গৃহকর্মী নির্যাতন, গ্রেপ্তার গৃহকর্ত্রী
রাজধানীর শ্যামপুরে লাবনী নামে ১২ বছরের গৃহকর্মীকে নির্যাতনের অভিযোগে গৃহকর্তী মারিয়া সুলতানাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার দুপুরে নির্যাতনের খবর পেয়ে নতুন আলী বহরের বিক্রমপুর হাউজিংয়ের ছয় তলা একটি বাড়ির ফ্ল্যাট থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করে কদমতলী থানা পুলিশ। শিশুটিকে চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেলে কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ওই বাড়ির বাসিন্দা ও পুলিশ সূত্র জানায়, ওই বাসায় দুই বছর ধরে কাজ করে শিশুটি। কাজে যোগ দেয়ার পর থেকেই তার ওপর নির্যাতন চালাতেন মারিয়া। সবশেষ শিশুটির গায়ে গরম পালি ঢেলে নির্যাতন করা হয়। আপনজনের সঙ্গে যোগযোগ না থাকায় সব নির্যাতন সে সহ্য করেছে। শিশুটিকে নির্যাতনের বিষয় গৃহকর্তা তাওহিদকে অনেকবার জানিয়েছে প্রতিবেশিরা। কিন্তু তিনি কোন ব্যবস্থা নেননি। শিশুটিকে মারধর করার সময় প্রতিবেশিরা বাধা দিলে উল্টো তাদের ওপর চড়াও হতেন মারিয়া।
শিশুটি জানায়, তার গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জের ভৈরবের লালকুটিতে। শিশুটির মা অন্ধ থাকায় বাবা নাছির আরেকটি বিয়ে করে গ্রামেই থাকেন। অন্ধ মা তার বাবার বাড়িতে থাকেন। প্রতি মাসে ১ হাজার টাকা বেতনে শিশুটিকে এক স্বজনের মাধ্যমে ওই বাসায় কাজে দেয়া হয়। মাস শেষ হতে না হতেই শিশুটির বাবা টাকা নিয়ে যান।
নির্যাতনের বর্ণনা দিয়ে শিশু লাবনী বলে, চুলায় ভাত রান্না করছিলাম। ভাত একটু বেশি নরম হয়ে যায়, তাই গরম ভাতের পাতিল আমার মাথায় ঢেলে দিয়েছে। পানি গরম করে শরীরে ঢেলে দিয়েছে।
মেয়েটির হাত ও গলা ঝলসে গেছে। প্রায় প্রতিদিনই মারধর করতে গিয়ে গলা চেপে ধরায় শিশুটির গলায় নির্যাতনের দাগ দেখা গেছে।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবারও তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিশুটিকে গরম পানি ঢেলে নির্যাতন করার সময় তার চিৎকারে ওই বাড়ির বাসিন্দারা ছুটে এসে শিশুটিকে উদ্ধার করে পুলিশে খবর দেন। খবর পেয়েই দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুলিশ, উদ্ধার করে শিশুকে, গ্রেপ্তার হন গৃহকর্তী।
কদমতলী থানার ওসি আব্দুল জলিল বলেন, নির্যাতনের খবর পেয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করে ঢামেকে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় গৃহকর্তী মারিয়া সুলতানাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পিডিএসও/রিহাব