নিউইয়র্ক প্রতিনিধি
যুক্তরাষ্ট্রে মিজানুরের খুনিকে ধরতে পারেনি পুলিশ
যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেস সিটির এক গ্যাস স্টেশনে মিজানুর রহমান (৩২) নামে এক বাংলাদেশি কর্মীকে গুলি করে হত্যার ঘটনার দুদিন পেরিয়ে গেলেও ঘাতককে শনাক্ত করতে পারেনি সেখানকার পুলিশ। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৩টায় ‘লিটল বাংলাদেশ’-সংলগ্ন ভারমন্ট স্ট্রিট ও লসফেলিজ বুলেভার্ডে ‘শেভরন গ্যাস স্টেশনে’ মিজানুর রহমানকে গুলি করে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। নিহত মিজানুর রহমানের (৩২) বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জের চৌধুরীপাড়ায়। রাতে ওই গ্যাস স্টেশনে কাজ করে এমবিএ পড়ছিলেন তিনি।
স্থানীয় গোয়েন্দা পুলিশের কর্মকর্তা মেগান এগুইলার সাংবাদিকদের জানান, সেদিন রাতে মিজানুরের দায়িত্ব ছিল ক্যাশ কাউন্টারে। এক ব্যক্তি এসে পিস্তল দেখিয়ে তাকে ক্যাশ বাক্স খালি করে দিতে বলে। মিজান তা করার পর সেই ব্যক্তি ক্যাশ বাক্সের আশপাশে খুঁজে সব অর্থ নেয়। এরপর মিজানের দিকে কয়েক রাউন্ড গুলি ছুড়ে গাড়ি নিয়ে চলে যায়। গুলিবিদ্ধ মিজান ওই অবস্থায় ৯১১-এ ফোন করেন এবং টহল পুলিশ ও অ্যাম্বুলেন্স এসে অল্প সময়ের মধ্যে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু জরুরি বিভাগে নেওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যে মিজানের মৃত্যু হয়।
লস অ্যাঞ্জেলেস পুলিশ বলছে, খুনিকে শনাক্ত করতে সব রকমের চেষ্টা চালাচ্ছেন তারা। আশপাশের ৩২টি সিসিটিভির ভিডিও পরীক্ষা করা হচ্ছে।
ওই গ্যাস স্টেশনের আরেক বাংলাদেশি কর্মী জানান, মিজান ছিলেন মা-বাবার একমাত্র ছেলে। তার বাবা মো. রফিক মিয়া একজন অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক। আর মা সুলতানা বেগম একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ান।
লস অ্যাঞ্জেলেসে বাংলাদেশের কনস্যুলেটের কনসাল সাদিপ্ত আলম বলেন, ‘আমরা পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। খুনি যাতে দ্রুত গ্রেফতার হয়, সে আহ্বান জানানো হয়েছে।’ তিনি জানান, ময়নাতদন্ত ও অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে মিজানের মরদেহ হস্তান্তর করবে যুক্তরাষ্ট্রের কর্তৃপক্ষ। তারপর বাংলাদেশ দূতাবাসের পক্ষ থেকে মিজানুরের মরদেহ গ্রামের বাড়িতে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হবে।
লস অ্যাঞ্জেলেস সিটির বাংলাদেশি কমিউনিটি লিডার মোমিনুল হক বাচ্চু জানান, চট্টগ্রামের ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে বিবিএ করার পর এমবিএ পড়ার জন্য ২০১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে আসেন মিজানুর রহমান। তার মৃত্যুতে বাংলাদেশি কমিউনিটিতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। প্রবাসী বাংলাদেশিরা বুধবার লস অ্যাঞ্জেলেসের ওই গ্যাস স্টেশনের সামনে জড়ো হয়ে মিজানের ঘাতককে দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানান।
"