব্বার হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক সোহেল আহমেদ জানান, গতকাল রাত আটটা পঞ্চাশের দিকে ওর রুমমেটরা জানাল যে তারা অমিতের বালিশের নিচ থেকে একটা সুইসাইড নোট পেয়েছে। পরে আমি হলে গিয়েছি। তারপর পুলিশকে জানালে আশুলিয়া থানা থেকে পুলিশ আসে। সুইসাইড নোটের লেখার সাথে অমিতের লেখার মিল রয়েছে। বাকিটা পুলিশ দেখবে। রুমটি সিলগালা করা হয়েছে। ওর মরদেহ ময়নাতদন্ত হবে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ‘সুইসাইড নোটে’ লেখা রয়েছে, “আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী না। আমার মস্তিষ্কই আমার মৃত্যুর জন্য দায়ী। আমি নিজেই নিজের শত্রু হয়ে পড়েছি অজান্তেই। নিজের সাথে যুদ্ধ করতে করতে আমি ক্লান্ত। আর না। এবার মুক্তি চাই। প্রিয় মা, বাবা, ছোটবোন, পারলে সবাই আমাকে ক্ষমা করে দিও।” নোটের শেষে ‘অমিত’ লেখা।

এদিকে ‘সুইসাইড নোটটি’ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর সেটি যাচাইপূর্বক অমিত কুমার বিশ্বাসের মৃত্যুর ঘটনা তদন্তের দাবি উঠেছে। গণিত বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থী বিপ্লব দাস একটি ফেসবুক গ্রুপে লিখেছেন, “সুইসাইড নোট নিয়ে কিছু সন্দেহ: আত্মহত্যা করার যত উপায় আছে সবচেয়ে কঠিন এবং অনিশ্চিত উপায় হলো ছাদ থেকে লাফ দেয়া। আর বৃষ্টির মধ্যে মাত্র ৪/৫ তলা থেকে লাফ দিলেই মৃত্যু নিশ্চিত হয়ে যায় না। দশ সালে মারামারির সময় আল বেরুনী হলের ৩/৪ তলা থেকে কয়েকজনকে ফেলে দেয়া হয়েছিল, গুরুতর আহত ব্যতীত একজনও মারা যায়নি। তবে আত্মহত্যা করার জন্য অপেক্ষাকৃত অনেক সহজ এবং নিশ্চিত উপায় রেখে বৃষ্টির মধ্যে ছাদ থেকে লাফ দেওয়া সুইসাইড নোট লিখে যাওয়া একজন আত্মহত্যাকারীর সিদ্ধান্ত হবার কথা নয়। নিশ্চিতভাবেই অনেক প্রশ্ন থেকে যায়। তাই সঠিক তদন্ত হওয়া আবশ্যক মর্মে প্রতীয়মান হয়। সঠিক তদন্ত চাই।”

আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জিয়াউল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, তদন্তের জন্য সুইসাইড নোট, মোবাইল ও খাতা সংগ্রহ করা হয়েছে।

এর আগে মঙ্গলবার দুপুরে শহীদ রফিক-জব্বার হলের ছাদ থেকে পড়া উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের ৪৫ ব্যাচের শিক্ষার্থী অমিত কুমার বিশ্বাসকে আহত অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল সেন্টারে নিয়ে যান কয়েকজন শিক্ষার্থী। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় সেখান থেকে তাকে দ্রুতই সাভারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে বিকেল ৫টার দিকে সেখানে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
জাবি,শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা,রফিক-জব্বার হল,অমিত কুমার বিশ্বাস
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close