কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

  ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২০

ফেলানী হত্যা

ভারতে রিটের শুনানি শুরু

বহুল আলোচিত ফেলানী হত্যা মামলার পুনর্বিচার এবং ক্ষতিপূরণ চেয়ে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে করা রিটের শুনানি শুরু হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সকালে বিচারপতি ড. ডি ওয়াই চন্দ্রচাঁদ ও বিচারপতি কে এম জোসেফের যৌথ বেঞ্চে এই শুনানি শুরু হয়। এদিন অধিকতর শুনানির জন্য পরবর্তী তারিখ আগামী ১৮ মার্চ ধার্য করে আদেশ দেন যৌথ বেঞ্চ।

শুনানিতে রিটের পক্ষে অংশ নেন অ্যাডভোকেট বিজন ঘোষ ও অ্যাডভোকেট অপর্ণা ভাট। ভারত রাষ্ট্র ও অন্যদের পক্ষে অংশ নেন অ্যাডভোকেট ডি মোহনা। অ্যাডভোকেট বিজন ঘোষের বরাত দিয়ে গতকাল এ তথ্য জানিয়েছেন কুড়িগ্রামের পাবলিক প্রসিকিউটর এসএম আব্রাহাম লিংকন।

২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি ভোরে ফুলবাড়ীর অনন্তপুর সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া পার হয়ে ভারত থেকে দেশে ফেরার সময় বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষ ফেলানীকে (১৪) গুলি করে হত্যা করে। এরপর দুদিনব্যাপী দফায় দফায় পতাকা বৈঠক শেষে ফেলানীর লাশ বিজিবির কাছে ফেরত দিয়েছিল বিএসএফ।

ওই সময় ১৮১ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের অধীনস্থ চৌধুরীহাট বিওপির কোম্পানি কমান্ডারের এফআইআরের ভিত্তিতে ভারতের দিনহাটা থানায় একটি জিডিই করা হয়। পরে এর ভিত্তিতে ওইদিন একটি ইউডি মামলা রেকর্ড করা হয়।

এদিকে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ সরকার ও মানবাধিকার সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকে কড়া প্রতিবাদসহ ফেলানী হত্যার বিচারের জন্য ভারত সরকারকে চাপ দেওয়া হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৩ সালের ১৩ আগস্ট ভারতের কুচবিহার জেলা সদরের সোনারী এলাকায় অবস্থিত ১৮১ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের সদর দফতরে স্থাপিত জেনারেল সিকিউরিটি ফোর্স আদালতে ফেলানী হত্যার বিচার শুরু হয়। আদালত ওই বছরের ৬ সেপ্টেম্বর অভিযুক্ত বিএসএফ সদস্যকে নির্দোষ ঘোষণা করে রায় দেন।

ফেলানীর বাবা-মা এই রায় প্রত্যাখ্যান করলে ১৩ সেপ্টেম্বর মামলাটি পুনর্বিচারের সিদ্ধান্ত নেয় বিএসএফ কর্তৃপক্ষ। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৪ সালের ২২ সেপ্টেম্বর পুনর্বিচার কার্যক্রম শুরু করা হয়। ২০১৫ সালের ২ জুলাই অমিয় ঘোষকে আবার নির্দোষ ঘোষণা করে রায় দেওয়া হয়।

এ অবস্থায় ওই রায়কে প্রত্যাখ্যান করেন ফেলানীর বাবা নূর ইসলাম ও কলকাতার মানবাধিকার সংগঠন ‘বাংলার মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চ’-এর সাধারণ সম্পাদক কিরিটি রায়। তারা যৌথভাবে বাদী হয়ে ২০১৫ সালের ৪ আগস্ট ভারতের সুপ্রিম কোর্টে একটি রিট আবেদন দাখিল করেন। ওই রিটের হলফনামায় ফেলানীর বাবার পাশাপাশি কুড়িগ্রামের পাবলিক প্রসিকিউটর আব্রাহাম লিংকন সই করেছিলেন। এরপর ২০১৫ সালের ১৪ আগস্ট ভারতের সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে গঠিত ফুল বেঞ্চ শুনানি শেষে রিট আবেদনটি গ্রহণ করেন এবং বিবাদীদের জবাব প্রদানের নোটিস জারির আদেশ দেন। ওই আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে মামলার বিবাদীরা তাদের জবাব দাখিল করেন। কিন্তু এরপর থেকে একের পর এক তারিখ বদল হলেও শুনানি হয়নি।

এর আগে ২০১৩ সালের ২৭ আগস্ট ফেলানীর বাবা নুর ইসলাম ও বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির নির্বাহী পরিচালক অ্যাডভোকেট সালমা আলী বাদী হয়ে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে অপর একটি রিট আবেদন দাখিল করেন। এ প্রসঙ্গে কুড়িগ্রামের পাবলিক প্রসিকিউটর এস এম আব্রাহাম লিংকন জানান, উভয় রিটের শুনানি একসঙ্গে করা হচ্ছে। এর ফলে দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে থাকা ফেলানী হত্যা ইস্যুর যৌক্তিক নিষ্পত্তি হবে বলে আশা করছি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close