কক্সবাজার প্রতিনিধি

  ২৩ অক্টোবর, ২০২১

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সেভেন মার্ডারের ঘটনায় ৮ জন গ্রেপ্তার

সন্ত্রাসীদের হামলা ক্ষত-বিক্ষত মাদরাসা। ছবি : প্রতিদিনের সংবাদ

উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অবস্থিত ‘দারুল উলুম নাদওয়াতুল ওলামা আল-ইসলামিয়া’ মাদ্রাসায় রোহিঙ্গা দুষ্কৃতিকারীদের হামলায় ৭ নিহতের ঘটনায় এ পর্যন্ত ৮ জনকে আটক করেছে এপিবিএন পুলিশ।

শুক্রবার (২২ অক্টোবর) দিবাগত রাতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয় বলে জানিয়েছেন ৮ এপিবিএন এর অধিনায়ক পুলিশ সুপার শিহাব কায়সার।

এর আগে শুক্রবার (২৩ অক্টোবর) ভোরে আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলিসহ জসিম নামে এক রোহিঙ্গাকে আটক করেছিল। তিনি জানান, শুক্রবার রাতভর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অভিযান চালানো হয়। আটকদের পরিচয় তিনি তাৎক্ষণিক জানাননি।

অপরদিকে, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ৭ জনের হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় উখিয়া থানায় এখনো মামলা হয়নি। এপিবিএন এর অধিনায়ক শিহাব কায়সার জানান, শুক্রবার মধ্য রাতে নিহত মাদ্রাসা শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের নামাজে জানাজা ও দাফন সম্পন্ন হয়।

এদিকে, ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া খবরে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার দিবাগত ভোর রাতে বালুখালী ১৮ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এইচ ব্লকে অবস্থিত দারুল উলুম নাদওয়াতুল ওলামা আল ইসলামিয়াহ মাদ্রাসায় রোহিঙ্গা দুষ্কৃতকারীরা হামলা চালালে মসজিদে আশ্রয় নিয়েও রেহাই পায়নি তারা। সেখানেও দুইজনকে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা।

বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) দিবাগত ভোর রাত ৪টার দিকে কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প-১৮ এর এইচ-৫২ ব্লকে অবস্থিত ‘দারুল উলুম নাদওয়াতুল ওলামা আল-ইসলামিয়াহ’ মাদ্রাসায় এ হামলার ঘটনা ঘটে।

এর আগে পুলিশ ওই ক্যাম্পে দু’গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের কথা বলা হলেও পরে ক্যাম্পে দায়িত্বরত এপিবিএন পুলিশ মাদ্রাসায় হামলার কথা নিশ্চিত করেন।

হামলায় নিহতরা হলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্প-১২, ব্লক-জে-৫ এর বাসিন্দা হাফেজ ও মাদ্রাসা শিক্ষক মোঃ ইদ্রীস (৩২), ক্যাম্প-৯ ব্লক-১৯ এর মৃত মুফতি হাবিবুল্লাহর ছেলে ইব্রাহীম হোসেন (২৪), ক্যাম্প-১৮, ব্লক-এইচ -৫২ এর নুরুল ইসলামের ছেলে মাদ্রাসার ছাত্র আজিজুল হক (২২), একই ক্যাম্পের ভলান্টিয়ার আবুল হোসেনের ছেলে মোঃ আমীন (৩২)। এছাড়াও রোহিঙ্গা ক্যাম্পের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন ‘এফডিএমএন’ ক্যাম্প-১৮, ব্লক-এফ-২২ এর মোহাম্মদ নবীর ছেলে মাদ্রাসা শিক্ষক নুর আলম ওরফে হালিম (৪৫), এফডিএমএন ক্যাম্প-২৪এর রহিম উল্লাহর ছেলে মাদ্রাসা শিক্ষক হামিদুল্লাহ।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত ৮ আর্মাড পুলিশ ব্যাটালিয়ন এপিবিএন এর অধিনায়ক পুলিশ সুপার শিহাব কায়সার জানান, বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) দিবাগত রাত আনুমানিক ৪টার দিকে ‘এফডিএমএন’ ক্যাম্প-১৮ এইচ-৫২ ব্লকে অবস্থিত ‘দারুল উলুম নাদওয়াতুল ওলামা আল-ইসলামিয়াহ’ মাদ্রাসায় রোহিঙ্গা দুষ্কৃতিকারীরা হামলা চালায়। হামলায় মাদ্রাসায় অবস্থানরত ৪ জন এফডিএমএন সদস্য মারা যান। ওই ঘটনা জানতে পেরে ময়নারঘোনা পুলিশ ক্যাম্প-১২ এর পুলিশ সদস্যরা তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে গিয়ে আহতদের উদ্ধারপূর্বক চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বাকিরা মারা যায়। এসময় পুলিশ হামলাকারীদের একজনকে একটি দেশীয় লোডেড ওয়ান শুটারগান, ৬ রাউন্ড গুলি ও একটি ছুরি সহ হাতেনাতে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। এঘটনায় ময়নারঘোনা পুলিশ ক্যাম্প-১২ এর পুলিশ সদস্যরা ‘মদুতুল উম্মা’ মাদ্রাসা ও আশপাশের এলাকায় ব্লকরেইড পরিচালনা করে আসছে এবং অন্যান্য ক্যাম্প এলাকায়ও একই সাথে ব্লক রেইড পরিচালনা করা হচ্ছে।

অপর দিকে গত ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে নিহত রোহিঙ্গা শীর্ষ নেতা মুহিব্বুল্লাহ হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে আরো এক রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীকে আটক করেছে ১৪ এপিবিএন পুলিশ। তবে তার পরিচয় এখনো নিশ্চিত করেনি পুলিশ। মুহিব্বুল্লাহ হত্যায় এর আগে আরো ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
উখিয়া,রোহিঙ্গা ক্যাম্প,সেভেন মার্ডার,৮জন আটক
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close