নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৮ আগস্ট, ২০১৭

রাজনৈতিক দলের মধ্যে মধ্যস্থতা ইসির কাজ নয় : সিইসি

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) খান মো. নুরুল হুদা বলেছেন, ‘আমাদের এখানে আন্তর্জাতিক অনেক মধ্যস্থতাকারী এসেও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা করাতে পারেনি। তাই মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা আমরা নিতে চাই না।’ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ধারাবাহিক সংলাপের অংশ হিসেবে গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের সঙ্গে গতকাল বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দিনের সংলাপ করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বৈঠক শেষে সিইসি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। সিইসি কে এম নুরুল হুদা বলেন, ‘আমাদের কারো কাছে যাওয়ার দরকার নেই। ইসি একটি স্বাধীনসত্তা। আমরা শপথ নিয়েছি, কারো চাপে নতিস্বীকার করব না। কারো কাছে যাব না। এটাই যথেষ্ট। তা ছাড়া আমাদের এখানে আন্তর্জাতিক অনেক মধ্যস্থতাকারী এসেও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা করাতে পারেনি। তাই মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা আমরা নিতে চাই না, এটা আমাদের কাজও নয়। ইসি এ উদ্যোগ নেবেও না।’

সকাল সোয়া ১০টায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবন মিলনায়তনে গণমাধ্যমের সঙ্গে দ্বিতীয় দিনের সংলাপ শুরু হয়ে শেষ হয় দুপুর পৌনে ১টায়। সংলাপে টেলিভিশন, রেডিও ও অনলাইন সংবাদমাধ্যমের ২৬ সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন। গত বুধবার গণমাধ্যমের সঙ্গে ইসির প্রথম দিনের সংলাপে ২৬ জন বিভিন্ন পত্রিকার সম্পাদক, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও সাংবাদিক নেতা অংশ নেন। আগামী ২৪ আগস্ট থেকে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ইসির সংলাপে বসবে।

সব দলকে নির্বাচনে আনতে ‘মধ্যস্থতাকারীর’ ভূমিকা নিতে গণমাধ্যমের প্রতিনিধিদের কারো কারো সুপারিশের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘আমাদের কারো কাছে যাওয়ার দরকার নেই। ইসি একটি স্বাধীনসত্তা। আমরা শপথ নিয়েছি, কারো চাপে নতিস্বীকার করব না। কারো কাছে যাব না। এটাই যথেষ্ট।’ সংলাপের প্রশ্নোত্তর পর্বে সংসদ নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েনের বিষয়ে সিইসি বলেন, এটি কমিশনের সিদ্ধান্ত। যদি পরিস্থিতি বিবেচনায় মনে করি সেনাবাহিনী দরকার আছে, তাহলে থাকবে। নির্বাচনে কে সেনা চাইল, কে চাইল না সেটা কমিশনের বিষয় নয়।

এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘বর্তমানে আমরা অনুকূল ও আস্থাশীল অবস্থানে আছি। কেউ আমাদের বিরক্ত করেননি। কমিশনে কেউ তার দাবি-দাওয়া নিয়ে আসেননি। আমরা এখনো পর্যন্ত আস্থাশীল আছি এবং থাকব।’ নির্বাচনের সময় কী ধরনের সরকার থাকবে, সেই ব্যাপারে কমিশনের কোনো ভূমিকা নেই বলে মনে করেন সিইসি। তিনি আরো বলেছেন, ‘ইসি একটি কারিগরি (টেকনিক্যাল) প্রতিষ্ঠান। সরকার যে নির্বাচন পদ্ধতি ঠিক করে দেয়, সেভাবেই আমাদের ভোট কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হয়। একসময় হ্যাঁ বা না ভোট ছিল। সেই সময়কার কমিশন সেই ভোট করেছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় যে পদ্ধতি ছিল তারা সেটাই করেছে। আমাদের এখানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের যে আবেদনটা ছিল, সেই আবেদন সবশেষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় কি আমরা দেখিনি? প্রধান বিচারপতি কে হবে তার হিসাব-নিকাশ করার বিষয়টিও আমরা দেখেছি। কাজেই সবকিছু নির্ভর করে সরকার কোনো ধরনের পরিবেশ ঠিক করে দেয়। এখন এই সরকারের অধীনে যে অবস্থা আছে সেভাবে নির্বাচন করতে হলে আমরা সেটি করব। আর যদি সরকার পরিবর্তন করে তাহলে সেভাবে হবে। কাজেই নির্বাচনের সময় কোন ধরনের সরকার থাকবে সে ব্যাপারে আমাদের কোনো ভূমিকা থাকার কথা নয়। আমরা তা নির্ধারণ করতে পারি না।’

ভোট নিয়ে চাপের মুখে পড়া-সংক্রান্ত অপর এক প্রশ্নের জবাবে খান মো. নুরুল হুদা বলেন, ‘এর সুযোগ নেই। কারো কাছে যদি আমরা আত্মসমর্পণ করি, তাহলে এটা আমাদের দুর্বলতা। কিন্তু কারো প্রতি কোনো শত্রুতা নেই। একইসঙ্গে কারো প্রতি কোনো আকর্ষণ নেই, কারো প্রতি বিকর্ষণও নেই। আমাদের আকর্ষণ-বিকর্ষণ যাই বলেন, সেটা রয়েছে নির্বাচনী আইনের প্রতি। এ জন্যই আমরা আপনাদের বিরক্ত করছি। ব্যস্ততার মধ্যেও আপনাদের আমন্ত্রণ করেছি। আমরা আপনাদের সহযোগিতা ও সমর্থন চাই।’ তিনি বলেন, চাপের মুখেও ‘কম্প্রোমাইজ’ না করার অঙ্গীকার যদি থাকে, তাতেই কাজ হবে। সিইসি বলেন, ‘গণতান্ত্রিক আয়ুষ্কাল আমাদের কম। কখনো হ্যাঁ-না ভোট, কখনো নির্বাচনী সরকারের অধীনে নির্বাচন, এক ব্যক্তির অধীনে নির্বাচন; এই অবস্থায় চলেছি। টানা তিনটি নির্বাচন একই নিয়মে করতে পারিনি আমরা। কাজেই সমস্যা তো আমাদের আছেই।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist