খুলনা প্রতিনিধি

  ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

খুলনার সড়কে মৃত্যুর মিছিল

খুলনায় ১২ ঘণ্টার ব্যবধানে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় ছয়জন নিহত হয়েছেন; আহত হয়েছেন আরো ৩০ জন। এর মধ্যে সোমবার বেলা ১১টায় খুলনার ডুমুরিয়ায় পিকনিকের বাস খাদে পড়ে মেঘলা খাতুন (১৪) নামে এক স্কুলছাত্রী নিহত হয়। খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়কের চুকনগরের চাকুন্দিয়ায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

এর আগে রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে খুলনার রূপসা সেতু বাইপাস সড়কে প্রাইভেটকার ও ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে গোপালগঞ্জের ছাত্র ও যুবলীগের ৫ নেতা নিহত হন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা আরো বাড়তে পারেÑ এমন আশঙ্কা অমূলক নয়।

নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) খুলনার পরিসংখ্যান অনুযায়ী গত এক বছরে খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৩৯২ জন। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ১ হাজার ৯ জন। নিহতের মধ্যে পথচারী ও মোটরসাইকেল আরোহীর সংখ্যা বেশি। দুর্ঘটনার হার সবচেয়ে বেশি যশোর জেলায়। এর পরের সারিতে রয়েছে সাতক্ষীরা, খুলনা ও কুষ্টিয়া জেলা। খুলনা মহানগরীতে ছোটখাটো দুর্ঘটনায় আহতের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।

খুলনার নাগরিক নেতারা বলেন, এখানে সংখ্যার কম-বেশির চেয়েও যে বিষয়টি জরুরি, তা হলো দুর্ঘটনার কারণ খুঁজে বের করা। সংবা মাধ্যমে যেসব খবর এসেছে, তাতে দেখা যায়, চালকদের বেপরোয়া গাড়ি চালানোর কারণেই বেশির ভাগ দুর্ঘটনা হয়ে থাকে। এ ছাড়া ভাঙাচোরা সড়ক, একই সড়কে বিভিন্ন গতির যানবাহন চলাচল, সড়কবাতি না থাকার কারণেও দুর্ঘটনা ঘটে থাকে।

খুলনা জেলা নিসচার সাধারণ সম্পাদক এস এম ইকবাল হোসেন বিপ্লব বলেন, সড়ক দুর্ঘটনার জন্য দায়ী ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, মালিকের অব্যস্থাপনা ও মনিটরিংয়ের অভাব, দুর্বল ট্রাফিকব্যবস্থাপনা, জনগণের অসচেতনতা, অনিয়ন্ত্রিত গতি, রাস্তা নির্মাণে ত্রুটি, রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব এবং আইন ও তার যথাযথ প্রয়োগ না হওয়ায় সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে।

জানা যায়, খুলনা মহানগরী ও জেলায় সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে জেলা প্রশাসনের পাশাপাশি সিটি করপোরেশন ও পুলিশ ব্যাপক উদ্যোগ নিয়েছে। এর মধ্যে খুলনা মহানগরীতে যানজট ও দুর্ঘটনা কমাতে ইজিবাইকের লাইসেন্স ও শহরের বাইরের ইজিবাইক শহরে ঢুকতে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ট্রাফিক বিভাগ অবৈধ যানবাহন নিয়ন্ত্রণে গাড়ি তল্লাশি ও বৈধ কাগজপত্র নিশ্চিত করতে প্রতিনিয়ত অভিযান চালাচ্ছে। তবে এত কিছুর পরও বন্ধ করা যায়নি অনাকাক্সিক্ষত মৃত্যুর মিছিল।

জন-উদ্যোগ খুলনার আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট কুদরত-ই খুদা বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে সবচেয়ে বড় প্রয়োজন জনসচেতনতা। কিছুদিন আগেই শিক্ষার্থীরা শুধু নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনই করেনি, তারা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে কীভাবে আইন মেনে চলতে হয়। সড়ক দুর্ঘটনা রোধে কেবল চালক ও যাত্রীকে সচেতন হলে হবে না, পথচারীদেরও সচেতন হতে হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close