বিটন চৌধুরী, খাগড়াছড়ি

  ১৭ জানুয়ারি, ২০২৪

ভিডিও দেখে কৃষি উদ্যোক্তা চার বন্ধু 

ছবি: প্রতিদিনের সংবাদ

খাগড়াছড়িতে অনলাইনে ভিডিও দেখে কৃষি ফার্ম গড়ে তুলে সফল হয়েছেন চার বন্ধু। এখন উৎপাদিত তরমুজ ও বিভিন্ন সবজি অনলাইন ও স্থানীয় বাজারে বিক্রি করছেন তারা। উদ্যোক্তারা হলেন, মো. জামাল হোসাইন, জুনায়েদ তৈয়্যব, আবু নাসের শুভ ও মহিন উদ্দিন।

জানা যায়, খাগড়াছড়ি শহরের শব্দমিয়াপাড়ার শিক্ষিত চার বন্ধু মনের টানে পেশা বদলে উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখেন। জমানো টাকা দিয়ে ষোল একর সমতল জমি লিজ নিয়ে শুরু করেন বন্ধু অ্যাগ্রো ফার্মের কার্যক্রম। প্রাথমিকভাবে শসা চাষে মেলে সফলতা। তারপর আর পেছনে ফিরে থাকাতে হয়নি তাদের। শহরে থেকে তিন কিলোমিটার দূরে ঠাকুরছড়া এলাকায় সমতল ভূমিতে খামারে এখন চাষ হচ্ছে বারোমাসি তরমুজ। পাশাপাশি রয়েছে বিভিন্ন ধরনের সবজি।

সরেজমিন কৃষি খামারে দেখা যায়, সতের বিঘা জমির চারপাশে বাঁশের ঘেরা দেওয়া হয়েছে। ভেতরে প্রবেশ করতে দেখা গেল এক বন্ধু তরমুজ সংগ্রহ করছেন। বাকি তিন বন্ধু অন্য ফল ও সবজি বীজ বপন করতে বেড তৈরি করছেন। প্রতিদিন তিন থেকে সাতজন শ্রমিক তাদের সঙ্গে কাজ করেন।

উদ্যোক্তা জামাল বলেন, ২০২২ সালের শেষদিকে অনলাইনে ভিডিও দেখে চার বন্ধু কৃষি খামার করতে আগ্রহী হই। এরপর আমরা ছোটখাটো এক বিঘা জমি দিয়ে প্রজেক্ট শুরু করি। পরে সিজনাল ছাড়া বিশ শতাংশ জায়গায় আমরা তরমুজ চাষ করেছি। এখানে নয়শোর ওপরে গাছ রোপণ করি। প্রতি গাছে তিনটি তরমুজ রাখি। তরমুজের গড় ওজন আড়াই থেকে তিন ও কিছু কিছু ক্ষেত্রে পাঁচ কেজি পর্যন্ত ওজন হয়েছে। এখানে আমাদের খরচ ২৫ হাজার টাকা। ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা লাভ হয়েছে। আরো বড় পরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন বলেও জানান তিনি।

উদ্যোক্তা জুনায়েদ তৈয়্যব বলেন, দেশের বড় বড় কৃষি উদ্যোক্তার পাশাপাশি বিদেশি অনেক উদ্যোক্তাদের কাজ দেখেছি। আমরা চার বন্ধু বারোমাসি তরমুজ চাষ করে সফল। তরমুজের পাশাপাশি রমজান ঘিরে শসা, বেগুন, ঢেঁড়স, করলা, মরিচ, টমেেেটা চাষ করছি বলেও জানান তিনি।

উদ্যোক্তা জুনায়েদ তৈয়্যব বলেন, তরুণরা চাকরির পেছনে না দৌড়িয়ে নিজে কিছু করার ও দেশকে কিছু দেওয়ার যেন চেষ্টা করে।

বন্ধু অ্যাগ্রো ফার্মের উদ্যোক্তারা জানান, কৃষি অফিস সহযোগিতা করলে খাগড়াছড়িতে বড় আকারে কৃষি ফার্ম গড়ে তুলবেন তারা।

তাদের সব ধরনের পরামর্শ ও সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে সদর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মুক্তা চাকমা বলেন, কৃষি অফিস থেকে যে সেবাটা পাচ্ছে সেটা কাজে লাগিয়ে মাঠ পর্যায়ে কার্যক্রমগুলো থেকে তারা লাভবান হবে বলে আশা করি। এলাকার বেকারদের কৃষিখাতে উদ্যোক্তা হওয়ার পরামর্শ দেন এই কর্মকর্তা।

খাগড়াছড়ি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কিশোর কুমার মজুমদার বলেন, এই চার যুবক খুবই উদ্যোগী ও অনুসরণীয়। পাহাড়ি কৃষি গবেষণাকেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আলতাফ হোসেন বলেন, শিক্ষিত বেকারদের প্রতি আমাদের পরামর্শ থাকবে বারি উদ্ভাবিত বিভিন্ন ফল ও সবজি চারা সংগ্রহ করে চাষবাদ করতে পারে এবং সরকার এ বিষয়ে যথেষ্ট সৎ ইচ্ছে আছে। সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন রকম ঋণ দেওয়া হচ্ছে। সেখান থেকে ঋণ সংগ্রহ করে চাষবাদে উদ্বুদ্ধ হলে দেশের উন্নতি হবে।

পিডিএস/জেডকে

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
খাগড়াছড়ি,তরমুজ,বন্ধু,সফল
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close