নিজস্ব প্রতিবেদক

  ০৩ নভেম্বর, ২০১৯

রাজধানীতে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে শিক্ষার্থীর মৃত্যু

ক্ষুব্ধ সহপাঠীদের ৪ দাবি তদন্ত কমিটি গঠন

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে রেসিডেনসিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজে দৈনিক প্রথম আলোর মাসিক ম্যাগাজিন ‘কিশোর আলো’র বর্ষপূর্তির অনুষ্ঠান চলাকালে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাঈমুল আবরার রাহাতের (১৫) মৃত্যুর ঘটনায় আন্দোলনে নেমেছে সহপাঠীরা। গতকাল শনিবার কলেজ ক্যাম্পাসের সামনে দাঁড়িয়ে ৪ দফা দাবি জানিয়ে ৭২ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। ফেসবুকে একটি ইভেন্ট খুলেও একইভাবে দাবি জানানো হয়েছে। এছাড়া আবরারের মৃত্যু নিয়ে বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনা ও নানা অসঙ্গতি নিয়ে প্রশ্নও তুলেছে রেসিডেনসিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

এদিকে নাঈমুল আবরার রাহাতের মৃত্যু ঘটনায় সহপাঠীদের আন্দোলনের পর অবশেষে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে ঢাকার রেসিডেনসিয়াল মডেল স্কুল ও কলেজ কর্তৃপক্ষ। গতকাল কলেজ কর্তৃপক্ষের গঠন করা ৩ সদস্যের ওই কমিটিকে আগামী সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। কলেজের অধ্যক্ষ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কাজী শামীম আহমেদ সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, নাইমুল আবরার রাহাতের মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে ৩ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী সাত দিনের মধ্যে কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

এর আগে গত শুক্রবার বিকেলে ‘কিশোর আলো’র অনুষ্ঠান চলাকালে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যায় রেসিডেনসিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্র নাঈমুল আবরার রাহাত। তবে মৃত্যুর অনেকক্ষণ পরও ঘটনা চেপে রেখে অনুষ্ঠান চালিয়ে যাওয়ায় আয়োজক ও কলেজ কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। গতকাল কলেজ ক্যাম্পাসে চার দফা দাবি জানিয়ে ৭২ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেন শিক্ষার্থীরা। দাবিগুলো হলোÑ ১. ঘটনা চলার সময়ের সিসিটিভি ফুটেজ দেখাতে হবে। ২. অনুষ্ঠানের মিস ম্যানেজমেন্টের দায় স্বীকার করে কিশোর আলো, ইভেন্ট অর্গানাইজার, আয়শা মেমোরিয়াল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের লিখিত বক্তব্য দিতে হবে। ৩. ৭২ ঘণ্টার মধ্যে তদন্ত কমিটির রিপোর্ট ছাত্রদের হাতে পৌঁছাতে হবে। ৪. শুধু দুর্ঘটনা নয়, তাদের গাফিলতি, মিস ম্যানেজমেন্ট ও উদাসীনতা উল্লেখ করে পত্রিকায় বিবৃতি দিতে হবে। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে দাবিগুলো আদায় না হলে পরে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন বলেও জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

অন্যদিকে নাঈমুল আবরার রাহাতের মৃত্যু নিয়ে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি ফেসবুকে নানা প্রশ্ন তুলেছেন সচেতন নেটিজেনরা। প্রশ্ন উঠেছে, ‘প্রথম আলোর কিশোরদের কাগজ কিশোর আলোর ‘কি আনন্দ’ অনুষ্ঠানটি ছিল ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের মাঠে। সেখানে বিদ্যুতায়িত হয়েছিল নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাইমুল আবরার। তাকে মেডিকেল ক্যাম্পে দুজন ডাক্তার দেখার পরে ৫ মিনিট দূরত্বের পাশের সরকারি সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে না নিয়ে মহাখালীতে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল, সেখানে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করে।’ আবরার মারা গেছে এই তথ্য জানার পরও কোন মানবিকতার অনুষ্ঠানটি তারা চালিয়ে গেলেন? তাহসানের গানের শেষে আবরার আহত হলো, মাইকে মাঠের বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনার ত্রুটির কথা না জানিয়ে অর্ণবকে স্টেজে তোলা হলো। মাঠের হাজার শিশু কিশোরদের তারা কেন তখন সতর্ক করলেন না? উল্টো বিনা ঘোষণায় শেষ করলেন অনুষ্ঠান। এটি কি অন্যায় নয়? অনিরাপদ বিদ্যুতের তার রেখে হাজারো শিশুদের কেন মাঠে ঢোকালেন কিশোর আলো কর্তৃপক্ষ? তারা কি এই দায় এড়াতে পারে?’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close