নিজস্ব প্রতিবেদক

  ০৬ জুলাই, ২০১৯

চক্রাকার বাস সার্ভিস

যেসব সড়কে রিকশা চলবে চলবে না

রাজধানী ঢাকায় চক্রাকার বাস সার্ভিস রুটসহ তিনটি রুটে রিকশা চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আগামীকাল রোববার থেকে এ ঘোষণা কার্যকর হবে। ঢাকা মহানগরীর অবৈধ যানবাহন বন্ধ, ফুটপাত দখলমুক্ত ও অবৈধ পার্কিং বন্ধে গঠিত কমিটির সভাপতি ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন এ ঘোষণা দেন।

যেসব রুটে রিকশা চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে সেগুলো হলো কুড়িল, রামপুরা, সায়েদাবাদ, গাবতলী, আসাদগেট, আজিমপুর, সায়েন্সল্যাব ও শাহবাগ। গত বুধবার দক্ষিণ নগর ভবনের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত এক সমন্বয় সভা শেষে এই রুটগুলোতে রিকশা চলাচল বন্ধের পাশাপাশি সড়ক ও ফুটপাত দখলমুক্ত করার এ ঘোষণা দেওয়া হয়।

তবে পর্যালোচনায় দেখা গেছে, যে তিনটি সড়কে রিকশা চলাচল বন্ধের কথা বলা হয়েছে, সেসব সড়কে মানবচালিত এই বাহনটির চলাচল বেশ কয়েক বছর আগেই নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। এসব সড়কে মেট্রোপলিটন পুলিশেরও (ট্রাফিক) রিকশা চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া আছে। বর্তমানে কেবল কুড়িল থেকে সায়েদাবাদ পর্যন্ত সড়কটির কিছু অংশে অবাধে রিকশা চলাচল করে। এছাড়া, গাবতলী, আজিমপুর, সায়েন্সল্যাব এবং শাহবাগ রুটে রিকশা চলাচল করে মূলত ট্রাফিক পুলিশের শৈথিল্যের সুযোগ নিয়ে। মূলত আগের আদেশ পুরোপুরি কার্যকর না হওয়ায় এবার সেই বিষয়টিতেই নতুন করে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়। তবে ধানমন্ডি ও নিউমার্কেট এলাকার এই চক্রাকার বাস সার্ভিসের পুরোটাই রিকশামুক্ত থাকবে না। বেশ কয়েকটি সড়কে চক্রাকার বাস সার্ভিসের পাশাপাশি রিকশাও চলবে। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

এই এলাকায় চক্রাকার বাস সার্ভিসের জন্য দুটি রুট ঘোষণা করা হয়েছে। প্রথম রুটের শুরু আজিমপুর থেকে। রুট পরিকল্পনা অনুযায়ী এই বাসটি প্রতিদিন নিউমার্কেট, সায়েন্সল্যাব, ধানমন্ডি ২নং রোড হয়ে সিটি কলেজের সামনে দিয়ে আগে সাত মসজিদ সড়কে যাবে। সেখান থেকে ধানমন্ডি ২৭নং সড়ক দিয়ে ঘুরে সোবহানবাগ, রাসেল স্কয়ার, কলাবাগান, ধানমন্ডি ৬নং সড়ক মোড়, ধানমন্ডি ৩নং সড়ক মোড় হয়ে আবারও সায়েন্সল্যাব দিয়ে নিউমার্কেট হয়ে আজিমপুর পৌঁছাবে। এর পরের বার বাসটি আজিমপুর থেকে যাত্রা শুরু করে পলাশী দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পশ্চিম প্রান্ত ঘেঁষে নীলক্ষেত থেকে কাঁটাবন হয়ে বাঁয়ে মোড় নেবে। এরপর বাটা ক্রসিং থেকে সায়েন্সল্যাব হয়ে আবারও ধানমন্ডি ২নং সড়ক দিয়ে জিগাতলা হয়ে সাত মসজিদ সড়কের দিকে যাবে। দিনভর এভাবেই এই রুটে গাড়ি চলবে।

মূলত গাড়ি ঘোরানোর কারণে যানজট সৃষ্টি হওয়া এড়াতে বাসটির এমন রুট পরিকল্পনা করা হয়েছে।

তবে চক্রাকার বাস সার্ভিস চালু হলেও এখনো তা পুরো রুটে চলছে না। ডিএসসিসি মেয়র সাঈদ খোকনও স্বীকার করেছেন এ কথা। বাসগুলো এখনো জনপ্রিয় হয়ে ওঠেনি। এর কারণ হিসেবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন বলছে প্রধান সড়কে রিকশা চলাচলের কারণে এই বাসগুলোসহ অন্য পরিবহনের যাতায়াতে অসুবিধার সৃষ্টি হয়ে থাকে।

সিটি করপোরেশনের নির্দেশনা অনুযায়ী, এই রুটগুলোর মধ্যে ধানমন্ডি ২নং সড়ক থেকে সাত মসজিদ সড়ক পর্যন্ত এবং ধানমন্ডি ২৭নং সড়কে রিকশা চলাচল করবে। পলাশী, নীলক্ষেত ও কাঁটাবন রুটেও রিকশা চলাচল করবে।

এছাড়া, কুড়িল, রামপুরা ও সায়েদাবাদ সড়কে বর্তমানে যানবাহনের সঙ্গে রিকশাও চলাচল করছে। এই সড়কেও রিকশা চলাচল আগে থেকেই নিষিদ্ধ ছিল। এবার এই প্রধান সড়কটিও রিকশামুক্ত করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। তবে চক্রাকার বাস ধানমন্ডিবাসীর সুবিধার লক্ষ্যে চালুর কথা বলা হলেও এ এলাকার অন্যতম প্রধান সড়ক ধানমন্ডি ২নং থেকে সাত মসজিদ সড়ক এবং ধানমন্ডি ২৭নং সড়কটি রিকশামুক্ত রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়নি। একইভাবে পলাশী থেকে কাঁটাবন পর্যন্ত সড়কটিতেও রিকশা চলবে। এসব রিকশা হাতিরপুল হয়ে সেন্ট্রাল রোড, বসুন্ধরা শপিং মল, পান্থপথ ইত্যাদি রুটে আগের মতোই নির্বিঘেœ চলাচল করতে পারবে। ফলে চক্রাকার বাস সার্ভিসের এসব অংশে রিকশায় যানজট লেগেই থাকবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা।

জানতে চাইলে ডিএসসিসির মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন বলেন, ‘চক্রাকার বাসের পুরোটা আপাতত কাভার করা যাচ্ছে না। প্রথম অবস্থায় আমরা গাবতলী থেকে আজিমপুর (মিরপুর রোড) ও সায়েন্সল্যাব থেকে শাহবাগ সড়ক এবং কুড়িল থেকে রামপুরা-খিলগাঁও হয়ে সায়েদাবাদ সড়ক রিকশামুক্ত করব। এর মাধ্যমে এই রাস্তাগুলো কিছুটা ফাঁকা হলে পর্যায়ক্রমে চক্রাকার বাসের সংখ্যা বাড়াব। এতে রাজধানীবাসী নিরাপদ ও আরামদায়ক গণপরিবহন পাবেন। পাশাপাশি যানজটও কমবে।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close