নৈতিকতার রামাদানে অনৈতিকতার চর্চা
নৈতিকতার পরীক্ষা। বিশ্বের প্রতিটি মুসলমানের কাছে মাসটি বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। এ মাসেই দিতে হয় পরীক্ষা। আমরা ইসলামি দর্শনের কতটা অনুসারী হতে পেরেছি রামাদানের চালুনিতেই তার পরীক্ষা দিতে হয়। এ মাসটিকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং পবিত্র হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। চিহ্নিত করার পেছনে যে কারণটিকে সর্বোচ্চ মর্যাদা দেওয়া হয়েছে তা হচ্ছে ‘সংযম’। সংযমই এই রামাদানের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ।
মানুষ যদি অভ্যাসের দাস হয়ে থাকে, তাহলে বলতে হয় এই এক মাস যদি কোনো মানুষ নিষ্ঠার সঙ্গে এই সংযম অনুশীলন করে থাকে, তাহলে তার মধ্যে কিছু না কিছু পরিবর্তন আসতে বাধ্য। এবং সে পরিবর্তন হবে মানবজীবনে এক ইতিবাচক পরিবর্তন। আর যদি এই সংযমের বিপরীতে অনুশীলন করা হয়, তাহলে তা হবে নেতিবাচক এবং ফলাফল হবে মানবকল্যান ও সমাজবিরোধী এক কর্মযজ্ঞ। যাকে ইসলাম কখনোই কোনো সময়ের জন্য সমর্থন করেনি।
বাংলাদেশ যদি একটি মুসলিম প্রধান দেশ হয়ে থাকে, তাহলে বলতে হয়, এখানে রামাদান মাসেই শুধু নয় মানুষের মাঝে সংযমের বিষয়টিকে কখনোই প্রাধান্য পায়নি। বিশেষ করে সমাজপতিদের মাঝে যা একেবারেই অনুপস্থিত থেকেছে। রামাদান আসতে খুব একটা দেরি নেই। অনেকটা নাকের ডগায় এসে গেছে। আর সেই সঙ্গে রামাদান শুরুর আগেই মুনাফালোভীরা সক্রিয় হয়ে উঠেছেন নিত্যপণ্যের বাজারে। আর এই মুনাফালোভীদের বেশির ভাগই ইসলামের অনুসারী। নিত্যপণ্যের দাম ইতোমধ্যেই বাড়তে শুরু করেছে। তবে এ অবস্থার অবসান চান ক্রেতারা। আসছে রামাদান মাসের আগেই স্থিতিশীল বাজার দেখতে চান তারা।
বিগত বছরের চেয়ে বেশ কয়েকটি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজারদর নিয়ে অস্বস্থিতে ক্রেতারা। নতুন বছরে সেইসব পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় তারা আতঙ্কগ্রস্ত। যদিও সাম্প্রতিক সময়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেছেন, রামাদান মাসে কোনো পণ্যের দাম বাড়ানোর সুযোগ থাকবে না। সরকার এ ব্যাপারটি কঠোর নজরদারিতে রাখবে। তারপরেও কথা থেকে যায়। ঘরপোড়া গরু সিঁদুরে মেঘ দেখলেই ভয় পায়। আমাদের অতীত খুব একটা ভালোকিছু আমাদের উপহার দিতে পারেনি। সবসময়ই আমরা এসব অসাধু ব্যবসায়ীদের কাছে জিম্মি থেকেছি। আমাদের এই জিম্মিদশা থেকে কেউই আমাদের রক্ষা করতে পারেনি। বর্তমান সরকার কতটুকু সফল হবেন, তা আমাদের জানা নেই। তবে আমাদের ইমানি পরীক্ষায় আমাদের ব্যর্থতার পরিমাণ কতটুকু তা পরিমাপ করা সম্ভব হবে এবং আমরা বলতে পারব সংযমের পরীক্ষায় আমরা কতটুকু উত্তীর্ণ হতে পেরেছি।
"