আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ১৪ জুন, ২০১৯

গরিবদের জন্য নিজের প্লেন বিক্রি করছেন মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট!

দেশের জনগণের স্বার্থে বছর তিনেক আগে কেনা একটি উড়োজাহাজ বিক্রি করে দেওয়ার ঘোষণা দিলেন মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেস ম্যানুয়েল লোপেজ ওব্রাদর। উড়োজাহাজ বিক্রির অর্থ কী কাজে লাগানো হবে, তাও জানিয়েছেন তিনি। দেশটির অন্যতম প্রধান সমস্যা অবৈধ অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে ব্যবহৃত হবে এই অর্থ।

ট্রাম্পের বাণিজ্য শুল্ক আরোপ করার হুমকি এড়াতে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি চুক্তি করেছে মেক্সিকো। চুক্তি অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন ঠেকাতে আরো বড় পরিসরে উদ্যোগ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে মেক্সিকো। চুক্তি হওয়ার কয়েক দিনের মাথায় প্লেন বিক্রির এ ঘোষণা দিলেন মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট।

অবশ্য ২০১৮ সালে নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর সময়ই বামপন্থি লোপেজ প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, প্রেসিডেন্টকে বহনের জন্য ব্যবহৃত উড়োজাহাজ বিক্রি করে সে অর্থ দেশের গরিব মানুষের জন্য ব্যয় করা হবে।

সে সময় প্রেসিডেন্ট জানিয়েছিলেন, ‘বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার’ উড়োজাহাজটির বাজারমূল্য ১৫ কোটি মার্কিন ডলার। ২০১৬ সালে বিমানটি প্রায় ২২ কোটি মার্কিন ডলার দিয়ে কেনা হয়েছিল। নিজ দেশে ‘অ্যামলো’ (নিজের নামের আদ্যাক্ষর এএমএলও) নামে পরিচিত মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী প্রচারণার সময় সমর্থকদের বলেছিলেন, প্লেন বিক্রি করে তিনি বাণিজ্যিক বিমানে যাতায়াত করবেন।

নির্বাচিত হওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই নিজের প্রতিশ্রুতিকে বাস্তবে রূপ দিতে যাচ্ছেন অ্যামলো।

বিক্রির অপেক্ষায় থাকা প্রেসিডেন্টের জেটটি কয়েক মাস ধরেই ক্যালিফোর্নিয়ার একটি ওয়্যারহাউসে রাখা আছে। এই প্লেনটি ছাড়াও সরকারি মালিকানাধীন আরো ৬০টি বিমান ও ৭০টি হেলিকপ্টার বিক্রি করছে মেক্সিকো।

আগেই বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্প্রতি হওয়া চুক্তি অনুসারে অবৈধ অভিবাসন বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেবে মেক্সিকো। বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্রে যেসব পণ্য রফতানি করবে মেক্সিকো, সেগুলোর ওপর উচ্চ শুল্কহার আরোপ করবে না ট্রাম্প প্রশাসন।

চুক্তির একটি ধারা অনুযায়ী, মেক্সিকো দেশটির দক্ষিণে গুয়াতেমালা সীমান্তে ন্যাশনাল গার্ড বসাবে। গত বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে লোপেজের কাছে এ চুক্তির বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়।

জবাবে মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘চুক্তি বাস্তবায়নে কেমন খরচ হবে, সেটা নিয়ে এটুকুই বলি, আমাদের পর্যাপ্ত বাজেট আছে। প্রেসিডেন্টের বিলাসবহুল উড়োজাহাজ বিক্রি করে সে অর্থের জোগান দেওয়া হবে।’

যুক্তরাষ্ট্রের তৃতীয় বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার রাষ্ট্র মেক্সিকো। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হুমকি দিয়েছিলেন, মেক্সিকো থেকে পণ্য আমদানিতে ৫ শতাংশ হারে শুল্ক বসানো হবে। কিন্তু গত সপ্তাহে স্বাক্ষরিত চুক্তির মাধ্যমে মেক্সিকো সেই শুল্ক আরোপ এড়িয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী, অভিবাসন রোধে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে গুয়াতেমালার সীমান্তে ছয় হাজার ন্যাশনাল গার্ড পাঠাচ্ছে মেক্সিকো। এছাড়া চুক্তির আরেকটি শর্ত হলো, মেক্সিকো পাড়ি দিয়ে যারা যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় চেয়েছে, তাদের মেক্সিকোতে ফিরিয়ে আনতে হবে।

গত ৫ জুন যুক্তরাষ্ট্রের কাস্টমস ও সীমান্ত সুরক্ষা বিভাগ জানিয়েছিল, মে মাসে গত এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ হারে মেক্সিকো থেকে অবৈধ অভিবাসী যুক্তরাষ্ট্রে অনুপ্রবেশ করেছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close