প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ১৫ জুন, ২০১৯

বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে রেকর্ড অগ্রগতি বাংলাদেশের

২০১৮ সালে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) আকর্ষণের দিক দিয়ে রেকর্ড পর্যায়ের অগ্রগতি করেছে বাংলাদেশ। গত বছর বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগের প্রবাহ ৬৮ শতাংশ বেড়ে ৩৬০ কোটি ডলারে পৌঁছেছে। বিদ্যুৎ ও পোশাক শিল্প খাতে উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ আকর্ষণের মধ্য দিয়ে এ অগ্রগতি অর্জন সম্ভব হয়। গত বুধবার জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন সংস্থা (আঙ্কটাড) প্রকাশিত বিশ্ব বিনিয়োগ প্রতিবেদন-২০১৯ এ বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগের এ চিত্র উঠে এসেছে। আশা করা হচ্ছে অগ্রগতির এ ধারা অব্যাহত থাকবে।

আঙ্কটাডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দক্ষিণ এশিয়ায় ২০১৮ সালে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ হয়েছে ৫ হাজার ৪০০ কোটি ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় ৪ শতাংশ বেশি। গড়ে সাড়ে ৩ শতাংশ বিনিয়োগ বেড়েছে। তবে বাংলাদেশে বিনিয়োগ বেড়েছে সবচেয়ে বেশি (৬৮ শতাংশ)। প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিদ্যুৎ উৎপাদন ও পোশাক কারখানাসহ শ্রমভিত্তিক শিল্পগুলোতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বিনিয়োগ হওয়ার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে এফডিআই-এর ক্ষেত্রে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। জাপান টোব্যাকো কর্তৃক ইউনাইটেড ঢাকা টোব্যাকো অধিগ্রহণের বিষয়টিকেও এক্ষেত্রে উল্লেখ করা হয়েছে। বাংলাদেশের স্থানীয় কোম্পানি ঢাকা টোব্যাকো কেনার মাধ্যমে গত বছর ১৫০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে জাপান টোব্যাকো।

ঐতিহাসিকভাবে দক্ষিণ এশিয়ায় বিদেশি বিনিয়োগ প্রবাহের বেশির ভাগই (৭০ থেকে ৮০ শতাংশ) হয় ভারতে। গত বছরও দেশটিতে বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ সর্বোচ্চ ছিল। ২০১৮ সালে ভারতে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ ৬ শতাংশ বেড়ে ৪২০ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে। উৎপাদন, যোগাযোগ ও আর্থিকসেবা খাতে বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল সবচেয়ে বেশি। দক্ষিণ এশিয়ার আরেক দেশ পাকিস্তান বিদেশি বিনিয়োগ পাওয়ার দিক থেকে চতুর্থ অবস্থানে থাকলেও গত বছর দেশটিতে বিনিয়োগের পরিমাণ ২৭ শতাংশ কমেছে। ২০১৮ সালে ২৪০ কোটি ডলার বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে পেরেছে পাকিস্তান।

শিল্প উন্নয়ন খাতে বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল ব্যবহারের ক্ষেত্রেও বিপুল অগ্রগতি হওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে আঙ্কটাডের প্রতিবেদনে। বলা হয়েছে, গত পাঁচ বছরে বিশ্বজুড়ে ১ হাজারেরও বেশি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। আসন্ন বছরগুলোতে গড়ে তোলার জন্য আরো অন্তত ৫০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল পাইপলাইনে আছে। বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানে নির্মাণের অপেক্ষায় থাকা বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের সংখ্যা ২০০-এর বেশি। অর্থনীতিবিদ ও নীতি-নির্ধারকরা বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির প্রশংসা করেছেন। তারা আশা করছেন, ২০২৪ সাল নাগাদ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হবে বাংলাদেশ। তবে বর্তমান প্রবৃদ্ধির ধারা ধরে রাখার জন্য ব্যবসায়িক পরিবেশের উন্নয়ন এবং বিনিয়োগ আইন ও বিধিমালায় সংস্কার আনার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

বিশ্বব্যাংকের ইজি অব ডুয়িং বিজনেস-২০১৯ বা সহজে ব্যবসা করার সূচক-২০১৯ এ ১৯০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান এখন ১৭৬তম। এ সূচকটি বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ বলে গণ্য করা হয়। সরকার ২০২১ সালের মধ্যে এ সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান দুই অঙ্কে বা কমপক্ষে ৯৯তম অবস্থানে নিয়ে আসার লক্ষ্য ঠিক করেছে। এজন্য সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থার জন্য কর্মপরিকল্পনা ঠিক করেছে বিডা। সে অনুযায়ী আইন, বিধি ও প্রক্রিয়ায় সংস্কার চলছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close