আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ২০ এপ্রিল, ২০১৯

উইকিলিকসের প্রতি আগ্রহ ছিল জঙ্গি নেতা লাদেনের!

মার্কিন প্রসিকিউটররা অভিযোগ করেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ‘ক্ষতির কারণ’ হবে জেনেও পেন্টাগনের সামরিক নথি ফাঁস করেছিলেন জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ ও ব্র্যাডলি ম্যানিং। তাদের দাবি, পেন্টাগনের গোপন নথিতে থাকা সামরিক নকশা ও কৌশল ফাঁস করে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য জঙ্গিবাদী হামলার আশঙ্কা ও নিরাপত্তাজনিত ঝুঁকি সৃষ্টি করেছিলেন অ্যাসাঞ্জ ও তার অনুসারীরা। এ ব্যাপরে আল কায়দা নেতা ওসামা বিন লাদেনের ব্যাপক আগ্রহ ছিল।

জানা গেছে, দুই বছর আগে আদালতে অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিলের সময় এর সমর্থনে দেওয়া লিখিত বিবৃতিতে প্রসিকিউটররা অভিযোগ করেন, আল কায়েদা নেতা ওসামা বিন লাদেনও উইকিলিকসের প্রতি আগ্রহী ছিলেন। তিনি আ্যাসাঞ্জের এ কর্মকান্ড মনে-প্রাণে সমর্থন করতেন। আলজাজিরার এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ওই হলফনামা গত সোমবার নতুন করে উন্মোচিত হয়েছে। সেখানে প্রসিকিউটররা উল্লেখ করেছেন, ফাঁস হওয়া মার্কিন সামরিক নথিতে আফগানিস্তান ও ইরাক যুদ্ধ সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ছিল।

অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র যে নতুন করে আইনি পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে, তা জানা গিয়েছিল সেই গত বছর ডিসেম্বরেই। ২০১৮ সালের নভেম্বরে ভার্জিনিয়ার আলেকজান্দ্রিয়া জেলা আদালতে উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে অভিযোগ গঠনের নথি ভুল করে ফাঁস করে ফেলেন প্রসিকিউটররা। অ্যাসাঞ্জ গ্রেফতারের পর আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ গঠনের ঘোষণা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। জানা যায়, নতুন অভিযোগটি আনা হয়েছে দুটি ধারায়। একটি হলো ‘যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ বা প্রতারণা’ সংক্রান্ত ধারা, অপরটি কম্পিউটার জালিয়াতির মাধ্যমে ষড়যন্ত্র’ বিষয়ক ধারা ১০৩০। সোমবার আদালতে সেই মামলার এক পুরোনো নথি উন্মোচিত হয়েছে। রয়টার্স ওই নথির সূত্রে জানিয়েছে, ২০১৭ সালের ২১ ডিসেম্বর ভার্জিনিয়ার আলেকজান্দ্রিয়া শহরের ফেডারেল আদালতে অভিযোগপত্রের সমর্থনে ওই লিখিত বিবৃতি দিয়েছিলেন প্রসিকিউটররা। প্রসিকিউটরদের ভাষ্য অনুযায়ী, ফাঁস হওয়া আফগান যুদ্ধের নথিগুলোর মধ্যে ছিল, জঙ্গিদের ইমপ্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইসের নকশা ও হামলা সংক্রান্ত তথ্য এবং হাতে তৈরি এসব বিস্ফোরক ডিভাইসের বিরুদ্ধে মার্কিন ও মিত্র জোটের পাল্টা ব্যবস্থা ও সীমাবদ্ধতার বিস্তারিত। প্রসিকিউটররা ওসামা বিন লাদেনের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, লাদেন পাকিস্তানে যে আস্তানায় লুকিয়ে ছিলেন সেখানে অভিযান চালিয়ে একটি চিঠি পেয়েছিল মার্কিন বাহিনী। ওই চিঠি থেকে জানা গিয়েছিল, উইকিলিকসে প্রকাশিত পেন্টাগন নথিগুলোর অনুলিপির প্রতি আগ্রহী ছিলেন আল কায়েদা নেতা।

ব্যারি পোলাক নামে অ্যাসাঞ্জের এক আইনজীবী বলেন, ‘তথ্য প্রদান করতে সূত্রকে উৎসাহ প্রদান এবং তাদের পরিচয়ের সুরক্ষা দিতে প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হলো সব সাংবাদিকের সাধারণ একটি প্রবণতা। হলফনামায় কোনো নতুন তথ্য নেই। ওবামা প্রশাসন যখন অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগ দায়েরের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল এবং একে প্রথম সংশোধনীর সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে বিচারিক দফতর থেকে যখন রায় দেওয়া হয়েছিল তখন এ হলফনামাটি পাওয়া যায়নি।

২০১০ সালের জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত আফগান যুদ্ধের ৯০ হাজার, ইরাক যুদ্ধের ৪ লাখ, গুয়ানতানামো বে’র ৮০০ বন্দির জবানবন্দি ডাউনলোড করেন ম্যানিং। যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ, অ্যাসাঞ্জের প্ররোচনা ও সহায়তা পেয়েই সে বছরই ৮ মার্চ প্রতিরক্ষা দফতরের কম্পিউটার পাসওয়ার্ড হ্যাক করেছিলেন ম্যানিং।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close