কক্সবাজার প্রতিনিধি

  ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮

কক্সবাজারে পর্যটকের ঢল ব্যবসায়ীদের মুখে হাসি

এবারের একুশে ফ্রেব্রæয়ারির ছুটির সঙ্গে মাঝে এক দিন ছুটি নিয়ে সাপ্তাহিকসহ চার দিনের ছুটি ভোগ করার সুযোগ পেয়েছেন অনেকে। এই লম্বা ছুটিতে মানুষ যান্ত্রিকজীবন থেকে একটু স্বস্তি পেতে ছুটেছেন নানা জায়গায়। ব্যস্ততা পেছনে ফেলে দেশের বৃহত্তম পর্যটন নগরী কক্সবাজারে ছুটে এসেছেন অন্তত পাঁচ লাখ পর্যটক। ২১ ফেব্রæয়ারির দিন থেকে পর্যটকরা কক্সবাজারে অবস্থান করছেন। এতে কক্সবাজারের পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে দেখা যাচ্ছে উপছে পড়া ভিড়। এই বিপুল পর্যটকের আগমনে কক্সবাজারের পর্যটন ব্যবসা জমজমাট হয়ে উঠেছে। হোটেল-মোটেলে কোনো আসন খালি নেই। দোকানে বেচাকেনা ভালো হওয়ায় ব্যবসায়ীরা অত্যন্ত খুশি।

জানা গেছে, কক্সবাজার পর্যটন জোনের চার শতাধিক আবাসিক হোটেল-মোটেল, গেস্ট হাউস ও রিসোর্টের সব কক্ষ ভাড়া হয়ে গেছে। আবাসিক হোটেলগুলোতেও আর কোনো আসন খালি নেই। ২১, ২২ ও ২৩ ফেব্রæয়ারি অনেক পর্যটক রুম না পেয়ে গাড়িতেই রাত কাটিয়েছেন। এমনকি সমুদ্র সৈকত ও রাস্তাতেও রাত কাটিয়েছেন অনেকে। অনেকে আবার রুম না পেয়ে সফরই বাতিল করেছেন। পর্যটকের চাপে যানবাহন, রেস্তোরাঁসহ অন্যান্য স্থানে দেখা যাচ্ছে প্রচন্ড ভিড়। সমুদ্র সৈকত ও পর্যটন জোনে দেখা দিয়েছে মোবাইল নেটওয়ার্ক বিপর্যয়। কলাতলীতে দেখা দিয়েছে তীব্র

যানজট। এতে পর্যটকসহ স্থানীয়রাও পড়েছেন বিপত্তিতে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কক্সবাজারে আসা বিপুল সংখ্যক পর্যটক কক্সবাজারের সমুদ্রসৈকত, পাথুরে বিচ ইনানী, হিমছড়ি, দরিয়ানগর, মহেশখালীর আদিনাথ, প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন ও ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কসহ জেলার বিভিন্ন পর্যটন স্পটে কানায় কানায় ভরে উঠেছে। এতে যানবাহনে সংকট চলছে। সংকট দেখা দিয়েছে মহেশখালীর নৌপথে। আর এই সুযোগে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে অভিযোগ পেয়ে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন তৎপর হয়ে উঠেছে। গত বৃহস্পতিবার ৬নং ঘাটে অভিযান পরিচালনা করেন জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত। অতিরিক্ত ভাড়া ও যাত্রী হয়রানির অভিযোগ জরিমানা করা হয়েছে।

ফেনী থেকে আসা আহাদ হোসেন ও তার স্ত্রী শারমিন আকতার জানান, হোটেলে থাকার জায়গা মেলেনি। অনেক ঘোরাঘুরি করে স্থানীয় এক সংবাদকর্মীর সহযোগিতায় কোনোমতে একটি রুম ম্যানেজ করতে সক্ষম হই।

এদিকে, একুশে ফেব্রæয়ারি উপলক্ষে কক্সবাজার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারসহ বড় বড় হোটেলগুলোতে আলোকসজ্জা ও রাস্তার দুই পাশে আলোকসজ্জা করা হয়। পর্যটকরা একে উপভোগ করেছেন। পর্যটকদের নিরাপত্তায় পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখে জেলা পুলিশ ও ট্যুরিস্ট পুলিশ।

কক্সবাজার হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম সিকদার বলেন, ‘অন্তত এক মাস পর্যটনে চরম মন্দা গেছে। কিন্তু মহান ভাষা দিবসের ছুটিতে বিপুল সংখ্যক পর্যটক এসেছেন। এতে শহরের চার শতাধিক আবাসিক হোটেল বুকিং হয়ে যায়। রুম না পেয়ে অনেকে আসতেই পারেনি। আশানুরূপ পর্যটক আগমণে আমরা খুশি।’

কক্সবাজার লাবণী পয়েন্টের বিচপার্ক মার্কেটের ব্যবসায়ী মাহমুদুল হক বলেন, ‘কক্সবাজারে বেড়াতে আসা পর্যটকরা বেড়ানোর পাশাপাশি কেনাকাটাও করছেন। তারা পরিবারের সবার জন্য কমবেশি কেনাকাটা করছেন। এতে সব ধরনের দোকানে বেচাকেনা ভালো হচ্ছে।’

কক্সবাজার ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশনের (টুয়াক) প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিলটপ ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলসের মালিক এস এম কিবরিয়া খান বলেন, ২০, ২১, ও ২২ ও ২৩ ফেব্রæয়ারি পর্যন্ত কক্সবাজারে অন্তত পাঁচ লাখ পর্যটক অবস্থান করেছেন। এসব পর্যটক সেন্টমার্টিনসহ সব পর্যটন স্পটে ঘুরে বেড়িয়েছেন।

কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রায়হান কাজেমী বলেন, ‘এবারের একুশের প্রাক্কালে রেকর্ড সংখ্যক পর্যটক কক্সবাজারে এসেছেন। তাদের নিরাপত্তার জন্য ট্যুরিস্ট পুলিশ রাত-দিন ২৪ ঘণ্টাই নিয়োজিত রয়েছে। সব পর্যটন স্পটে অতিরিক্ত নিরাপত্তা জোরদার রয়েছে। কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।’

জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন জানান, পর্যটকদের নিরাপত্তাসহ সব ধরনের সেবা প্রাপ্তি বিষয়টি জেলা প্রশাসন তদারক করেছে। পর্যটন সংশ্লিষ্ট সকলকে এ ব্যাপারে আগে থেকে সতর্ক করে দেওয়া হয়। তারা সেভাবে পর্যটকদের সেবা দিচ্ছে। দুয়েক জায়গা অভিযোগ পাওয়ায় সেখানে আমরা অভিযান চালিয়ে শাস্তির ব্যবস্থা করেছি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist