ক্রীড়া ডেস্ক
মেসির পায়ে চূর্ণ চেলসি
বার্সেলোনা সমর্থকরা ঈশ^রকে ধন্যবাদ দিতে পারেন। কারণ তাদের কাছে একজন জাদুকর আছে। সেই জাদুকরের নাম লিওনেল মেসি। পরশু ছিল মেসির রাত। কেন তিনি বিশ^সেরা ফুটবলার তা আরেকবার প্রমাণ করলেন চেলসির বিপক্ষে খেলতে নেমে। ন্যু ক্যাম্পে পরশু নিজে জোড়া গোল করেছেন। ডিফেন্স চেরা পাসে ওসমান ডেম্বেলেকে দিয়ে করিয়েছেন আরেক গোল। সবচেয়ে কম ম্যাচ খেলে চ্যাম্পিয়নস লিগে ছুঁয়েছেন ১০০ গোলের মাইলফলক। মেসির রেকর্ড গড়ার রাতে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী চেলসির বিপক্ষে বার্সেলোনা জয় পেয়েছে ৩-০ গোলে।
চেলসির বিপক্ষে মাঠে নামার আগে মেসির গোল ছিল ৯৮। জোড়া গোলে চ্যাম্পিয়নস লিগে পরশু গোলের সেঞ্চুরিও পেয়ে গেলেন আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড। ১০০ গোলের জন্য তার খেলতে হয়েছে ১২৩ ম্যাচ। সামনে আছে একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী ক্রিশ্চিয়ানো রোলানদো। ১৪৮ ম্যাচে ১১৭ গোল নিয়ে সবার উপরে আছেন সিআর সেভেন। কিন্তু একটা জায়গায় মেসি টপকে গেছেন পর্তুগিজ উইঙ্গারকে। ১০০ গোলের দেখা পেতে রোনালদোর খেলতে হয়েছিল ১৩৭ ম্যাচ। মেসি তার চেয়ে ১৪ ম্যাচ কম খেলে পেয়েছেন গোলের সেঞ্চুরি।
লড়াইটা ছিল কৌশল বনাম শক্তির লড়াই। বার্সেলোনা-চেলসি ম্যাচ মানে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর ঐতিহাসিক লড়াই। ফুটবল সমর্থকদের কাছে যা ‘ইউরোপীয়ান ক্ল্যাসিকো’ নামে পরিচিত। চেলসির বিপক্ষে জয়ে বার্সেলোনা একটা প্রতিশোধও উসুল করে নিল। ২০১২ সালে চেলসির বিপক্ষে হেরে শেষ ষোলো থেকে বিদায় নিতে হয়েছিল কাতালানদের। জার্মান জায়ান্ট বায়ার্ন মিউনিখকে হারিয়ে ব্লুজরাও প্রথমবারের মতো ঘরে তুলেছিল চ্যাম্পিয়নস লিগ শিরোপা। চেলসিকে রক্ষার জন্য সেবার দিদিয়ের দ্রগবা ছিলেন। পরশু চেলসির ত্রাতা হয়ে উঠতে পারলেন না কেউ। প্রথম লেগে স্টামফোর্ডে ১-১ গোলে ড্র করার ফলে দুই দলের জন্য ন্যু ক্যাম্পের ম্যাচ ছিল অলিখিত ফাইনাল। ম্যাচ শুরুর তখন ৩ মিনিটও হয়নি। রেফারির ঘড়িতে ২ মিনিট ৮ সেকেন্ড। মাঝমাঠ থেকে বল নিয়ে মেসি ঢুকে পড়েন চেলসির ডি-বক্সে। এরপর আড়াআড়ি নেওয়া শট থিবৌথ কোতোর্সকে বোকা বানিয়ে বল ঢুকে পড়ে চেলসির জালে। মেসিও পেয়েছেন তার ক্যারিয়ারের দ্রুততম গোল। এক গোলে পিছিয়ে থেকে চেলসি আক্রমণ চালাতে থাকে বার্সা শিবিরে। উল্টো ২০ মিনিটে মেসির পাস থেকে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন ফ্রেঞ্চ উইঙ্গার উসমান ডেম্বেলে। চেলসির ভাগ্য খারাপই বলতে হবে। ৩৭ মিনিটে মার্কো আলনসোর ফ্রি-কিক বার্সার গোলপোস্ট লেগে ফিরে আসে। দুই লেগ মিলিয়ে চেলসি খেলোয়াড়দের ৪টি শটে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে গোলপোস্ট। উইলিয়ান, হেডেন হ্যাজার্ড, অলিভিয়ের জিরোরা বার্সার রক্ষণভাগে ত্রাস সৃষ্টি করলেও গোল শোধ করতে পারেনি। বার্সার রক্ষণভাগ নিরাশ করেছে চেলসির ১৪টি আক্রমণ। ৪৮ মিনিটে একটা পেনাল্টির আশাও জাগিয়েছিল ব্লুজরা। কিন্তু ৬৩ মিনিটে প্রতি আক্রমণে নিজের দ্বিতীয় গোল করে চেলসির ম্যাচে ফেরার আসা শেষ করে দেন মেসি।
পরশু বেসিক্টাসের বিপক্ষে অ্যাওয়ে ম্যাচের দ্বিতীয় লেগ খেলতে নেমে ৩-১ গোলের জয় পেয়েছে ইয়োপ হেইঙ্কেসের শিষ্যরা। ৮-১ গোলের জয় নিয়ে টানা ছয়বার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করল বায়ার্ন মিউনিখ। প্রথম লেগে অ্যালিয়েঞ্চ এ্যারেনায় তারা এগিয়ে ছিল ৫-০ গোলে। ১৮ মিনিটে গোল করে বায়ার্নকে এগিয়ে দেন থিয়াগো আলকানতারা। দ্বিতীয়ার্ধে প্রতিপক্ষ খেলোয়াড় গোখন গোনুলের আত্মঘাতী গোলে দুই গোলে লিড নেয় বায়ার্ন। ৫৯ মিনিটে বেসিক্টাসের পক্ষে ব্যবধান কমায় ভাগনার লাভ। ৮৪ মিনিটে বেসিক্টাসের জালে শেষ পেরেকটি টুকে দেন সান্দ্রো ওয়াগনার। প্রথম লেগে এগিয়ে থাকায় কোচ হেইঙ্কস এই দিন মাঠে নামিয়েছিল তরুণ দল।
"