আন্তর্জাতিক ডেস্ক
বিদায় ‘মর্ত্যরে নরক’!
সিরিয়ার পূর্ব ঘৌতা নরকে পরিণত হয়েছে। বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে সরকারি সেনাদের একের পর এক হামলায় আজ তা ধ্বংসস্তূপ। চার লাখ বাসিন্দার পূর্ব ঘৌতা এলাকাটি রাজধানী দামেস্কের প্রাণকেন্দ্র থেকে ১৫ কিলোমিটার পূর্ব দিকে অবস্থিত। ২০১৩ সালের মাঝামাঝি থেকে শহরটি সরকারবিরোধী বিদ্রোহীদের দখলে। তাদের বিরুদ্ধে ১৮ ফেব্রুয়ারি অভিযান শুরু করে আসাদের অনুগত সেনারা। এসওএইচআর এবং সেখানে দায়িত্বরত আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা জানান, সরকারি সেনারা সেখানে এখন ‘ডিভাইড অ্যান্ড কনকয়ার’ (ছোট ছোট অংশে ভাগ করে অভিযান চালানো) কৌশল প্রয়োগ করছে। তারা পুরো এলাকা তিনটি অংশে ভাগ করে। এগুলো হলো দুমা ও এর পাশের এলাকা, পশ্চিমের হারাসতা শহর ও দক্ষিণের বাদবাকি অংশ।
ঘৌতাবাসীরা অবরুদ্ধ অবস্থায় ৫ বছর অতিক্রান্ত করছে। রাশিয়া ও আসাদ সরকারের জোট বাহিনীর একের পর হামলায় সেখানে সাধারণ মানুষের লাশের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। চারদিকে ধ্বংস আর লাশ। মর্ত্যরে নরক হয়ে উঠেছে এ শহর। জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্টেনিও গুতেরেস নিজেই এ শহরকে ‘হল অন আর্থ’ বলে অভিহিত করেছেন। সম্প্রতি ঘৌতার দুটো বিদ্রোহী বাহিনী নিজেদের প্রত্যাহারে রাজি হলে সেখানে মৃত্যুর আওয়াজ থেমেছে। এখন সেখানে হাজার হাজার বিদ্রোহী সেনা আর সাধারণ মানুষ নরক ছেড়ে পালাচ্ছেন। গত কয়েক সপ্তাহে সরকারি বাহিনী সেখানে হামলার মাত্রা বৃদ্ধি করে। শেষ পর্যন্ত বিদ্রোহীরা নিজেদের প্রত্যাহারের চুক্তিতে উপনীত হলে তারা এবং তাদের পরিবার এই যন্ত্রণাকাতর অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে পারছে।
এক রিপোর্টে বলা হয়, গত ফেব্রুয়ারি থেকে হামলায় এখন পর্যন্ত সেখানে ১৬০০ সাধারণ মানুষের মৃত্যু ঘটেছে। এখন দুমা শহরের সামান্য এক অংশ বিদ্রোহীদের দখলে রয়েছে। ইতিমধ্যে চিকিৎসা নিচ্ছেন এমন কিছুসংখ্যক মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। যারা এখনো সেখানে অবস্থান করছেন কিংবা করবেন তাদের ভবিষ্যত অনিশ্চিত। ওদিকে, কাছের রাজধানী শহর দামেস্কাসের মানুষ উদ্যাপন শুরু করছেন। তাদের আশা, এই চুক্তির মাধ্যমে অন্তত বিদ্রোহীদের মর্টার হামলার ইতি ঘটবে। পূর্ব ঘৌতার নারী-শিশুরা এই নরক থেকে মুক্তির পথ পেয়েছে। নরককে বিদায় জানাচ্ছে তারা।
"