চলে গেলেন বুলবুল চৌধুরী। দীর্ঘদিন ক্যান্সারে ভুগে শনিবার সন্ধ্যায় পুরান ঢাকার বাসায় মারা গেছেন এই কথাসাহিত্যিক। এই বাসাতেই চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অনকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান ডা. সারওয়ার আলমের তত্ত্বাবধানে ছিলেন ক্যান্সার আক্রান্ত বুলবুল চৌধুরী।

তার মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করে ঘনিষ্ঠ আলোকচিত্রী কামরুল হাসান জানান, ‘বুলবুল চৌধুরী দীর্ঘদিন ধরেই ক্যান্সারসহ নানা রোগে ভুগছিলেন। সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে উনার স্ত্রী ফোনে জানিয়েছেন বুলবুল ভাই কিছুক্ষণ আগে মৃত্যুবরণ করেছেন।’

বুলবুল চৌধুরীর ছেলে রাফি চৌধুরী বলেন, 'ছয় মাস ধরে বাবার জ্বর ছিল, শরীরের ওজন কমে যাচ্ছিল। ফেব্রুয়ারিতে হঠাৎ শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। তখন তার ক্যান্সার ধরা পড়ে।'

রাফি আরও বলেন, 'ক্যান্সার তার শ্বাসযন্ত্রে ছড়িয়ে পড়েছিল। ফলে তিনি কিছু খেতে পারছিলেন না। কেমো নেওয়ার মতো শারীরিক অবস্থাও তার ছিল না। চিকিৎসকের পরামর্শে চিকিৎসা চলছিল বাসায়।'

বুলবুল চৌধুরী ১৯৪৮ সালের ১৬ আগস্ট গাজীপুরে জন্মগ্রহণ করেন।তার প্রথম প্রকাশিত গল্পগ্রন্থ ‘টুকা কাহিনী’ প্রকাশিত হয় ১৯৬৭ সালে। আত্মপ্রকাশের শুরুতেই তিনি সাহিত্য জগতে সাড়া ফেলেন।

লেখালেখির বাইরে পেশাগত জীবনে বুলবুল চৌধুরী সাংবাদিকতার সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। কাজ করেছেন দৈনিক সমকালসহ দেশের প্রথম সারির বিভিন্ন পত্রিকায়।

তার প্রকাশিত ছোট গল্পগ্রন্থগুলো হলো- ‘টুকা কাহিনী’, ‘পরমানুষ’, ‘মাছের রাত’ ও ‘চৈতার বউ গো’।উপন্যাসের মধ্যে রয়েছে- ‘অপরূপ বিল ঝিল নদী’, ‘কহকামিনী’, ‘তিয়াসের লেখন’, ‘অচিনে আঁচড়ি’, ‘মরম বাখানি’, ‘এই ঘরে লক্ষ্মী থাকে’, ‘ইতু বৌদির ঘর’ এবং ‘দখিনা বাও’। তার আত্মজৈবনিক দুটি গ্রন্থের নাম ‘জীবনের আঁকিবুঁকি’ ও ‘অতলের কথকতা’। ‘গাঁওগেরামের গল্পগাথা’, ‘নেজাম ডাকাতের পালা’, ‘ভালো ভূত’ আর ‘প্রাচীন গীতিকার গল্প’ নামক কিশোর গ্রন্থের রচয়িতাও তিনি।

বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে অবদানের জন্য চলতি ২০২১ সালে একুশে পদকে ভূষিত হন তিনি। এর আগে ২০১১ সালে তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার পান।এছাড়া তিনি হুমায়ুন কাদির স্মৃতি পুরস্কার, জসীমউদদীন স্মৃতি পুরস্কার এবং ব্র্যাক ব্যাংক-সমকাল সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন।

পিডিএসও/ সোহেব