আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ট্রাম্প-কিমের বহুল প্রত্যাশিত সেই বৈঠক আজ
বহুল প্রত্যাশিত যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের বৈঠক আজ মঙ্গলবার। পরস্পরের প্রতি নানা হুমকি-ধমকি ও উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ের পর অবশেষে একটি শান্তিপূর্ণ নিষ্পত্তির লক্ষ্যে বৈঠকে বসছেন দুই নেতা। তাই এই বৈঠককে ঘিরে বিপুল কৌতূহল রয়েছে বিশ্ববাসীর মনে। কেমন হবে বৈঠক, উত্তর কোরিয়ার পরমাণু কর্মসূচি বন্ধে কতটা সফল হবেন ট্রাম্প! এদিকে এই বৈঠক যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে উত্তর কোরিয়া ‘নতুন একটি সম্পর্ক স্থাপন’ করতে পারে বলে সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম। পাশাপাশি বৈঠক ঘিরে উত্তর কোরিয়ার বাসিন্দাদের মধ্যে বেশ আগ্রহ লক্ষ্য করা গেছে। উৎসুক জনতা দেশটির বিভিন্ন স্থানে বাস, সাবওয়ে ও ট্রেন স্টেশনের কাছে স্থাপিত দেয়াল টিভিতে এই বৈঠক বিষয়ে প্রচারিত সংবাদ দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন। তবে শুধু কোরিয়ার নয়, বৈঠক ঘিরে ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যেও। তাছাড়া চীন, দুই কোরিয়া, জাপানসহ আশপাশের দেশগুলোর মধ্যে শান্তিপূর্ণ অবস্থা বজায় রাখতে বৈঠকের সাফল্যও কামনা করা হচ্ছে।
সিঙ্গাপুরের স্যান্তোসা দ্বীপে হবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও উত্তর কোরিয়ার নেতার আলোড়ন সৃষ্টিকারী এই বৈঠক। এটাই হবে আমেরিকার কোনো ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার ক্ষমতাসীন কোনো নেতার প্রথম বৈঠক। এই বৈঠকের মাধ্যমে কিম জং উন পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা থেকে সরে আসবেন বলে আশা করছে আমেরিকা। বৈঠকে কোরীয় উপদ্বীপকে পারমাণবিক অস্ত্রমুক্তকরণ, শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।
তবে ট্রাম্প সত্যিই বিশ্বে শান্তি ও স্থিতিশীলতা চান কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। প্রশ্ন রয়েছে ট্রাম্পের প্রতিশ্রুতি রক্ষার গ্যারান্টি নিয়েও। কেননা ইরানের সঙ্গে স্বাক্ষর হওয়া পরমাণু সমঝোতা ইস্যু থেকে বেরিয়ে আসার ঘোষণা দিয়েছেন ট্রাম্প। অথচ এই চুক্তি থেকে বেরিয়ে না আসার জন্য সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাসহ ইউরোপের অনেক নেতাই তাকে সতর্ক করে দিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি তাদের কারো কথাই গ্রাহ্য করেননি। তাই তো কিমের সঙ্গে তার বৈঠকের ফল নিয়ে শঙ্কিত আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা।
বৈঠকে পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ মূল ইস্যু হতে যাচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র চায়, উত্তর কোরিয়া তার পারমাণবিক অস্ত্র ত্যাগ করুক। কিন্তু উত্তর কোরিয়া যুক্তরাষ্ট্রের এই চাপ প্রতিরোধ করবে বলেই ব্যাপকভাবে ধারণা করা হচ্ছে কিন্তু বিনিময়ে তারা কী চাইতে পারে তা পরিষ্কার নয়।
তবে গতকাল সোমবার সকালে এক টুইটে ট্রাম্প জানিয়েছেন, সিঙ্গাপুরের ‘আবহে উত্তেজনা বিরাজ করছে’।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের আশা, এই শীর্ষ বৈঠকের মধ্য দিয়ে একটি প্রক্রিয়া শুরু হবে যা শেষ পর্যন্ত কিমের পারমাণবিক অস্ত্র ত্যাগে গিয়ে ঠেকবে।
প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালে ওবামা সময়েই দীর্ঘদিনের আলোচনা ও দর কষাকষির পর স্বাক্ষর হয়েছিল পরমাণু সমঝোতা চুক্তি জেসিপিওএ। এই সমঝোতায় আমেরিকার পাশাপাশি স্বাক্ষর করেছিল ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি, চীন ও রাশিয়া।
"