এস এম মুকুল

  ১৫ আগস্ট, ২০১৭

স্মরণ

এক হিমালয়ের কথা বলছি

বিশ্বনন্দিত নেতা ফিদেল ক্যাস্ত্রোর বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে সেই উক্তিটি দিয়েই লেখাটির শুরু হোক। তিনি বলেছিলেন- ‘ও have not seen the Himalayas. But I have seen Sheikh Mujib. In personality and in courage, this man is the Himalayas’. ভারতের একজন বিচারপতি বঙ্গবন্ধুর ’৭০-এর নির্বাচনী ভাষণ ও ’৭১-এর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ শুনে বলেছিলেন, ‘শেখ মুজিবুর রহমান আব্রাহাম লিঙ্কনের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, মহাত্মা গান্ধীর অহিংস আন্দোলন আর লেনিনের বিপ্লবী চেতনার মূর্ত প্রতীক। তাই বিশবরেণ্য নেতা মহামতি লেনিন, মহাত্মা গান্ধী, নেহরু, চার্চিল, ক্যাস্ত্রো, চে গুয়েভারা, জর্জ ওয়াশিংটন, আব্রাহাম লিঙ্কন এবং জন কেনেডির মতো রাষ্ট্রনায়কদের মধ্যে অন্যতম একজন বিশ্বনেতা বঙ্গবন্ধু। কারণ তিনি বিশ্বের বুকে বিরল ব্যতিক্রম ইতিহাসের জš§দাতা। বিশ্ববাসী বাংলাদেশকে চিনেছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেশ হিসেবে। লন্ডনের গার্ডিয়ান পত্রিকা বঙ্গবন্ধুকে মুকুটহীন সম্রাট বলে যথার্থই আখ্যা দিয়েছিল। কারণ তিনি বঙ্গবন্ধু, বাঙালি জাতির জনক এবং সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতি ও বাংলাদেশের ত্রাণকর্তা। তিনি আর্কিট্যাক্ট অব বাংলাদেশ। গ্রাম-বাংলায় একটি কথা এখনো প্রচলিত আছে-এই বাংলাদেশ যতদিন থাকবে ততদিন তিনটি জিনিস চিরসত্য হয়ে থাকবে। এক. ইংরেজের শাসন, দুই. পাকিস্তানের শোষণ আর তিন. শেখ মুজিবের ভাষণ। হ্যাঁ, অতি সত্য কথা। ইংরেজের শাসন ক্ষমতা, পাকিস্তানিদের শোষণ বাঙালিরা কখনো ভুলবে না। আর এসব ইতিহাসকে পদদলিত করেছে- বিশ্বনন্দিত তেজোদীপ্ত বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ। স্বাধীন বাংলার সূত্রপাত হয়েছিল মূলত এই ভাষণকে কেন্দ্র করেই। এত শৈল্পিক নিপুণতা, শব্দ ও বাক্যের কারুকার্য, বোমারু তেজস্ক্রিয়তা, জয়ের উদ্দীপনা, সর্বোপরি মুক্তির জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করে লড়াইয়ের দিকনির্দেশনার ক্ষেত্রে এত জোরালো কৌশলের অবলম্বন পৃথিবীর আর কোনো ভাষণ, বক্তৃতা ও বিবৃতিতে পাওয়া যাবে না।

