বাকৃবি প্রতিনিধি
৭ ঘণ্টা অনশনের পর সিট ফিরে পেলেন বাকৃবি শিক্ষার্থী
ছাত্রলীগের কর্মসূচিতে যোগ না দেওয়ায় বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে হল থেকে বের করে দেন নেতাকর্মীরা। এর প্রতিবাদে ইভা নামে ওই শিক্ষার্থী বেগম রোকেয়া হলের সামনে আমরণ অনশন শুরু করেন। সাত ঘণ্টা অনশনের পর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপে ইভাকে তার সিট ফিরিয়ে দেওয়া হয় বলে নিশ্চিত করেছেন বাকৃবির প্রক্টর ড. আতিকুর রহমান। এই ঘটনায় বেগম রোকেয়া হলের প্রভোস্ট ইসমত আরা বেগম জানান, আন্দোলনরত শিক্ষার্থী, অভিযুক্ত ছাত্রলীগ কর্মী ও শাখা ছাত্রলীগ নেতাদের নিয়ে আলোচনা করে ইভাকে তার সিট ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। বাকৃবির প্রক্টর ড. আতিকুর রহমান জানান, তার নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
হল থেকে বের করে দেওয়ার প্রতিবাদে ওই শিক্ষার্থীর অনশনের বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা হয়। পরে বিষয়টি তদন্তে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একটি কমিটি গঠন করে।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম আফসানা আহমেদ ইভা। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী এবং বেগম রোকেয়া হলে থাকেন। আফসানা অভিযোগ করেন, গত ৪ জানুয়ারি ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচিতে তিনি অংশ নেননি। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি তানিয়া আফরিনসহ কয়েক কর্মী তাকে হল থেকে গত সোমবার রাতে বের করে দেন। আফসানা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রফ্রন্টের একজন কর্মী হওয়ায় তিনি ছাত্রলীগের কর্মসূচিতে যোগ দেননি।
এ ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল মঙ্গলবার সকালে আফসানা আহমেদ বেগম রোকেয়া হলের সামনে আমরণ অনশনে বসেন। আফসানা আহমেদ বলেন, ছাত্রলীগের কর্মসূচিতে অংশ না নেওয়ার জের ধরে গত সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে তাকে কক্ষ থেকে বের করে দেওয়া হয়। এ সময় হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ইসমত আরা বেগম তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে (হলের সংস্কারকাজ চলায় সাময়িক ব্যবস্থা) অবস্থান করার কথা বললেও তিনি তা শোনেননি। তিনি রাতে হলের ফটকের সামনে অবস্থান করেন। পরে রাত ৪টার দিকে হলের ছাত্রফ্রন্ট সাধারণ সম্পাদক ইসরাত জাহানের কক্ষে চলে যান আফসানা।
বেগম রোকেয়া হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ইসমত আরা বেগম বলেন, সমস্যার কারণে ওই শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বিশ্ববিদ্যালয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে থাকার কথা বলি, কিন্তু তিনি তা শোনেননি।
অভিযোগের বিষয়ে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. সবুজ কাজী বলেন, একটি হলে এত মেয়ে থাকতে একজন মেয়েকে কেন বের করে দেওয়া হবে? ছাত্রফ্রন্ট তাদের একজন কর্মীকে দিয়ে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করেছে। যে অভিযোগ উঠেছে, তা সত্য নয়। ছাত্রলীগের অভিযোগের বিষয়ে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক ইসরাত জাহান বলেন, ছাত্রফ্রন্ট কোনো চক্রান্ত করেনি। কর্মসূচিতে না যাওয়ায় ছাত্রলীগ ওই শিক্ষার্থীকে হল থেকে বের করে দিয়েছে। এদিকে, গতকাল দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আতিকুর রহমান ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে তার কক্ষে দিয়ে এসেছেন। তিনি বলেন, ওই শিক্ষার্থী তার কক্ষে থাকবেন। হল প্রশাসনকে বিষয়টি তদন্ত করতে বলা হয়েছে। এরপর দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শিক্ষার্থীকে হল থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি তানিয়া আফরিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তার ব্যবহৃত মুঠো ফোনটিও বন্ধ।
"