ক্রীড়া ডেস্ক

  ১২ নভেম্বর, ২০১৮

মুমিনুল-মুশফিকের এক দিন

‘মর্নিং শোজ দ্য ডে’। ইংরেজি এই প্রবাদটা সব সময় প্রযোজ্য নয়। এটার সবচেয়ে বড় উদাহরণ এখন ঢাকা টেস্টে। দিনের শুরুতে হুড়মুড়িয়ে ধসে পড়া বাংলাদেশের সকালটা যতটা হতাশা নিয়ে শুরু হয়েছিল, ততটাই আনন্দের হয়ে উঠল শেষ বিকেলে। দিনের শুরুর ধস ছাপিয়ে পাদপ্রদীপে উঠে এলো জোড়া সেঞ্চুরি। তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগার ছুঁয়েছেন মুশফিকুর রহিম, মুমিনুল হক দুজনই। এ দুজনের ব্যাটিং দৃঢ়তায় প্রথম ইনিংসের প্রথম দিন শেষে পাঁচ উইকেটে ৩০৩ রান করেছে বাংলাদেশ। অথচ দিনের শুরুতেই ২৬ রানে তিন উইকেট তুলে নিয়ে টাইগারদের কাঁপিয়ে দিয়েছিল জিম্বাবুয়ে। মুমিনুল-মুশফিকের জুটিতে এসেছে ২৬৬ রান। যা চতুর্থ উইকেট জুটিতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ প্রথম প্রথম ২০০ রানের যুগলবন্দি। এই জুটির রাজত্বের আগে বাংলোদেশের ব্যাটিংয়ে ছিল আত্মসমর্পণের পুরনো গল্প। টস জিতেছেন মাহমুদউল্লাহ, আগে ব্যাট করার সুযোগটি পেয়েছে বাংলাদেশ। শুরুর আর্দ্রতায় উইকেটে ছিল প্রাণ। জিম্বাবুয়ের পেসাররা তা কাজে লাগিয়েছে। চ্যালেঞ্জ ছিল প্রথম ঘণ্টা নিরাপদে কাটানো। কিন্তু মুখ থুবড়ে পড়েছে টপ অর্ডার।

ইমরুল কায়েস আউট হলেন কাইল জার্ভিসের দারুণ ডেলিভারিতে। উইকেটের পেছনে রেজিস চাকাভার ক্যাচটি ছিল আরো দুর্দান্তÍ। কিন্তু বলটি ছেড়ে দেওয়ার সুযোগও ছিল ইমরুলের। আউট হলেন ১৬ বলে শূন্য রানে, বাংলাদেশের কোনো ওপেনারের সবচেয়ে বেশি বল খেলে শূন্য রানে আউটের রেকর্ড।

লিটন দাস ক্যাচ দিলেন প্রিয় ফ্লিক শটে। নাজমুল হোসেন শান্তর জায়গায় সুযোগ পাওয়া মোহাম্মদ মিঠুন অভিষেকে যে শটে শূন্য রানে ফিরলেন, ওয়ানডেতে ইনিংসের শুরুতেও অমন বাইরের বল তাড়া করা অপরাধের সামিল। স্কোরবোর্ডে রান তখন তিন উইকেটে ২৬, চোখরাঙানি আরেকটি ব্যাটিং ব্যর্থতার। মুমিনুল ও মুশফিকের শুরুটাও আশ্বাস দিতে পারছিল না ভরসার। বিশেষ করে মুমিনুল ছিলেন নড়বড়ে। আগের আট ইনিংসে ৬৯ রান আত্মবিশ্বাসের যতটা কেড়ে নিয়েছিল, তার পুরোটাই প্রতিফলিত হচ্ছিল ব্যাটিংয়ে।

কঠিন সময়ে অনেক সময়ই লাগে ভাগ্যের ছোঁয়া। সেই সৌভাগ্যের ছোঁয়া পেলেন মুমিনুল। উইকেটে কাটানো সময় তাকে ফিরিয়ে দিল বিশ্বাস। সময়ের সঙ্গে ব্যাট ছড়াতে থাকল সৌরভ। পাল্টে যেতে থাকল স্কোরবোর্ডের চেহারা।

কাল লাঞ্চের আগে আর কোনো উইকেট হারায়নি বাংলাদেশ। তবে অবস্থান নিরাপদ ছিল না তখনো। দাপটের শুরু দ্বিতীয় সেশনে। প্রথম সেশনে ৯ রানে জীবন পাওয়া মুমিনুল পরের সেশনের শুরুতেই জীবন পেলেন ২৫ রানে। হয়তো বুঝে গেলেন, দিনটি তারই। বেড়ে গেল ব্যাটের ধার। বাড়ল রানের গতি। লাঞ্চ আর চা বিরতির মাঝের সেশনে ৩২ ওভারে ১৫১ রান তুলেছে বাংলাদেশ। মুমিনুলের ব্যাট থেকেই এসেছে ১০০ বলে ৯০!

১৯ চারে ২৪৭ বলে ১৬১ রানের ইনিংস খেলে যখন ফিরেছেন মুমিনুল। ষষ্ঠ শতক তুলে নেওয়া মুশফিক ১১১ রানে অজেয় থেকে দিন শেষ করেছেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close