বিপাকে গর্ভ ভাড়া দেয়া নারীরা
অর্থের প্রয়োজনে ভাড়া দিয়েছেন গর্ভ। কিন্তু বেআইনি চক্রের পাল্লায় পড়ে প্রায় দিশেহারা অবস্থা ৪৮ সারোগেট মাদারের। কমার্শিয়াল সারোগেসি নিষিদ্ধকরণের বিল ঝুলে রয়েছে সংসদে। এখনো তা আইনে পরিণত হয়নি। কিন্তু নির্দিষ্ট নিয়ম না মেনে সারোগেসি বা গর্ভ ভাড়া দেয়া বেআইনি। তবে সে নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েই রমরমিয়ে চলছে ব্যবসা।
পুলিশের নাকের ডগাতেই বিভিন্ন শহরে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠেছে সারোগেসি সেন্টার। যাদের টার্গেটে থাকেন আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া নারীরা। গর্ভ ভাড়া দিয়েই অর্থ উপার্জনের পথে হাঁটেন অনেকেই। হায়দরাবাদে পুলিশি অভিযানের পর আপাতত কোনো মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই তাদের।
এ কারণে কম নির্যাতনও সহ্য করতে হয় না নারীদের। রীতিমতো বিপজ্জনক ইঞ্জেকশন দিয়ে তাদের সন্তান ধারনের উপযোগী করে তোলা হয়। যাতে জীবনের ঝুঁকি পর্যন্ত থাকতে পারে। তবু পেট দায় বলে কথা। আর তাই পেটে অন্যের সন্তান ধারণ করেই রুটি রুজি নির্ধারণ করেন ভারতের বহু নারী। তাদের কর্মস্থল হয়ে ওঠে এই বেআইনি সারোগেসি সেন্টারগুলোই। হায়দরাবাদে এ রকমই এক সেন্টারে পুলিশি অভিযানে বিপাকে পড়লেন তারা।
বানজারা হিলসের কিরণ ফার্টিলিটি সেন্টারে অভিযান চালায় হায়দরাবাদ পুলিশ। দেখা যায়, মাতৃত্ব বিক্রি হচ্ছে মাত্র দশ হাজার টাকার বিনিময়ে। প্রায় ৪৮ নারীকে নয় মাসের জন্য আবাসিক করে রাখা হয়েছে ওই সেন্টারে। সারোগেসির কোনো নিয়মই মানা হচ্ছে না সেক্ষেত্রে। প্রশাসন ও পুলিশকে প্রায় কাচকলা দেখিয়েই ব্যবসা করে চলেছিল সেন্টারটি। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে ভেঙ্গে ফেলে সেন্টারটি। কিন্তু বিপাকে পড়েন প্রায় ৪৮ নারী।
প্রত্যেকেরই গর্ভে রয়েছে অন্যের সন্তান। যাদের সন্তান তারা গর্ভে বহন করছেন, তাদের অনেকেই প্রবাসী ভারতীয় বা এনআরআই বা বিদেশি। এখন পুলিশ পর্যন্ত ঘটনার জল গড়ানোর পর তারা এই সন্তান নিতে চাইবেন কিনা তাও নিশ্চিত নন ওই নারীরা। কেননা তাহলে বেআইনি চক্রে মদত দেয়ার দায় বইতে হবে ওই ব্যক্তিদের। ফলে পুলিশ তাদের উদ্ধার করলেও আপাতত ঘোর বিপাকে ওই নারীরা। হায়দরাবাদ পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই মহিলাদের কোথায় রাখা হবে বা তাদের গর্ভের সন্তান সম্পর্কে কী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে, তা একমাত্র জেলাশাসকই ঠিক করতে পারবেন।
পিডিএসও/রিহাব