আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ৩১ মার্চ, ২০১৯

ব্রেক্সিট : আর কী বিকল্প হাতে আছে ব্রিটেনের

তৃতীয়বারের মতো ব্রেক্সিট বা ব্রিটেনের ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ছাড়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী তেরিজা মে’র চুক্তি প্রত্যাখ্যান করার পর দেশটির পার্লামেন্টে কার্যত এক অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। বিভিন্ন প্রস্তাবের ওপর কয়েক দফা ভোটের মাধ্যমেই কি ব্রিটেনের ইইউ ছাড়ার এই সংকটের সমাধান হবে?

যদিও এরই মধ্যে ইঙ্গিতসূচক ভোটের এক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে একটি ঐকমত্যে পৌঁছার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু সেটাও ব্যর্থ হয়েছে। তাহলে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ছাড়ার পথ কি বন্ধ হয়ে গেল? না। আগামী সোমবার আরেক দফা ইঙ্গিতসূচক ভোট অনুষ্ঠিত হবে। এর প্রক্রিয়াও আগেরবারের মতোই হবে। এমপিরা স্পিকারের কাছে নিজেদের প্রস্তাব জমা দিতে পারবেন। এরপর স্পিকার সিদ্ধান্ত নেবেন কোন প্রস্তাবের ওপর ভোট হবে আর কোনটিতে নয়। তবে হ্যাঁ, জুতসই মনে হলে স্পিকার আরো বেশি প্রস্তাব পার্লামেন্টে তুলতে পারবেন। ভোট প্রক্রিয়া হবেÑ প্রতিটি প্রস্তাবের ওপর এমপিরা হ্যাঁ অথবা না ভোট দিতে পারবেন। সমর্থনসূচক গণভোটের মাধ্যমে দেশটির জনগণকে যেকোনো প্রস্তাবে রাজি হতে হতো। কিন্তু সে ক্ষেত্রে ব্যালটের ওপর কী প্রশ্ন লেখা থাকবে, সেটা এমপিরা নির্ধারণ করবেন।

চুক্তি ও কাস্টমস ইউনিয়ন নিয়ে ভোটের প্রস্তাব করেন কনজারভেটিভ পার্টির কেন ক্লার্ক। এর ফলাফল : পক্ষে ২৬৪, বিপক্ষে ২৭২। এ প্রস্তাব পাস হলে, ব্রেক্সিট চুক্তির জন্য মেকে সমর্থন দিতে হতো এমপিদের, কিন্তু সে ক্ষেত্রে শর্ত ছিল যুক্তরাজ্য ইইউর সঙ্গে একটা কাস্টমস ইউনিয়নে থাকবে।

কাস্টমস ইউনিয়ন হচ্ছে, এক ধরনের বাণিজ্য চুক্তি যাতে দুই বা তার বেশি দেশকে যুক্তরাজ্যে নিজেদের পণ্য পাঠানোর ক্ষেত্রে কোনো কর বা শুল্ক দিতে হবে না।

লেবার দলের বিকল্প পরিকল্পনা নিয়ে ভোটের প্রস্তাব করেন জেরেমি করবিন। এর ফলাফল : পক্ষে ২৩৭, বিপক্ষে ৩০৭। কাস্টমস ইউনিয়নে থাকার পক্ষে ছিল লেবার দলের অবস্থান, সঙ্গে তারা চাচ্ছিল ইইউর একক বাজারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ একটি সংযোগ যাতে থাকে। কিন্তু ইইউর আইন তা সমর্থন করে না, অর্থাৎ অ-ইইউ কোনো রাষ্ট্র ইইউর কোনো নীতি বিষয়ে কথা বলা বা ভেটো দেওয়ার অধিকার রাখে না।

এ ছাড়া সর্বজনীন বাজার নিয়ে ভোটের প্রস্তাব করেন কনজারভেটিভ পার্টির নিক বোলস। এর ফলাফল : পক্ষে ১৮৮, বিপক্ষে ২৮৩। এ প্রস্তাবে যুক্তরাজ্য নরওয়ে, আইসল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড এবং লিচেনস্টেইনের সঙ্গে মিলে ইউরোপীয় মুক্তবাণিজ্য সংস্থার অংশ হবে। এর ফলে ইউরোপের সর্বজনীন বাজারের অংশ থাকতে ব্রিটেনের সমস্যা হতো না।

ব্রেক্সিট নিয়ে এখন যুক্তরাজ্যের যে অবস্থা, তাতে পথ খুঁজে পেতে এমনই আরো বেশ কয়েকটি প্রস্তাব ছিল। কিন্তু গত শুক্রবার রাতে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্সে তেরিজা মে’র আনা চুক্তিটির পক্ষে ২৮৬ এবং বিপক্ষে ৩৪৪ ভোট পড়ে।

ব্রেক্সিটের জন্য এটিই ছিল একমাত্র চুক্তি যাতে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের নেতাদের সঙ্গে ব্রিটেনের মতৈক্য হয়েছিল। কিন্তু এ চুক্তিটি পার্লামেন্টে এতটাই সমালোচিত হয়, পরপর তিনবার ভোটে দিয়েও এটি পাস করাতে পারেনি প্রধানমন্ত্রী তেরিজা মে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close