‘আমি প্রতিহিংসা-প্রতিশোধে বিশ্বাসী নই। আমি রবীন্দ্রনাথের মানসে গড়া এক কোমল হৃদয়ের বাঙালি। রবীন্দ্রনাথ শিখিয়েছেন, মানুষের প্রতি বিশ্বাস রাখ। আমি সে বিশ্বাস ও ভালোবাসা দিয়ে সব হৃদয়কে জয় করতে শিখেছি। আমি আমার মানুষকে ভালোবাসি।’ সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালির মুখেই কেবল এমন কথা মানায়। যার উদারতা অসংকোচে আঘাত হানে সব সংকোচতায়। তাই তিনি স্বাধীন জাতিসত্তার স্বপ্ন এঁকে দিতে পেরেছিলেন সাড়ে সাত কোটি বাঙালির হৃদয়ে। বাঙালিদের মনে জ্বালিয়ে দিয়েছিলেন আশার আলো। ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবন বলতে তার কিছুই ছিল না। দিন-রাত অবিরাম বাঙালি জাতির মুক্তির আন্দোলনই ছিল তার আনন্দ-বেদনা, স্বপ্ন-সাধনার সঙ্গী। রাজনৈতিক জীবনে তিনি কতবার গ্রেফতার হয়েছেন, কত বছর জেলে কাটিয়েছেন সে হিসাব শুধু আফসোসই বাড়াবে। একটি বাংলাদেশের জন্য, স্বাধীনতা অর্জনের জন্য, বাঙালি জাতির মুক্তির জন্য জেল-জুলুম ও অত্যাচার-নিপীড়ন এমনকি মৃত্যুর মতো বিষাদময় পরিস্থিতির জন্য তিনি যেন প্রতিমুহূর্তে প্রস্তুত ছিলেন। মুক্তিকামী বাঙালিদের জন্য যা কিছু করণীয় তার সবই যেন তাকে করতেই হবে। তাই শাসকদের কঠোর অপশাসনের তীক্ষè নজরদারিতেও তার কৌশলী নেতৃত্ব বিশ্বরাজনীতির ইতিহাসে চিরস্মরণীয় ও অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে আছে, থাকবে যুগ থেকে যুগান্তরে। বঙ্গবন্ধুর অসীম স্মরণশক্তি ছিল। একবার কাউকে দেখলে কোনো দিন তাকে ভুলতেন না। দলীয় কর্মীদের তিনি পরিবারের সদস্যের মতো মনে করতেন। নাম ধরে ডাকতেন। স্নেহের পরশ মাখা হাত বুলিয়ে কথা বলতেন। তিনি ছিলেন দুঃখী মানুষের নেতা। বাঙালির চিরকালের সেই কাক্সিক্ষত নেতাকে শেষ করে দিয়েছে এই জাতির কতিপয় বিপথগামী কুলাঙ্গার। তাতে কী? নেতা নেই- আছে তার স্বপ্ন, আদর্শ, চেতনা। এই চেতনার স্রোতে শত বাধা পেরিয়ে এগিয়ে যাবে বাঙালি। এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ।

