reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২১ ডিসেম্বর, ২০১৮

অপ্রতিরোধ্য গতিতে বাংলাদেশ

রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ভাষায়, ‘অর্থনীতিই সবকিছুর মূল চালিকাশক্তি’। যে পরিবারের অর্থনৈতিক শক্তি যত মজবুত; জীবনযাপনের ক্ষেত্রে সামাজিকভাবে সেই পরিবার ততটাই গ্রহণযোগ্য। একইভাবে যে রাষ্ট্র অর্থনৈতিক দিক থেকে যতটা শক্তিশালী, বিশ্বদরবারে রাষ্ট্রটি ততটাই মর্যাদার অধিকারী। এদিক থেকে বাংলাদেশ এখন বিশ্ব মানচিত্রে একটি মর্যাদাসম্পন্ন রাষ্ট্র।

স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে এটাই ছিল বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে সে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আজ সফলতার দাবি করতে পারে। স্বাধীনতার ৪৭ বছর পর বাংলাদেশ শুধু সেই ধ্বংসস্তূপ থেকে বেরিয়ে আসেনি, মেরুদন্ড সোজা করে দাঁড়িয়েছে। বিশ্বদরবারে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল। গত ৫ বছরে এ দেশের মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পেয়েছে, দেশজ উৎপাদন বেড়েছে, অবকাঠামো উন্নয়নেও ঈর্ষণীয় অগ্রগতি হয়েছে, অভাবনীয় উন্নতি হয়েছে শিল্পে। এ ছাড়া অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ, মাতৃ ও শিশুমৃত্যু হ্রাস, সামাজিক উন্নয়ন, নারীর ক্ষমতায়ন প্রশ্নে বাংলাদেশের অগ্রগতি যেন পার্শ্ববর্তী যেকোনো দেশের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। বরং বলা যায়, ক্ষেত্রবিশেষে অনেক উপরে।

ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের সাম্প্রতিক প্রতিবেদন বলেছে, ছেলে ও মেয়ে শিশুদের বিদ্যালয়ে ভর্তি, মাধ্যমিকে ছেলে ও মেয়েদের সমতা এবং সরকারপ্রধান হিসেবে কত সময় ধরে একজন নারী ক্ষমতায় রয়েছেনÑ এ তিন ক্ষেত্র এবং জন্মের সময় ছেলে ও মেয়েশিশুর সংখ্যাগত সমতার ক্ষেত্রেও বিশ্বের সব দেশের ওপরে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশের নাম। একই সঙ্গে নারী-পুরুষের সমতার ক্ষেত্রেও দক্ষিণ এশিয়ার সব দেশের স্থান করে নিয়েছে বাংলাদেশ। সার্বিক বৈশ্বিক র‌্যাঙ্কিং-এ বাংলাদেশের অবস্থান এখন ৪৮তম। নারী-পুরুষের সমতার ক্ষেত্রে এভাবে এগিয়ে যাওয়ার মূল রহস্য উপবৃত্তি। মেয়েদের এগিয়ে নেওয়ার প্রশ্নে উপবৃত্তির ভূমিকা অনস্বীকার্য। এখানেই শেষ নয়। বাল্যবিবাহের মাত্রা উল্লেখযোগ্য হারে না কমলেও অনেকটা কমে এসেছে। এ ক্ষেত্রে কিশোরীদের বলিষ্ঠ ভূমিকার কথা না বললেই নয়। এসব কিশোরীর ভূমিকা যদি অন্যান্য সেক্টরে সংক্রমিত করা যায়, তা হলে সার্বিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠবে বাংলাদেশ। রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের প্রশ্নে বিশ্বে নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশের অবস্থা প্রশংসনীয়।

আমরা মনে করি, অনেক বাধাবিপত্তি পেরিয়ে বাংলাদেশ আজ যে অবস্থানে এসে দাঁড়িয়েছে, তাতে দেশবাসী নির্দ্বিধায় আশাবাদী হতে পারে। এই অবস্থাকে ধরে রাখাই আজ একটি বড় চ্যালেঞ্জ। সুশাসন প্রতিষ্ঠা এবং দুর্নীতিকে দমন করা গেলে বাংলাদেশ অচিরেই বিশ্ব মানচিত্রে এক নতুন বিস্ময় হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে বলেই আমাদের বিশ্বাস। আমরা যেন আমাদের এই বিশ্বাসের প্রতি অনুগত থাকতে পারি। আর দেশপ্রেমই পারে বাংলাদেশকে এই উচ্চতায় পৌঁছে দিতে। কেননা দেশপ্রেম এবং দেশপ্রেমই একটি রাষ্ট্র এবং জাতির উন্নয়নের মূলমন্ত্র।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close