জিন্নাতুল ইসলাম জিন্না, লালমনিরহাট
ভোলা দা’র বয়স ২ বছর, দাম কতো?
দুই বছর ৪ মাস বয়সের ভোলা দা'র দাম দুই লাখ টাকা হাঁকাচ্ছেন মালিক আবুল বাশার বাদশা। বাড়ির পোষা এ গরুটি ক্রয় করতে বিভিন্ন জায়গা থেকে বেপারিরা ভির জমাচ্ছেন বাদশার বাড়িতে।
লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার ভেলাবাড়ি ইউনিয়নের তালুক দুলালী গ্রামের স্কুল শিক্ষক আবুল বাশার বাদশা পরম যত্নে বড় করছেন এ গরুটি। আদর করে নাম রেখেছেন 'ভোলা দা'। ভোলা দা বলে ডাকলে সাড়াও দেয় গরুটি। খাদ্য সামনে থাকলেও মনিবের অনুমতি ছাড়া মুখও লাগায় না। খাদ্য দেয়ার পর বাদশা যখন বলবে-ভোলা দা খেয়ে নাও। তখন শুরু হবে তার খাওয়া। মালিক বাদশার মোটর সাইকেলের শব্দ পেলে বাড়ির গেট খুলে দিতে চিৎকার দেয় ভোলা দা।
মালিকের অনুপস্থিতিতে কারো শক্তি নেই ভোলা দা'র ঘরে প্রবেশ করে। তবে মালিকের সামনে কেউ তার পিটে উঠলেও মানা নেই ভোলা দা'র। সকালে ঘুম থেকে উঠেই ভোলার খাবার তৈরি করে স্কুলে যান। আবার ফিরে এসে ভোলা দা'র পরিচর্যা করেন স্কুল শিক্ষক বাদশা।
ভোলা দা'র মালিক আবুল বাশার বাদশা জানান, বাড়িতে থাকা একটি গাভি গত ২০১৫ সালের ৯ এপ্রিল ভোলা দাকে প্রসব করে। এরপর এর নাম রাখা হয় ভোলা দা। এক বছর অন্য গরুর সাথে থাকলেও গত বছর ঈদুল আযাহার পরে ভোলা দাকে আলাদা ঘর দেয়া হয়। ভোলা দা'র জন্য রয়েছে সৌর পাখা ও বাতি। খাবারও দিতে হয় সময় মতো। সকাল ৬টা বাজলেই ভোলা দাকে সকালের খাবার দিতে হবে। কোন কারণে বিলম্ব হলে চিৎকার শুরু করে। প্রতিদিন সকালেই হয় তার গোসল। এসব গরু আদর ভালবাসাকে বেশি পছন্দ করে যোগ করেন মালিক আবুল বাশার বাদশা।
ভোলা দা'র খাদ্য তালিকায় রয়েছে খড়, কাঁচা ঘাস, ধানের গুড়া, ভুষি, ফিট, খৈল ও পানি। কোন ইনজেকশন পায় নি ভোলা দা। খাদ্য খাওয়াতে খরচ হয়েছে প্রায় এক লাখ টাকা। গো খাদ্যের দাম বেশ চড়া হওয়ায় গরু পালনে এখন খরচ বেড়েছে।
এবার ঈদের বাজারে বিক্রি হবে আদরের ভোলা দা। তাই বেপারিরা ক্রয় করতে ভির জমাচ্ছে ওই বাড়িতে। দাম হাঁকানো হয়েছে দুই লাখ টাকা। প্রায় ৮মণ ওজনের ভোলা দা'র দাম উঠেছে এক লাখ ৩০/৪০ হাজার টাকা। তবে এক লাখ ৬০/৭০ হাজার হলে ক্রেতার হাতে ভোলা দাকে তুলে দিবেন বাদশা। ক্রেতা ছাড়াও বড় গরু দেখতে অনেকেই প্রতিদিন ভির জমাচ্ছেন ওই বাড়িতে। ভোলা দাকে দেখে যারা গরু পালনের কৌশল জানতে চান। তাদেরকে পরামর্শ দেন বাদশা।
ভারতীয় গরুতে বাজার ভরে যাওয়ায় এবার দেশি গরুর খামাড়িরা বিপাকে পড়েছেন। ভারতীয় গরু না এলে ভোলা দা’র দাম দুই লাখ টাকা ছাড়িয়ে যেত বলেও দাবি মালিক আবুল বাশার বাদশা’র।
পিডিএসও/রিহাব