পৃথিবীকে সভ্যতার আলোকবর্তিকায় নিয়ে যাওয়ার মতো এমন অনেক মহান নেতার আবির্ভাব হয়েছে, যারা জাতির আশা-আকাক্সক্ষার মূর্ত প্রতীক হয়ে মুক্তির ছক এঁকেছেন জাতির মননে। তেমনি একজন দক্ষিণ আফ্রিকার অবিসংবাদিত নেতা নেলসন ম্যান্ডেলা। যিনি কয়েক যুগ কারারুদ্ধ থেকেও ছিলেন কালো মানুষদের মুক্তি সংগ্রামের অন্যতম প্রেরণা। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধেও বঙ্গবন্ধু ছিলেন অন্যতম আদর্শ ও প্রেরণার উৎস। লিঙ্কন, গান্ধী, লুথারের মতো অবিচল আদর্শ নিয়ে বঙ্গবন্ধু আজীবন নিয়মতান্ত্রিক ও অহিংস রাজনীতির চর্চা করেছেন। তাকে নিয়ে কী লিখব আমি? তার কোন বিষয় নিয়ে লিখব? কোন উপাধিতে ভূষিত করব তাকে? যে উপাধিই যুক্ত করি তার নামের সঙ্গে- বরং নাম নয়, উপাধিই যেন ধন্য তার নামে! সব আলোকিত বর্ণমালা তার অমর কীর্তির কাছে ক্ষীণ হয়ে আসে। ব্যক্তিত্ববোধ, অসীম সাহস, অশেষ ত্যাগ, অকৃত্রিম দেশপ্রেম, মন্যুষত্ব আর চিরচেনা বাঙালিয়ানার কাছে সব যেন হার মানে। তাই কোনো দল-মতের আদর্শের অনুসারী না হলেও আমি তার আদর্শের অনুসারী পথিক। একটি কথা না বললেই নয়- জীবনে যতবার, যতখানে, যতভাবে দেখেছি তার মুখ; আমি বিস্মিত, বাকরুদ্ধ হয়েছি এই ভেবে যে, কী করে একজন মানুষ এত ক্ষমতাধর হয়েও এত সাধারণ হতে পারেন! অথবা এত সাধারণ হয়েও অসাধারণ ক্ষমতার উৎস হতে পারেন। কোন মায়াজালের মোহে একটা জীবনের শ্রেষ্ঠ সময়গুলো জেলে আর রাজপথের মিছিলে মিটিংয়ে কাটাতে পারেন। কতটা নির্লোভ চিত্তের অধিকারী হলে শাসকের দিকে অঙ্গুলি নির্দেশ তুলে বাঙালি জাতির জন্য মৃত্যুঝুঁকিকে সঙ্গী করে ঘুরতে পারেন। তিনি কি না করতে পারতেন! পাক শাসকদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কত ধরনের বিলাসী জীবন তিনি উপভোগ করতে পারতেন! অথচ সব মোহ এড়িয়ে একটি বাংলাদেশের জন্য, সাড়ে সাত কোটি বাঙালির জন্য এমন কী আছে, যা তিনি করেননি! জেল-জুলুম ও মৃত্যুঝুঁকির মুখেও তিনি অকুতোভয় সেনানি। একজন মানুষ কতটা মহানুভব হলে তার বুকে মুখে লালন করে পদ্মা মেঘনা যমুনার স্রোত? তার অবয়বে, হৃদ-মানসে যেন একটি বাংলাদেশের স্বপ্ন মানচিত্র। এসবই তার বেলায় সম্ভব। কারণ তিনি শেখ মুজিবুর রহমান। একবার মরেন দুইবার মরেন না...।

স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের মহান স্থপতি তিনি। তিনি সোনার বাংলার রূপকার। ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের কারাগার থেকে ফিরে এসে শূন্য থেকে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে জাতির চির কাক্সিক্ষত স্বাধীনতা অর্জনের পর যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গঠনে বহুমুখী কার্যক্রম শুরু করেন। কিন্তু পদে পদে বাধাগ্রস্তও হন। তারপর শুরু করেন স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার দ্বিতীয় মিশন। তাই তিনি উৎপাদন বৃদ্ধি, দুর্নীতি উৎখাত ও আত্মশুদ্ধির নির্দেশনা দেন জাতিকে। শিক্ষিত সমাজের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘শিক্ষিত সমাজের কাছে আমার একটা কথা- আমরা শতকরা কতজন শিক্ষিত লোক? আমরা শতকরা ২০ জন শিক্ষিত লোক। তার মধ্যে সত্যিকার অর্থে আমরা শতকরা ৫ জন শিক্ষিত। আপনাদের কাছে আমার একটা প্রশ্ন- আমি এই যে দুর্নীতির কথা বললাম, এসব কারা করে? আমার কৃষক দুর্নীতিবাজ? না। আমার শ্রমিক দুর্নীতিবাজ? না। তাহলে ঘুষ খায় কারা? ব্ল্যাক মার্কেটিং কারা করে? বিদেশে টাকা চালান দেয় কারা? এই আমরা যারা ৫ ভাগ শিক্ষিত। এই আমাদের মধ্যেই রয়েছে ঘুষখোর, দুর্নীতিবাজ। আমাদের চরিত্রের সংশোধন করতে হবে। আত্মশুদ্ধি করতে হবে। গরিব কৃষক শ্রমিক আপনাদের মাইনে দেয়। আমরা গাড়ি চড়ি এই টাকায়। ওদের সম্মান করে কথা বলুন। ইজ্জত করে কথা বলুন; ওরাই মালিক। ওদের দ্বারাই আপনার সংসার চলে।’ কী অবিশ্বাস্য, কী বিস্ময়কর! এমন অপ্রিয় সত্য কথা অসংকোচে অকপটে কোনো রাষ্ট্রনায়ক বলতে পারেন! তিনি পেরেছিলেন, কারণ তিনি জাতির পিতা। পিতা যেমন সন্তানদের শুধরে দিয়ে পথ নির্দেশ করেন, এর ব্যতিক্রম কিছু তা নয়। একজন রাষ্ট্রনায়কের এমন অভিভাবকসুলভ দৃষ্টিভঙ্গির উদাহরণ আর কী হতে পারে? একটি জাতির অভিভাবকত্বে দায় না থাকলে এভাবে অকপটে আত্মশুদ্ধির কথা কেউ বলতে পারে না। জাতির জনক ও স্বাধীন বাংলাদেশের রূপকার বলেই এটা সম্ভব হয়েছিল। কেননা তার শক্তি, দুর্বলতা, সাফল্য ও ব্যর্থতার মূল উৎসই ছিল দেশের মানুষের প্রতি তার ভালোবাসা। তিনি মানুষকে ভালোবেসেছিলেন বলেই কোটি জনতার বুকে আসন নিতে পেরেছিলেন।

