নিজস্ব প্রতিবেদক

  ৩০ মার্চ, ২০২০

করোনা মোকাবিলায় পরামর্শ

সরকার জনগণের পাশে আছে : প্রধানমন্ত্রী

করোনাভাইরাসের সংক্রমণরোধে দেশবাসীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই সংকটে সবকিছু নিয়ে সরকার জনগণের পাশে আছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। গতকাল রোববার বিকালে প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবনে এক অনির্ধারিত অনুষ্ঠানে বক্তৃতায় এ কথা জানান।

করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারকে সহায়তা করতে সশস্ত্রবাহিনীসহ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একদিনের সমপরিমাণ বেতনের অর্থ প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেওয়া হয় অনুষ্ঠানে।

এ সময় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দেশের খ্যাতনামা কয়েকটি ব্যবসায়ী গ্রুপের পক্ষ থেকেও প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে করোনা সংকট মোকাবিলায় অর্থ সহায়তা দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী ছিলেন গণভবনে, আর ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে তার মুখ্য সচিবের কাছে অনুদানের চেক হস্তান্তর করেন।

প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে ধৈর্যের সঙ্গে এই সংকট মোকাবিলা করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশের কাছ থেকে করোনা সংকট মোকাবিলায় সহযোগিতা চায়। করোনাভাইরাস মোকাবিলায় করণীয় সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ।

এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল করোনাভাইরাস মোকাবিলায় পরামর্শ ও আহ্বান সংবলিত চারটি বার্তা জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। প্রধান তথ্য কর্মকর্তা সুরথ কুমার সরকার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই বার্তাগুলো প্রচারের জন্য অনুরোধ জানান। প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ ও বার্তাগুলো হচ্ছে নিম্নরূপ :

করোনাভাইরাস মোকাবিলায় আপনার করণীয়

প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের হবেন না। বাইরে বের হলে মানুষের ভিড় এড়িয়ে চলুন। যারা করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়ে বিদেশ থেকে ফিরেছেন, তারা ১৪ দিন সম্পূর্ণ আলাদা থাকুন। ঘন ঘন সাবান-পানি দিয়ে হাত ধুতে হবে। হাঁচি-কাশি দিতে হলে রুমাল বা টিস্যু পেপার দিয়ে নাক-মুখ ঢেকে নিন। যেখানে সেখানে কফ-থুথু ফেলবেন না। করমর্দন বা কোলাকুলি থেকে বিরত থাকুন। মুসলমান ভাইয়েরা ঘরেই নামাজ আদায় করুন। অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরাও ঘরে বসে প্রার্থনা করুন। পরিবার, পাড়া প্রতিবেশী এবং দেশের মানুষের জীবন রক্ষার্থে এসব পরামর্শ মেনে চলা প্রয়োজন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, নিরাপদ থাকুন।

সুরক্ষা ও চিকিৎসা সামগ্রীর ঘাটতি নেই

স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষার বিষয়ে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। পিপিই-সহ পর্যাপ্ত পরিমাণ সুরক্ষা সরঞ্জাম সংগ্রহ করা হয়েছে। করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য পর্যাপ্ত কিট মজুদ রয়েছে। ঢাকায় চারটি স্থানে এবং চট্টগ্রামে করোনাভাইরাস পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। অন্য ছয়টি বিভাগে করোনাভাইরাস পরীক্ষাগার স্থাপনের কাজ চলছে। কেউ গুজব ছড়াবেন না। গুজব রটনাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

করোনা ভাইরাসে ভীত হবেন না

করোনাবাইরাস দ্রুত ছড়ানোর ক্ষমতা রাখলেও ততটা প্রাণঘাতী নয়। এই ভাইরাসে আক্রান্ত সিংহভাগ মানুষই কয়েক দিনের মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠে। নানা রোগে আক্রান্ত এবং বয়স্ক মানুষের জন্য এই ভাইরাস বেশ প্রাণ-সংহারী হয়ে উঠেছে। আপনার পরিবারের সংবেদনশীল মানুষটির প্রতি বেশি নজর দিন। আতঙ্কিত হবেন না। আতঙ্ক মানুষের যৌক্তিক চিন্তাভাবনার বিলোপ ঘটায়। আপনি, পরিবারের সদস্য এবং প্রতিবেশীরা যেন সংক্রমিত না হন, সে বিষয়ে সতর্ক থাকুন। আপনার সচেতনতা আপনাকে, আপনার পরিবারকে এবং সর্বোপরি দেশের মানুষকে সুরক্ষিত রাখবে।

সহনশীল ও সংবেদনশীল হোন

করোনাভাইরাসের কারণে শুধু বাংলাদেশ নয়, গোটা বিশ্ব এক সংকটময় সময় অতিক্রম করছে। এ সময়ে আমাদের সহনশীল এবং সংবেদনশীল হতে হবে। বাজারে কোনো পণ্যের ঘাটতি নেই। দেশের অভ্যন্তরে এবং বাইরের সঙ্গে সরবরাহ চেইন অটুট রয়েছে। অযৌক্তিকভাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি করবেন না। যতটুকু না হলে নয়, তার অতিরিক্ত কোনো ভোগ্যপণ্য কিনবেন না। সীমিত আয়ের মানুষকে কেনার সুযোগ দিন। অসহায় মানুষের সহায়তায় বিত্তবানদেরও তিনি এগিয়ে আসার জন্য আহ্বান জানান।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close