নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২৬ মে, ২০১৮

মাদকবিরোধী অভিযানের প্রভাব নিরাময় কেন্দ্রেও

মাদকবিরোধী অভিযানের প্রভাব পড়েছে মাদক নিরাময় কেন্দ্রগুলোতেও। নতুন রোগী না আসায় পুরনোরাই আছেন রাজধানীর বেশিরভাগ কেন্দ্রে। মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের তথ্যমতে, ঢাকা মেট্রো উপ-অঞ্চলে ৬৩টি মাদক নিরাময় কেন্দ্র রয়েছে। ধারণ ক্ষমতা থেকে বেশি রোগী ভর্তি করানোসহ বিভিন্ন অভিযোগ ছিল তাদের বিরুদ্ধে। কিন্তু এখন মাদকবিরোধী অভিযানের ভয়ে মাদক থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন অনেক আসক্ত। ফলে এ ধরনের রোগীর সংখ্যাও কমে আসার দাবি করছেন সংশ্লিষ্টরা।

রাজধানীর আদাবর এলাকার ক্রিয়া মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে রয়েছে ৩০টি সিট। সেখানে ২৭ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন। এ নিরাময় কেন্দ্রটির কর্মকর্তা নাজমুল জানান, আস্তে আস্তে মাদকাসক্ত রোগীর সংখ্যা কমে যাচ্ছে। আমাদের এখানে যে রোগী আছে, তার সবই আগে থেকে ভর্তি হওয়া। মাদকাসক্তের সুস্থ হতে দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসার প্রয়োজন হয়। এ কারণেই এখানে যারা আছেন, সবাই পুরনো। সম্প্রতি কেউই ভর্তি হয়নি।

মোহাম্মদপুরের হুমায়ুন রোডে অবস্থিত ঠিকানা মাদকাসক্তি ও মানসিক রোগ নিরাময় কেন্দ্রের চিকিৎসক ডা. সেলিম রেজা জানালেন, এ হাসপাতালে ৩০টি সিটের মধ্যে মাত্র ১৩টি সিটে রোগী ভর্তি রয়েছে। এদের মধ্যে মাদক ছাড়া মানসিক রোগী রয়েছেন পাঁচজন। তিনি বলেন, আমরা এখন মানসিক রোগীদের চিকিৎসাই বেশি করে থাকি। কেননা আমাদের কাছে মাদকাসক্ত রোগী এখন একেবারে নেই। মাদকের কারণে মানসিক রোগীদের সুস্থ করতে মাদকাসক্তদের চিকিৎসার চেয়েও বেশি সময় লাগে। কেননা তাদের উত্তেজনা, খুদামন্দা ও রাতজাগার পরিমাণটা ভয়াবহ থাকে।

অন্যদিকে, রাজধানীতে মাদকাসক্তের পরিমাণ নির্ভর করে এলাকাভেদে। ধানমন্ডি, পুরান ঢাকা, ফার্মগেট, মতিঝিল, মৌচাক, বাড্ডা এলাকার তুলনায় যাত্রাবাড়ী, উত্তরা, মিরপুর, গুলশান, বনানী এলাকায় মাদকাসক্তের সংখ্যা বেশি। এ এলাকার নিরাময় কেন্দ্রগুলোতে প্রায় ৯৫ ভাগ রোগী ইয়াবা ও গাঁজা দ্বারা আসক্ত।

মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের হিসাবমতে, ২০০১ সালে সর্বোচ্চ ২৪ হাজার ৮২ জন রোগীকে সরকারিভাবে নিরাময় করা হয়েছে। ২০১৬ সালে এ সংখ্যা ছিল ১২ হাজার ৮১৫। এসব রোগীদের মধ্যে ইয়াবা ও গাঁজার প্রভাব ছিল সিংহভাগ।

আগারগাঁওয়ের পশ্চিম কাফরুল এলাকার ‘আস্থা’ মাদক নিরাময় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় ছোট একটি অবকাঠামো। ঘরগুলো টিনশেড। ঘরের বাইরে বের হতে দেওয়ার সুযোগ নেই মাদকাসক্তদের। ফলে ভর্তিকৃত মাদকাসক্তদের মানসিক চাপের ক্ষেত্রে কোনো সুরাহা হয় না বলে মন্তব্য করেন মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞরা। এ ছাড়া সরকারি হিসাব অনুসারে এখানে ১০টি সিটের কথা উল্লেখ থাকলেও ‘আস্থা’র পরিচালক সাহেদ কাদের সমীর জানান, বর্তমানে ১২ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন এখানে। এদের সবাই ইয়াবা ও গাঁজায় আসক্ত।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের অতিরিক্ত পরিচালক (গোয়েন্দা) মো. নজরুল ইসলাম সিকদার বলেন, আমরা সব বিষয়েই নজর রাখছি আর কার্যক্রম পরিচালনা করছি। খুব দ্রুত দেশের নিরাময় কেন্দ্রগুলো একটি সুন্দর ও সুনির্দিষ্ট কাঠামোর আওতায় আসবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist