আব্দুল বাছিত বাচ্চু, মৌলভীবাজার

  ২৩ নভেম্বর, ২০২২

মৌলভীবাজারে কম্বাইন্ড হারভেস্টার উদ্বোধন 

মৌলভীবাজার সদর উপজেলার আজমেরু এলাকায় বুধবার ধান কাটার মেশিন উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান- আব্দুল বাছিত বাচ্চু 

মৌলভীবাজারে আমন ধান তোলার মৌসুমে শ্রমিক সংকট দূর করছে কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিন। জেলার বিভিন্ন এলাকায় এই যান্ত্রিকিকরণ শুরু হয়েছে। এতে ভালো ধান পাওয়ার পাশাপাশি শ্রমিক সংকট দূর হয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

সম্প্রতি সদর উপজেলার আজমেরু এলাকায় জেলা প্রশাসন ও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আয়োজনে ও পাতাকুঁড়ি এগ্রোর সহযোগিতায় খামার যান্ত্রিকীকরণের আওতায় রোপা আমন ধানের চারা রোপণ ও কর্তণের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান। এ লক্ষে মাঠে স্থানীয় কৃষকদের নিয়ে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসানের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপপরিচালক সামসুদ্দিন আহমদ, সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুব্রত কুমার দত্ত, স্থানীয় কৃষি যান্ত্রিকীকরণ খামার মালিক সৈয়দ হুমায়েদ আলী শাহীন ও অন্যান্যরা। এসময় উপস্থিত ছিলেন, উপ সহকারী কৃষি অফিসার নিরোজ কান্তি রায়, স্থানীয় কৃষক বাচ্চু মিয়া, রাজু আহমদ।

জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় এক ইঞ্চি জমি যাতে খালি পড়ে না থাকে সে জন্য কৃষি খাতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে যান্ত্রিকীকরণে ভর্তুকি ও প্রণোদনা দিচ্ছে সরকার। এতে করে কৃষকদের মধ্যে উৎসাহ জাগছে। নবান্নের এই উৎসবে কৃষি যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে রোপা আমন রোপণ এবং কর্তণ অনুষ্ঠানে আমরা এসেছি। এই জমিতে একেবারে অমন রোপণ থেকে শুরু করে কর্তণ পর্যন্ত কম্বাইন্ড হার্ভেস্টারের মাধ্যমে কর্তণ হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যেমন শ্রম কমেছে, খরচ কমেছে, উৎপাদন বেড়েছে। সব কিছু মিলিয়ে কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। কৃষি যান্ত্রিকীকরণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমরা এখান থেকে মৌলভীবাজারের সকল কৃষকদেরকে উৎসাহিত করার চেষ্টা করছি।

কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালক মো শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, আমন ধান চাষে এ বছর অনুকূল পরিবেশ ও পোকা মাকড়ের আক্রমণ কম থাকায় বাম্পার ফলন হয়েছে। পাশাপাশি খামার যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে প্রতি বছর অনাবাদি জমিতে চাষাবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে ও ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

খামার যান্ত্রিক করণের উদ্যেক্তা সৈয়দ উমেদ আলী বলেন, এ বছর ১২৩ বিঘা জমিতে হাইব্রিড ও ব্রি ৭৫ জাতের ধান চাষ করেছেন। এর মধ্যে ৮৩ বিগা জমিতে রাইস ট্রান্সপ্লান্টার দিয়ে চারা রোপণ করেন এবং ওই জমিতে ধান কাটছেন কম্বাইন্ড হারভেস্টার যন্ত্র দিয়ে। ধান কাটা, মাড়াই ও ঝাড়াই এক সাথে হয়ে যায়। যে কারণে শ্রম কম লাগে। এতে খরচ কমে যায়। শ্রমিক সঙ্কট প্রতি বছরই লেগে থাকে তাই আমরা যন্ত্রের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছি।

কম্বাইন্ড হারভেস্টার, পাওয়ার টিলার, শেলো পাম্পসহ সবকিছুই ডিজেলের উপর নির্ভরশীল। সাম্প্রতিক সময়ে ডিজেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষিতে উৎপাদন খরচ অনেক বেড়েছে। সেক্ষেত্রে আমরা মনে করি ধানের মূল্য যদি আরেকটু বৃদ্ধি করা হয় তাহলে কৃষক উপকৃত হবে এবং কৃষকের আগ্রহ বাড়বে।

চলতি বছর জেলায় আমন ধানের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ১ হাজার ৪শ’ত হেক্টর। আবাদ হয়েছে ১ লাখ ১ হাজার ৬শ’ত হেক্টর জমিতে। যার সম্ভাব্য উৎপাদন ধরা হয়েছে ২ লক্ষ ৮০ হাজার মেট্রিক টন। কৃষি বিভাগ আশা করছে এ বছর ৩ লক্ষ মেট্রিক টনের উপরে উৎপাদন হবে।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
মৌলভীবাজার,কম্বাইন্ড হারভেস্টার
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close