২৬ মার্চ ১৯৭৫ জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণটি ছিল সোনার বাংলা গড়ার দিকনির্দেশনা। সেই ভাষণে তিনি বলেন, আমরা যখন ক্ষমতায় এলাম, দেশের ভার নিলাম, তখন দেশের রাস্তাঘাট যে অবস্থায় পেলাম- তা রিপেয়ার করার চেষ্টা করলাম। সেনাবাহিনী নাই, প্রায় ধ্বংস হয়ে গেছে। পুলিশ বাহিনীর রাজারবাগ জ্বালিয়ে দিয়েছিল। সেই অবস্থা থেকে কী করি নাই। আমরা জাতীয় সরকার গঠন করলাম। এক কোটি লোককে ঘরবাড়ি দিয়েছি। রাষ্ট্রের লোকদের খাওয়ানোর জন্য বিদেশ থেকে খাবার আনতে হয়েছে। পোর্টগুলো সচল করতে হয়েছে। দুনিয়ার বিভিন্ন জায়গা থেকে ২২ কোটি মণ খাবার এনে বাংলার গ্রামে গ্রামে দিয়ে মানুষকে বাঁচাতে হয়েছে। বন্যা হলো। মানুষ না খেয়ে কষ্ট পেল, হাজার হাজার লোক না খেয়ে মরে গেল। দুনিয়া থেকে ভিক্ষা করে আনলাম। পাঁচ হাজার সাতশ’ লঙ্গরখানা খুললাম মানুষকে বাঁচাবার জন্য।’ একজন রাষ্ট্র স্থপতির এত ব্যাখ্যা করে বলার ঘটনা পৃথিবীতে দুর্লভ। সেই ভাষণের এক পর্যায়ে তিনি বলেন- পাকিস্তানিরা আমার সম্পদ এক পয়সাও দিলো না। আমার বৈদেশিক মুদ্রার কোনো অংশ আমাকে দিল না। আমার গোল্ড রিজার্ভের অংশ আমাকে দিল না। একখানা জাহাজ, একখানা প্লেনও আমাকে দিল না। কেন্দ্রীয় সরকারের সম্পদ এক পয়সায়ও দিল না। বরং যাবার বেলায় পোর্ট ধ্বংস করল, রাস্তা ধ্বংস করল। শেষ পর্যন্ত কারেন্সি জ্বালিয়ে তারা বাংলাদেশকে ধ্বংস করতে চেয়েছিল। তিনি আরো বলেন, ‘ভিক্ষুক জাতির ইজ্জত নাই। আমি ভিক্ষুক জাতির নেতা হতে চাই না। আমি চাই বাংলাদেশের কৃষক ভাইদের কাছে, যারা সত্যিকারের কাজ করে। যারা প্যান্ট পরা-কাপড় পরা ভদ্রলোক তাদের কাছেও চাই- জমিতে যেতে হবে। ডাবল ফসল করুন। তাহলে কারো কাছে ভিক্ষুকের মতো হাত পাততে হবে না।’ কী চমৎকারভাবে অকপটে শিক্ষিত মানুষদের তিনি বলেছেন- ‘আপনাদের চরিত্রের পরিবর্তন হয় নাই। আপনি চাকরি করেন, আপনার মাইনে দেয়, সংসার চালায় গরিব কৃষক। ওদের সম্মান করে কথা বলুন, ওরাই মালিক।’ ২৬ মার্চ ১৯৭৫ এটাই ছিল জনসম্মুখে বঙ্গবন্ধু দেওয়া শেষ ভাষণ। ৭ মার্চের ভাষণে ছিল স্বাধীনতার ডাক আর ২৬ মার্চ শেষ ভাষণে ছিল সোনার বাংলা গড়ার ডাক। ১৯৭৫ সালের ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে রেসকোর্স ময়দানের জনসমুদ্রে দ্বিতীয় বিপ্লব কর্মসূচির ঘোষণা দেন বঙ্গবন্ধু। সেখানে তিনি বলেন, ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে সংগ্রাম, জনসংখ্যা প্রতিরোধ, উৎপাদন বৃদ্ধি এবং গ্রামে সমবায় খামার প্রতিষ্ঠা করা হবে। ৬৫ হাজার গ্রামে সমবায় খামারে অধীনে জমির মালিক একভাগ, শ্রমিক একভাগ এবং সার সেচ ইত্যাদির খরচ বহন করার জন্য সরকার একভাগ ফসল পাবে। এভাবে ভূমিহীন কৃষকরা জমির মালিক হবেন।’ ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প গড়ে উঠবে। উৎপাদন ও কর্মসংস্থান বাড়বে। গ্রামগুলো স্বনির্ভর হলে মানুষ শহরমুখী হবে না। শহরে মানুষের চাপ কমবে। কী অসাধারণ চিন্তা ছিল তার। ভাবা যায়, আরো কত আগে কোথায় থাকত বাংলাদেশ।

