নিজস্ব প্রতিবেদক
তেজগাঁও প্রধান সড়ক
কার্পেটিং উঠিয়েও কাজ বন্ধ করল ডিএনসিসি
থমকে গেছে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের প্রধান সড়কের সংস্কারকাজ। মহাখালী-নাবিস্কো-সাতরাস্তা সড়কটির কিছু অংশ ‘কোল্ড মেশিন’ দিয়ে কার্পেটিং ওঠালেও এখন বন্ধ রয়েছে। ফলে সড়কের যাত্রীদের দুর্ভোগ আরো বেড়েছে। তবে সিটি করপোরেশন বলছে, কারিগরি বিষয়গুলো যাচাই-বাছাই করতে সাময়িকভাবে কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। শিগগিরই আবার শুরু হবে।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা যায়, মহাখালী থেকে তেজগাঁওয়ের সাতরাস্তা সড়কটি সংস্কার করতে ২৪ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। সংস্কারের কাজ শুরু হলেও সড়কের কিছু অংশ কার্পেটিং তুলে রাখা হয়েছে। ফলে সড়কের মধ্যে উঁচু-নিচু সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া সড়কের মধ্যে অসংখ্য খানাখন্দ তো রয়েছেই। দুর্ভোগ লাগবের কথা থাকলেও উল্টো আরো বেড়েছে।
যাত্রী রকিবা খান বলেন, খোয়ার ওপর দিয়ে রিকশায় চলা যায় না। তাই মূল সড়ক থেকে হেঁটে বাড়ি ফিরতে হয়। আর বাস ও লেগুনা দিয়ে যাওয়ার সময় শরীরের অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে যায়। তিব্বত এলাকার হারুন সরদার বলেন, ছয় মাস ধরে সোয়া কিলোমিটার পথ ঘুরে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে। কত দিন এভাবে পারা যায়? এর একটা সমাধান দরকার।
গত ৬ অক্টোবর এই সড়কে প্রথমবারের মতো কোল্ড মিলিং মেশিনের সাহায্যে রাস্তার কিছু উঁচু-নিচু জায়গা সমতল করা হয়। এমন বাস্তবতায় ভোগান্তি থেকে মুক্তির আশা করছিলেন নগরবাসী। কিন্তু সেই আশার আলো আবার থমকে গেল।
মহাখালী থেকে তিব্বত পর্যন্ত সড়ক ও ফুটপাত উন্নয়ন প্রকল্পের খোঁড়াখুঁড়ির কারণে বেহাল হয়ে আছে। এবার বৃষ্টি বেশি থাকায় জনসাধারণের দুর্ভোগের অন্ত ছিল না। অনেক জায়গায় গাড়ি উল্টে যাওয়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে। সাম্প্রতিক বৃষ্টির পর তৈরি হয়েছে বিশাল বিশাল গর্ত। আর সম্প্রতি দুই পাশের ফুটপাত মেরামতকাজ শুরুর পর সেখান থেকে তোলা টালি আর ইটের টুকরো এসব গর্তে ফেলে পরিস্থিতি মোকাবিলার চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু এতে ভোগান্তি কমেনি এতটুকু, বরং বেড়েছে ক্ষেত্রবিশেষে। মূল সড়ক সংস্কারের আগে ফুটপাত মেরামতকাজ শুরুর পর হেঁটে চলা মানুষের ভোগান্তি আরো বেড়েছে। কারণ ফুটপাতের বদলে এখন ভাঙা সড়ক দিয়েই হাঁটতে হচ্ছে পথচারীদের।
ফুটপাতে খুঁড়ে রাখা মাটির স্তূপ করে রাখায় তেজগাঁও এলাকাসংলগ্ন মূল সড়কের পাশ ধরে যাচ্ছিলেন কয়েকজন পথচারী। মূল সড়কের সব লেন খালি থাকা সত্ত্বেও এ সময় পেছন থেকে একটি প্রাইভেট কার তাদের প্রায় গা ঘেঁষে চলে যায়। পরে সেই প্রাইভেট কারের চালক নাহিদ আহমেদ বলেন, ‘হঠাৎই সড়কের মইদ্দে একটা গর্ত দেখলাম। ঐটা থেইকা বাঁচতে গাড়ি বামে চাপায় দিসি।’
এই সড়কটি যথেষ্ট চওড়া হলেও দিনভর এই সড়কে যানজট লেগে থাকে। এর প্রধান কারণ হাজারো গর্তের কারণে স্বাভাবিক গতিতে গাড়ি চলতে না পারা। সাতরাস্তা-মহাখালীর সড়কের ভাঙন ধরেছে বহু বছর ধরে। বিশেষ করে তিব্বত, নাবিস্কো ও মহাখালী বাসস্ট্যান্ডের আশপাশের পরিস্থিতি বেশি খারাপ। এ রকম ঝুঁকিপূর্ণ সড়কে দুই অথবা তিন চাকার গাড়িচালকদের বিপদটাই যেন একটু বেশি।
এ বিষয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ২৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সফি উল্লাহ সফি বলেন, নতুন মেশিন দিয়ে কাজ করার পর সড়কের কোথাও দেবে যায় কি না কিংবা অন্য কোনো সমস্যা তৈরি হয় কি না, তা পর্যবেক্ষণ করে আবারও কাজ শুরু হবে। তিনি আরো বলেন, সড়কটি সংস্কারের জন্য ২৪ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। আর সড়ক সংস্কারের কাজ আগামী বছরের ৩১ জানুয়ারির মধ্যে শেষ হবে।
"