গাজী শাহনেওয়াজ
ইসির কাছে তারা ভিআইপি নন
দলীয় প্রার্থীর পক্ষে প্রচার চালাতে বাধা নেই জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানদের
নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কাছে ভিআইপি নন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানরা। তাই সরকারি সুবিধাভোগী হিসেবে সংজ্ঞায়িত করতে সংসদ নির্বাচনের আচরণ বিধিমালায় সংশোধনী আনার উদ্যোগ নিয়েও তা করেনি নির্বাচন কমিশন। ফলে দলীয় প্রার্থীদের পক্ষে নির্বাচনের প্রচারে অংশ নিতে পারবেন এ পদধারীরা। ইসির উদ্দেশ্য ছিল, সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে সরকারি সুবিধাভোগী হিসেবে রাষ্ট্রের অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের মতো তাদের অন্তর্ভুক্ত করা, যাতে স্থানীয় নির্বাচনে ক্ষমতার প্রভাব খাটাতে তৎপর না হয়ে উঠেন এসব নির্বাচিত প্রতিনিধি। কেননা সরকারি সুবিধা নিয়ে নির্বাচনের প্রচারণায় নামলে অহরহ ঘটতে পারে আচরণবিধি লঙ্ঘন, পাশাপাশি সব প্রার্থীর জন্য সমান প্রচারণার সুযোগ সীমিত হবে। পরে নানা সীমাবদ্ধতার কথা চিন্তা করে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এই অংশটিকে আচরণবিধি থেকে বাদ দিয়েছে। তবে বিধিমালায় প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় শোডাউন করা এবং নির্বাচনে ডিজিটাল ডিসপ্লে প্রচারণা বন্ধে নতুন ধারা সংযোজনী করেছে কমিশন। খবর ইসি সূত্রের।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, জেলা পরিষদের কার্যক্রম ও ব্যাপ্তি বিস্তৃত থাকলেও ক্ষমতা প্রয়োগের দিক থেকে তারা কাগুজে বাঘ। এমনকি ভিআইপি পদমর্যাদার সমতুল্য নন। কারণ রাজনীতিতে তারা তত গুরুত্বপূর্ণ না। তাই কমিশন নির্বাচনের প্রচারণা থেকে তাদেরকে দূরে রাখার যে চিন্তা করেছিল সেই অবস্থান থেকে সরে এসেছে।
সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা-২০০৮-এর সংশোধনী প্রস্তাব পর্যালোচনায় পাওয়া গেছে, সংসদ নির্বাচনের আচরণ বিধিমালার ২(১১) বিধিতে সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বলতে প্রধানমন্ত্রী, জাতীয় সংসদের স্পিকার-ডেপুটি স্পিকার, সরকারের মন্ত্রী, চিফ হুইপ, বিরোধীদলীয় নেতা, সংসদ উপনেতা, বিরোধীদলীয় উপনেতা, প্রতিমন্ত্রী, হুইপ, উপমন্ত্রী ও তাদের সমমর্যাদার কোনো ব্যক্তি, সংসদ সদস্য এবং সিটি করপোরেশনের মেয়র।
এবার সংশোধিত আচরণবিধিতে ওইসব ভিআইপির পাশাপাশি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানকে অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ ছিল কমিশনের। কমিশনের যুক্তি ছিল, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে প্রথমবারের মতো নির্বাচন হওয়ায় তাদেরকে ভিআইপিদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। পরে কমিশনের আইন সংস্কার কমিটির চূড়ান্ত সভায়, ভিআইপিদের সমমর্যাদা সম্পন্ন পদ নয় জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানরাÑএ যুক্তিতে সেখান থেকে সরিয়ে দিয়েছে। ফলে স্থানীয় সরকারের নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের প্রচারণায় অংশ নিতে বাধা নেই জেলা পরিষদের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের।
উল্লেখ্য, জেলা পরিষদ গঠন অনেক দিন হলেও গত বছর প্রথম নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি পায় এই স্তরের পরিষদ। তবে স্থানীয় সরকারে অন্যান্য নির্বাচন (সিটি করপোরেশন, উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ) রাজনৈতিক দল ও দলীয় প্রতীকে হলেও জেলা পরিষদ নির্বাচনটি হয়েছে নির্দলীয়ভাবে।
"