ইতিহাসের মূল লক্ষ্য স্বাধীন সমাজ ও জাতি গঠন। ভাগ্যক্রমে বাঙালি সমাজে এমন এক ক্ষণজন্মার আবির্ভাব হলো- যার কর্মচেতনা আর বোধ সেই সমাজ ও জাতিকে নবজন্মে রূপান্তর ঘটাল। বঙ্গবন্ধু সেই ক্ষণজন্মা মহাপুরুষ যার ব্যক্তিত্বে ও সত্তায় লালিত হয়েছে সবুজের বুকে উদীয়মান লাল সূর্যের পতাকা। তার বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর, দীর্ঘকায় দেহ সৌষ্ঠব্য, মাটির মায়া মাখানো সতেজ ভরাট মুখ যেন উদীয়মান সূর্যের প্রতিচ্ছবি। তার কণ্ঠস্বর বিস্ময়কর। ভাষণ যেন জ্বালাময়ী কবিতা। দেশের বাইরে গিয়েও তিনি বাঙালির পরিচয়ে বাঙালির অধিকারের ন্যায্য হিস্যার প্রসঙ্গ টেনেছেন অকপটে, অসংকোচে, নির্ভয়ে, বলিষ্ঠ ও সোচ্চার কণ্ঠে। সত্য বলার দ্ব্যর্থহীন ভাষাজ্ঞান ও স্পর্ধা যেন শুধু তাকেই মানায়।

লেখক : বিশ্লেষক, প্রাবন্ধিক ও কলামিস্ট

[email protected]

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist