যশোর প্রতিনিধি

  ১৭ জানুয়ারি, ২০১৯

যশোরে আগ্নেয়াস্ত্রের কারখানার সন্ধান

ক্রেতা পুলিশ!

যশোরে ভ্রাম্যমাণ আদালত মাদকবিরোধী অভিযানে গিয়ে আগ্নেয়াস্ত্রের কারখানা আবিস্কার করেছে। এ কারখানার একমাত্র ক্রেতা পুলিশ বলে জানিয়েছে আটক গৃহকর্তা। এ কারখানায় গুলিও তৈরি হয়। যশোরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জামশেদুল আলম ও হাফিজুল হক জানান, গতকাল বুধবার দুপুর দেড়টার সদর উপজেলার ভাতুড়িয়া গ্রামের দাড়িপাড়ায় মাদকবিরোধী অভিযানে গিয়ে কামরুল ইসলামের বাড়িতে দেখতে পান তৈরি অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র তৈরির সরঞ্জাম। এসময় কামরুল ইসলামসহ তার স্ত্রী রাবেয়া বেগম ও আবুল বাসার নামে তিনজনকে আটক করা হয়।

সেখান থেকে একটি আংশিক তৈরি পিস্তল, একটি খেলনা পিস্তল, দুইটি ম্যাগজিন, এক রাউন্ড গুলি, পাঁচটি কাটা গুলি, অস্ত্র তৈরির ডায়াস, ইস্পাত খন্ড এবং শ্যুটার গানের একটি নল বা ব্যারেল উদ্ধার করা হয়। আটক কামরুল ইসলাম ও তার স্ত্রী রাবেয়া বেগম ভ্রাম্যমাণ আদালতে জানান, এ আগ্নেয়াস্ত্রগুলো সে তৈরি করে পুলিশের জন্য। ৪/৫ মাস আগে তৈরি করা অস্ত্র ও গুলি তার কাছ থেকে নেন যশোর কোতয়ালি থানার এসআই হাসানুর রহমান ও চাঁচড়া ফাঁড়ির ইনচার্জ বর্তমানে নারায়নগঞ্জ থানার এসআই জামাল হোসেন। আরও অস্ত্র সে তৈরি করছিল যশোরের কোতয়ালি থানা, শার্শা থানা ও নারায়নগঞ্জ থানার পুলিশ কর্মকর্তাদের জন্য।

কামরুল আরও জানান, তার তৈরি অস্ত্রগুলো কোন ক্ষতি করে না, পুলিশ মামলার আলামত হিসেবে তাকে দিয়ে তৈরি করায়। প্রতিটি অস্ত্র সে গুলিসহ ৫ হাজার টাকায় বিক্রি করে থাকে। ভ্রাম্যমাণ আদালত জানায়, আটকদের যশোর কোতয়ালি থানায় সোপর্দ করা হবে। এবং তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা রুজু হবে। তবে ওই স্থান থেকে কোন মাদকদ্রব্য উদ্ধার হয়নি। এ অভিযানকালে ভ্রাম্যমাণ আদালতের সাথে ছিলেন যশোর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের এসআই বদরুল হাসান। এদিকে আবিস্কৃত অস্ত্রের কারখানায় পুলিশের সম্পৃক্ততার অভিযোগের বিষয়ে যশোরের চাঁচড়া ফাঁড়ির সাবেক কর্মকর্তা ও বর্তমানে নারায়নগঞ্জ পুলিশ লাইনের রিজার্ভ অফিসার (আরও) এসআই জামাল হোসেন বলেন, কামরুলকে তিনি একজন মাদকসেবী ও র‌্যাবের সোর্স হিসেবে চিনতেন।

তিনি যশোরে দায়িত ¡পালনকালে কখনও তাকে তার দফতরে প্রবেশ করতে দেননি। নিজেকে রক্ষা করতে সে পুলিশের নাম বলছে। একই কথা বলেছেন যশোর কোতয়ালি থানার এসআই হাসানুর রহমান।

যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনছার উদ্দিন বলেন, অবৈধ অস্ত্রের কারখানা উদ্ধার হয়েছে এটাই বড় কথা। অসাধু লোকেরা নিজেকে রক্ষা করতে মিথ্যাচারের আশ্রয় নেয়। এক্ষেত্রে এমনটা করা হচ্ছে বলে আমার ধারণা। পুলিশেরতো অস্ত্রের অভাব নেই। তারা কেন অস্ত্র তৈরি করাবে? এছাড়া যশোরের পুলিশ কখনও অস্ত্র দিয়ে কাউকে ধরানো মতো কাজ করে না।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close