আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ট্রাম্পকে থামান, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ইরান
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যাতে ইরানের পরমাণু সমঝোতাকে অবজ্ঞা করতে না পারেন, সে জন্য ব্যবস্থা নিতে আন্তর্জাতিক সমাজের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ইরান। তেহরান বলেছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তিকেও বিদ্রƒপ করার চেষ্টা করছেন।
জাতিসংঘে নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত গোলাম আলি খোশরো এ সংস্থার পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ-বিষয়ক কমিটির এক সভায় বক্তৃতা রাখতে গিয়ে এ আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ইরানের পরমাণু সমঝোতা একটি আন্তর্জাতিক দলিল; কাজেই একক কোনো দেশের পক্ষে এটি বাতিল করা সম্ভব নয়।
ইরান ওই সমঝোতা মেনে চলছে কি না সে-সংক্রান্ত স্বীকৃতি দিতে সম্প্রতি অস্বীকার করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। এ সমঝোতা থেকে আমেরিকাকে বের করে নিয়ে যাওয়ারও হুমকি দেন তিনি। ইরানের বিরুদ্ধে আরো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে, নাকি এই সমঝোতা অনুযায়ী ইরানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হবেÑসে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে ট্রাম্প মার্কিন কংগ্রেসকে ৬০ দিনের সময় বেধে দিয়েছেন।
এ সম্পর্কে গোলাম আলি খোশরো বলেন, ইরানের শান্তিপূর্ণ পরমাণু কর্মসূচির ওপর আরোপিত সাময়িক সীমাবদ্ধতাকে স্থায়ী রূপ দেওয়ার যে আবেদন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, তা শুধু পরমাণু সমঝোতার চেতনা পরিপন্থী নয়, সেই সঙ্গে পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি বা এনপিটির সঙ্গেও সাংঘর্ষিক। ইরানের স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা বা আইএইএ যখন গত ১৩ অক্টোবর তার সর্বশেষ প্রতিবেদনেও পরমাণু সমঝোতার প্রতি ইরানের অবিচল থাকার কথা নিশ্চিত করেছে, তখন এই সমঝোতাকে ধ্বংস করার তৎপরতায় মেতে উঠেছে আমেরিকা। পরমাণু সমঝোতা নিয়ে আর কোনো আলোচনা হবে না উল্লেখ করে খোশরো বলেন, সমঝোতা অনুযায়ী ইরানের স্বার্থ রক্ষিত না হলে এটি থেকে ইরান নিজেই বেরিয়ে যাবে। ইরানের সঙ্গে সই করা আলোচিত পরমাণু চুক্তি থেকে সরে গেছে যুক্তরাষ্ট্র। চলতি বছর ক্ষমতায় আসার পর থেকেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলতে থাকেন, ‘এই চুক্তি ইতিহাসের অন্যতম বাজে সিদ্ধান্ত’। ইরান তাদের শর্ত মানছে না, সুতরাং যুক্তরাষ্ট্র এই চুক্তিতে আর থাকতে পারে না।
কিন্তু চুক্তি বাস্তবায়ন পর্যবেক্ষক আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) পক্ষ থেকে ইরান তাদের চুক্তির শর্ত মানছে বলা হলেও ট্রাম্প কারো কথা শুনছেন না। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে, ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রকে এই চুক্তিতে থাকার জন্য আহ্বান জানালেও গত সপ্তাহেই ট্রাম্প জানিয়ে দেন, শিগগির তিনি এ চুক্তি থেকে সমর্থন প্রত্যাহারের ঘোষণা দেবেন। ফলে কংগ্রেস বসবে চুক্তি লঙ্ঘন-পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণে, যেটা খোলাসা করে বললে, আবার নিষেধাজ্ঞা এবং তেহরান-ওয়াশিংটন ফের উত্তেজনা।
"