নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

‘সেইফ জোনে’ জটিলতা দেখছে ইউএনএইচসিআর

মিয়ানমারের হাতেই রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান : গ্রান্ডি

রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে বাংলাদেশের প্রস্তাবে একমত জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর, তবে মিয়ানমারের ভেতরে রোহিঙ্গাদের জন্য সেইফ জোন প্রতিষ্ঠার বিষয়ে সংশয়ী তারা। ইউএনএইচসিআরের প্রধান ফিলিপ্পো গ্রান্ডি গতকাল সোমবার ঢাকায় সাংবাদিকদের বলেন, এই সিদ্ধান্ত তো নিতে হবে মিয়ানমার সরকারকে। অন্যথায় নিরাপত্তা পরিষদের হস্তক্ষেপ লাগবে, যা একটি ‘জটিল বিষয়’। তিনি বলেন, ‘আমরা রাখাইন প্রদেশে স্বাভাবিক নিরাপত্তা চাই। এটা ছাড়া মানুষ সেখানে ফিরবে না। তারা সব হারিয়েছে। যদি নিরাপত্তার বিষয়ে ওই ধরনের কোনো নিশ্চয়তা না থাকে, তারা ফিরে যাবে না।’

বিকেলে গুলশানের এক হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন ইউএনএইচসিআর প্রধান। সংকটের সময় সীমান্ত খোলা রাখায় বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানানো পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের জন্য সহায়তার পরিমাণ বাড়াতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান গ্রান্ডি। একই সঙ্গে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে অবিলম্বে সহিংসতা বন্ধ এবং রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানান ইউএনএইচসিআর প্রধান। তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গারা শুধু শরণার্থীই নয়, তারা রাষ্ট্রহীন। সুতরাং এটি শরণার্থী সংকট।’ রাখাইনে সেনাবাহিনীর দমন-পীড়নের মুখে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া চার লাখ ৩০ হাজার রোহিঙ্গার জন্য দাতাদের কাছে বড় তহবিলের আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ।

ফিলিপ্পো গ্রান্ডি বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যার মূল কারণ নাগরিকত্ব, এর সমাধান করতে হবে। এই সমস্যার শুরু মিয়ানমারে, সমাধানও মিয়ানমারকেই করতে হবে। রোহিঙ্গারা যেন নিরাপদে তাদের দেশে ফেরত যেতে পারে, সে ব্যবস্থাও মিয়ানমারকেই করতে হবে।’ গ্রান্ডি বলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শরণার্থীদের জন্য সীমান্ত খুলে দিয়ে যে মহানুভবতার পরিচয় দিয়েছেন আমি সুস্পষ্টভাবে এবং জনসম্মুক্ষে তার স্বীকৃতি দিয়ে তাকে এবং বাংলাদেশের জনগণকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। এ সমস্যার শুরু মিয়ানমারে এবং এ সমস্যার একমাত্র সমাধান রোহিঙ্গাদের তাদের নিজ দেশে প্রত্যাবর্তন। রোহিঙ্গাদের নিরাপদে এবং সম্মানের সঙ্গে তাদের দেশ মিয়ানমারে ফিরিয়ে নিতে হবে।

ফিলিপ্পো গ্রান্ডি বলেন, গ্র্যান্ডি বলেন, ‘রাখাইনে সহিংসতা বন্ধের কাজ ও মানবিক সাহায্যদাতা সংস্থাগুলো যেন কাজ শুরু করতে পারে, তার ব্যবস্থা করা এখন জরুরি।’ গ্র্যান্ডি ২৩ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশে আসার পর গত দুই দিন কক্সবাজারে ছিলেন। তিনি জানান, ‘এখন পর্যন্ত চার লাখ ৩৬ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসেছে। আমি সেখানে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের ওপরে শারীরিক, যৌন হয়রানিসহ বিভিন্ন ধরনের নির্যাতন চালানো হয়েছে।’ কক্সবাজারের রোহিঙ্গাদের অবস্থান সম্পর্কে ফিলিপ্পো গ্রান্ডি বলেন, ‘সেখানে রোহিঙ্গাদের থাকার জায়গা, পানি, স্যানিটেশন ও খাদ্যের প্রয়োজন।’ কফি আনান কমিশনের রিপোর্ট বিষয়ে তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্বের বিষয়ে সেখানে বলা হয়েছে।’

রাখাইনে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ অঞ্চল গড়ে তোলা প্রসঙ্গে জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা প্রধান বলেন, ‘এই নিরাপদ অঞ্চলে কে সুরক্ষা দেবে, সেটি বিবেচনার বিষয়। মিয়ানমারের দায়িত্ব হচ্ছে, তার নাগরিকদের সুরক্ষা দেওয়া। তারা না দিলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যদি এই সুরক্ষা দিতে হয়, তাহলে সেটি হবে একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া।’ রোহিঙ্গাদের নিবন্ধনের বিষয়ে তিনি বলেন, সরকারকে এ বিষয়ে কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে জাতিসংঘের শরণার্থী-বিষয়ক সংস্থা।’

মিয়ানমারে এখন কতজন রোহিঙ্গা আছে, তা জানেন না উল্লেখ করে ফিলিপ্পো গ্রান্ডি বলেন, ‘জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা রাখাইনে কাজ করছে, কিন্তু নিরাপত্তার অভাবে তাদের কার্যক্রম খুবই সীমিত।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist