জবি প্রতিনিধি

  ০৬ জুন, ২০২০

মেসভাড়া নিয়ে জবি প্রশাসনের পদক্ষেপ চান শিক্ষার্থীরা

বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়লেও অনেক দেশেই ধীরে ধীরে শিথিল হচ্ছে লকডাউন। অন্যদিকে প্রতিদিন লাফিয়ে বাড়তে থাকার পরও একই পথে হাঁটছে বাংলাদেশ। কিন্তু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ব্যাপারে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা শিক্ষার্থীরা ফিরতে পারছেন না নিজ ক্যাম্পাসে।

অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আবাসিক ব্যবস্থা থাকলেও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) চিত্র ভিন্ন। সম্পূর্ণ এক অনাবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়। এ ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীদের মেসে বা সাবলেট থেকেই পড়াশোনা চালাতে হয়। শিক্ষার্থীদের অনেকেই টিউশনি বা পার্টটাইম চাকরি করে নিজেদের খরচ চালান। আয়ের এ পথও বন্ধ রয়েছে তাদের। ফলে ভাড়া দিতে ব্যর্থ হওয়ায় বাসা ছাড়ার হুমকিও পাচ্ছেন তারা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপের অভাবে উভয় সংকটে শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা সমস্যায় পড়লে নিকটস্থ থানায় যোগাযোগ করা অথবা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানানোর কথা বলা হচ্ছে। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের খাদ্য সংকট ও চিকিৎসা নিয়ে কাজ করছেন জানিয়ে বলেন, এত শিক্ষার্থীদের সমস্যা এককভাবে নয় রাষ্ট্রীয়ভাবে সমাধান করার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেওয়া হবে। তবে এ চিঠি ক্যাম্পাস খুললে দেওয়া হবে বলে জানান তারা।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা জানান, মার্চ মাসের শেষদিকে ক্যাম্পাস বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এপ্রিল,মে ও জুন তিন মাসের ভাড়া বকেয়া পড়েছে। প্রতিনিয়ত বাড়িওয়ালাদের হুমকি-চাপ আসছে। ভাড়া দিতে হবে অথবা বাসা ছাড়তে বলায় চরম বিপাকে পড়তে হচ্ছে তাদের। এ মুহূর্তে গ্রাম থেকে ঢাকায় এসে অন্যত্র যাওয়া এবং ভাড়া দেওয়া অসম্ভব। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ায় হতাশায় ভুগছেন তারা। দ্রুত যেন কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয় এমন দাবি শিক্ষার্থীদের।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী আবদুল কাদের প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, আমরা পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়া এলাকায় আটজন মিলে একটি মেসে থাকি। আমাদের তিন মাসের ভাড়া বকেয়া হয়ে গেছে। ভাড়া না দিতে পারলে মালামাল বাহিরে ফেলে দেওয়া হবে বলে হুমকি দিচ্ছেন বাড়িওয়ালা। আহমেদ কাওসার নামের এক শিক্ষার্থী প্রতিদিনের সংবাদকে জানান, আমরা ছয়জন মিলে কলতাবাজারে একটি মেসে থাকি। আমাদের ভেতর চারজনের পারিবারিক অবস্থা খুবই খারাপ। তারা ঢাকায় থাকলে হয়ত টাকা ম্যানেজ করে দিত। কিন্তু এ পরিস্থিতিতে যেখানে তাদের খাদ্যের সংকটই কাটছে না সেখানে কিভাবে এ মুহূর্তে টাকা দেবেন তারা। স্বর্ণা নামের আরেক শিক্ষার্থী পাটুয়াটলিতে পাঁচজন মিলে থাকেন তিনি জানান, ‘প্রতিনিয়ত আমাদের বাসাভাড়ার জন্য বাড়িওয়ালা চাপ দিচ্ছেন। তাছাড়া এ মুহূর্তে বাসা ছাড়তে বললেও কীভাবে তা সম্ভব হবে। সবাই তো আমরা গ্রামে রয়েছি। তাছাড়া আমাদের আর্থিক সংকটও তো রয়েছেই। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি এ ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ না নেয় তাহলে আমাদের হতাশা আরো বেড়ে যাবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর মোস্তফা কামাল প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, পরিস্থিতি ঠিক হওয়ার পর একটি মানবিক চিঠি দেব এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কেও চিঠি দেওয়া হবে। পুরান ঢাকার কয়েকজন বাড়িওয়ালার সঙ্গে এ প্রতিবেদকের কথা হয়। তারা জানান, আমাদের এ ভাড়া দিয়েই সংসার চলে ভাড়া না পেলে কীভাবে আমরা চলব বলেন।

জবির উপাচার্য বলেন, আমরা এখন শিক্ষার্থীদের খাদ্যসংকট ও চিকিৎসা সমাধানে কাজ করছি। আগে এ সমস্যা সমাধান করতে হবে। মেস বা বাসা ভাড়া একটি জাতীয় সমস্যা। তাই ক্যাম্পাস খুললেই বিষয়টি জানিয়ে শিক্ষা মন্ত্রলয়কে চিঠি দেওয়া হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close