আন্তর্জাতিক ডেস্ক
পোলো আর পার্টির অক্সফোর্ডে বদল মালালার
পোলো খেলা থেকে শুরু করে রাতভর পার্টিতে হইচই। কখনো মাঝরাতে বন্ধুদের সঙ্গে বেরিয়ে ভারতীয় রেস্তোরাঁ থেকে খাবার প্যাক করে নেওয়া। বিয়ন্সে আর রিহানার গানের সঙ্গে কোমর দোলানো! অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটা মাস বদলে দিয়েছে তাঁর জীবন।
সর্বকনিষ্ঠ নোবেল শান্তি পুরস্কার জয়ী মালালা ইউসুফ জাইয়ের কলেজ জীবন এখন ঠিক এ রকমই। আর পাঁচটা সাধারণ পড়ুয়ার মতোই। একটি ব্রিটিশ ট্যাবলয়েডে সম্প্রতি ফলাও করে বেরিয়েছে মালালার এই নতুন জীবনের নানা দিক। মালালা বদলাচ্ছেন। একটা জিনিসই বদলায়নি শুধু। এখনো ২৪ ঘণ্টা সঙ্গে থাকেন সশস্ত্র দুই দেহরক্ষী। যে ঘরে তিনি থাকেন তার ঠিক পাশের ঘরে থাকেন আরো এক দেহরক্ষী। সালটা ছিল ২০১২। ১৫ বছরের কিশোরীর মাথায় গুলি করেছিল তালেবান জঙ্গিরা। পাকিস্তান থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ব্রিটেনে আনা হয় তাকে। সুস্থ হওয়ার পর পরিবারের সঙ্গে বার্মিংহামেই থাকা শুরু মালালার।
যে তালেবান নেতার নির্দেশে তার ওপরে হামলা হয়েছিল, মার্কিন ড্রোন হামলায় গত সপ্তাহে নিহত হয়েছে সেই ‘রেডিও মোল্লা’ তথা ফজলুল্লা। মালালার ঝুঁকি এখনো যায়নি। তালেবান মাঝে মধ্যেই হুমকি দেয় তাকে মেরে ফেলার।
গত বছরের শেষে অক্সফোর্ডে ভর্তি হন মালালা। পড়েন লেডি মার্গারেট হলে। আর পাঁচজন পড়ুয়ার মতোই ব্যস্ত তার জীবন। অংশ নিচ্ছেন হোলি, দীপাবলির মতো ভারতীয় অনুষ্ঠানেও। বিভিন্ন পার্টিরও পরিচিত মুখ তিনি। বন্ধুদের সঙ্গে পাব-এ যান। মেনুতে থাকে ফিশ অ্যান্ড চিপস। ট্যাবলয়েডটি অজস্র ছবি ছেপেছে তার। কখনো বন্ধুদের সঙ্গে নৈশভোজে মধ্যমণি তিনি। কখনো বা কালো ফ্রেমের চশমা চোখে এঁটে ক্লাসে বসে আছেন। তবে জিনস-টপ পরা মালালার মাথায় দোপাট্টা সব সময়। এমন ‘সেলিব্রিটি’ সহপাঠী পেয়ে অক্সফোর্ডের বাকি পড়ুয়ারাও খুশি। জানালেন, বিশ্বের তাবড় ব্যক্তিত্বের সঙ্গে পরিচিত মালালাকে বন্ধু হিসেবে পেয়ে তারা উচ্ছ্বসিত। সম্প্রতি কলেজের পার্টির আয়োজক হিসেবে মনোনীত হয়েছে মালালার নাম। প্রচার পুস্তিকায় বেরোচ্ছে তার ছবিও। এক ছাত্র জানালেন, পার্টিতে গেলেও মদ খান না মালালা। তবে বাকিরা খেলে তাতে আপত্তি করেন না। সম্প্রতি অক্সফোর্ডেরই এক দল মত্ত ছাত্র কলেজ চত্বরে হাঙ্গামা বাধানোয় প্রবল বিতর্ক তৈরি হয়। মদ খেয়ে কেউ যাতে ভবিষ্যতে এমন গোল না বাধায় সে দিকে এখন থেকেই খেয়াল রাখছেন নোবেলজয়ী। তবে পড়াশোনাকেও সমান গুরুত্ব দেন মালালা। তার বন্ধুরাই জানিয়েছেন সে কথা। এক বান্ধবী বললেন, ‘ওর দারুণ রসবোধ আর ভীষণ মিশুকে।’
"