নিরাপদ সড়ক এবং...
‘কবে হে সড়ক তুমি হবে নিরাপদ’? এমন প্রশ্নের জবাব কখনো পাওয়া যায়নি। ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ বলতে বলতে মানুষ এক রকম হাঁপিয়ে উঠেছে। মানুষের চাওয়ার প্রতি গুরুত্ব দিয়ে যদি সঠিক পথ অনুসরণ করা হতো তাহলে এত দিনে দেশে নিরাপদ সড়ক-মহাসড়ক তৈরি করা সম্ভব হতো বলেই আমাদের বিশ্বাস। অনেক বিশ্বাসই তো অনেক দিন ধরে ওয়েটিং লিস্টের লাইনে দাঁড়িয়ে আছে। তার কতটি লাল অথবা নীল ফিতার দৌরাত্ম্যকে অতিক্রম করতে সক্ষম হয়েছে! সম্ভবত একটিও নয়। আমাদের বিশ্বাস বলছে, নিত্যপণ্যের দাম কমবে; লাল ফিতা বলছেÑনা। আমাদের বিশ্বাস বলছে, দুর্নীতিমুক্ত হবে বাংলাদেশ; কিন্তু নীল ফিতার দৌরাত্ম্য সেই দুর্নীতির গতিকে আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে। আমরা বলছি, নিরাপদ সড়ক চাই। সড়ক বলছেÑনা। আমাদের সে ক্ষমতা নেই, যে ক্ষমতা দিয়ে আমরা সড়ককে নিরাপদ করতে পারি। আমাদের চেয়ে সড়কে চলাচলকারী যানবাহন চালকদের ক্ষমতা অনেক। ওদের ক্ষমতা না কমা পর্যন্ত আমরা নিরাপদ হতে পারব না।
২০১৭ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৭ হাজার ৩৯৭ জন। পঙ্গুত্বের সংখ্যা ৭২২। এ ছাড়া বিভিন্ন পর্যায়ে আহত হয়েছেন ১৬ হাজার ১৯৩ জন। দুর্ঘটনার সংখ্যা ৪ হাজার ৯৭৯টি। তথ্যটি দিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। বিভিন্ন পত্রপত্রিকাকে অনুসরণ করে এ তথ্য তৈরি করা হয়েছে। এ তথ্যের বাইরেও যে অনেক অজানা তথ্য রয়ে গেছে তা এখানে সংযুক্ত হলে হতাহতের সংখ্যা আরো বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। বিগত দিনে সড়ককে নিরাপদ করতে সমাজের বিভিন্ন কর্নার থেকে বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি গ্রহণের কথা উচ্চারিত হলেও কোনো পরামর্শই কাজে আসেনি। সড়কে যাত্রীদের যেন যানবাহন চালকদের হাতে অনেকটা জিম্মি হয়েই চলাচল করতে হচ্ছে। আমরা মনে করি, এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসা খুবই জরুরি হয়ে পড়েছে। জরুরি হয়ে পড়েছে সড়ক চলাচল ব্যবস্থা ও আইনিব্যবস্থাকে সুসংহত করা। কঠোর থেকে কঠোরতর করে তার প্রয়োগ নিশ্চিত করা। আর এই প্রয়োগ নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ত্রুটিপূর্ণ গাড়ি সড়কে চলাচল করবে। চালকরা তাদের খেয়ালখুশি মোতাবেক সড়ক-মহাসড়ক ব্যবহার করবে আর সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারানোর সংখ্যা জ্যামিতিক হারে বাড়তেই থাকবে। যা কখনই আমাদের কাম্য হতে পারে না।
"