reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২০

মোটরসাইকেলের বেপরোয়া চলাচলকে না বলুন

রাজধানী ঢাকায় রেজিস্টার্ড মোটরসাইকেলের সংখ্যা দশ লাখের কম নয়। আর এই মোটরসাইকেলের চালকরা তাদের বাহন নিয়ে চলাচলে থাকেন বেপরোয়া মানসিকতায়। ট্রাফিক সিগন্যাল কিংবা পথনির্দেশনা কোনো কিছুই মানছেন না তারা। এমনকি গাড়িসহ অবলীলায় উঠে যাচ্ছেন ফুটপাতে। পুলিশ বলছে, যানজটের অন্যতম কারণ মোটরসাইকেল। পুলিশের এমন ঢালাও মন্তব্য কতটা গ্রহণযোগ্য, তা নিয়ে তর্ক-বিতর্ক থাকলেও এ কথা সত্য যে, মোটরসাইকেল রাজধানীর যানজটকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। মোটরসাইকেলের চালকরা নিয়মনীতির কোনো তোয়াক্কা না করেই তারা তাদের গন্তব্যে চুটছেন। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। ট্রাফিকের কোনো সিগন্যাল ছাড়াই চলন্ত গাড়ির ভেতর দিয়ে এঁকে-বেঁকে চলাই এদের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। এই অভ্যাস ইতিবাচক নয় বলেই একে বদভ্যাস বলা যেতে পারে। আর তাদের এই বদভ্যাসের কারণে যানজটপূর্ণ মহানগরে যানজটের মাত্রা দিন দিন বেড়েই চলেছে।

এদিকে অনেক মোটরসাইকেলের চালকের কাছে ফুটপাতই যেন মূল সড়ক। এমন চলাচলের ওপর কয়েক বছর আগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলেন উচ্চ আদালত। কিন্তু সে নিষেধাজ্ঞা কোনো কাজে আসেনি। সড়কে সামান্য যানজট বা সিগন্যাল এড়াতে আইন ভেঙে ফুটপাতে উঠে যাচ্ছেন মোটরসাইকেলের চালকরা। এতে দুর্ঘটনা তো ঘটছেই, দুর্ভোগও পোহাতে হচ্ছে পথচারীদের। দায়িত্বে থাকা ট্রাফিক পুলিশও তাদের এই আচরণে অতিষ্ঠ। তাদের ভাষ্য মতে, অ্যাপসভিত্তিক রাইড সেবা দেওয়া চালকরাই নাকি বেশি নিয়ম ভাঙছেন। এখানেও বক্তব্যের সত্যতা নিয়ে বিতর্ক আছে। প্রকৃত সত্য হচ্ছে সড়কে ডিসিপ্লিন হারিয়ে গেছে। দেশে যে আইন আছে তা দিয়ে হারিয়ে যাওয়া ডিসিপ্লিন ফিরিয়ে আনা সম্ভবÑ যদি রক্ষকরা ভক্ষকের ভূমিকায় না গিয়ে রক্ষকের ভূমিকায় ফিরে আসেন। তবে ব্যতিক্রম যে নেই, তাও নয়। প্রকৃত অর্থে রাজধানী যেটুকু ডিসিপ্লিনের ওপর ভর করে আজও দাঁড়িয়ে আছে, তার সবটুকু কৃতিত্ব এসব ব্যতিক্রমের। তবে এরা সংখ্যাগরিষ্ঠে নয়। আমরা এই ব্যতিক্রমীদের উল্লম্ফন প্রত্যাশী।

এদিকে রাষ্ট্রের ব্যর্থতা তুলে ধরে আইশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আরো কঠোর হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, চারবারের বেশি নিয়মভঙ্গকারীকে কালো তালিকাভুক্ত করা যেতে পারে। একই সঙ্গে নতুন করে রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রেও ধীর গতিতে চলা অথবা আগামী ছয় মাসের জন্য রেজিস্ট্রেশন স্থগিত করা যেতে পারে। পুলিশের ভাষ্য মতে, আইনের প্রয়োগ হচ্ছে। পরিবর্তনও আসছে। তারা অনুরোধ করে বলেছেন, সবাই আইন মানুন। দুর্ঘটনা এড়াতে সময়ের কথা না ভেবে নিয়ম মেনে সড়কে চলাচল করলে দুর্ঘটনা কমবে। তাদের মতে, মোটরসাইকেল এখন ঢাকা মহানগরে ‘মরণযান’ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। তথ্য মতে, বড় গাড়ির চেয়ে মোটরসাইকেলের নিবন্ধন ঢাকায় প্রায় ২২ গুণ বেশি। সারা দেশে নিবন্ধিত মোটরসাইকেলের ২৫ শতাংশই ঢাকায়। দুই বছর আগে ঢাকায় প্রতিদিন গড়ে ৩১৫টি প্রাইভট কার নিবন্ধিত হতো। এখন তা নেমে এসেছে ৫০-এ। অন্যদিকে এখন প্রতিদিন মোটরসাইকেল নিবন্ধিত হচ্ছে ৪১৫টি।

আমরা মনে করি, এ সমস্যার সমাধান হওয়া দরকার এবং তা জরুরি ভিত্তিতেই। তা না হলে আগামী দিনে রাজধানীর চলাচল ব্যবস্থা মুখ থুবড়ে পড়তে পারে। তখন আর করার কিছুই থাকবে না। সুতরাং; সময় থাকতে সাবধান হওয়াটাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close