নোয়াখালী প্রতিনিধি

  ০৯ অক্টোবর, ২০২১

নোয়াখালীতে ভূমি বিরোধ

পুলিশ সদস্যের হুমকিতে নিরাপত্তাহীনতায় একটি পরিবার 

কনস্টেবল-হারুনুর রশিদ

নোয়াখালীতে ভূমি বিরোধের জের ধরে সরকারি অস্ত্র ব্যবহার করে মো. জাকের হোসেনের পরিবারের সদস্যদের হত্যা করে লাশ গুমের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে পুলিশ কনস্টেবল হারুনুর রশিদের বিরুদ্ধে। তার বিরুদ্ধে স্বাক্ষী দেওয়ায় জহিরুল ইসলাম রবিন নামের এক যুবককে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে হুমকিরও অভিযোগ উঠেছে ওই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে।

সদর উপজেলার পশ্চিম চরউরিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

এব্যাপারে ওই কনস্টেবলের বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরি করে উল্টো বিপাকে পড়েছেন ভুক্তভোগী পরিবার ও ঘটনার স্বাক্ষী জহিরুল ইসলাম রবিন।

ভুক্তভোগী পরিবারের প্রধান মো. জাকের হোসেন জানান, দীর্ঘদিন যাবৎ বড় ভাই আবুল কাশেমের সাথে ভূমির মালিকানা ও বসত ঘরের জায়গা নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। সাম্প্রতিক জাকের হোসেনের বসত ঘরের আংশিক জোরপূর্বক কেটে তার ওপর বিল্ডিং নির্মাণ করেন কাশেম ও তার ছেলেরা। এ নিয়ে স্থানীয়ভাবে একাধিকবার শালিসি বৈঠক হয়। শালিস বৈঠকের সিদ্ধান্ত না মেনে উল্টো আবুল কাশেম তার বসত ঘরের জিনিস চুরি এবং ছেলের বউ জলি আক্তারকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে ছোট ভাই আবুল কালাম আজাদ, জাকের হোসেনসহ তিনজনকে আসামি করে মামলা করেন।

আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য সুধারাম থানা পুলিশকে নির্দেশ দেয়। পুলিশ মামলার তদন্ত শেষে ওই ঘটনার সত্যতা না পেয়ে অভিযুক্তদের চার্জশিটে মামলা থেকে অব্যহতির সুপারিশ করেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে বিভিন্ন সময়ে আবুল কাশেমের মেঝ ছেলে পুলিশ সদস্য হারুনুর রশিদ একই বাড়ির সারওয়ার আলম বাবুলের ছেলে জহিরুল ইসলাম রবিনের ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে একাধিকবার চাচা মো.জাকের হোসন, চাচাতো ভাই সাজ্জাদুর রহমান আরিফ, মিজানুর রহমান বিপ্লবকে হত্যা করে লাশ গুম করার হুমকি দেন। এতে জাকের হোসেনের পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।

ভুক্তভোগী জাকের হোসেন নিজ এবং পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা চেয়ে ২২ আগস্ট সুধারাম মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি অন্তর্ভূক্ত করেছেন। ওই সাধারণ ডায়েরি করার পর ২৪ আগস্ট দুপুরে হারুনুর রশিদ নিজে অবরুদ্ধ করার নাটক সাজিয়ে ৯৯৯ ফোন করে বাড়িতে পুলিশ নিয়ে প্রতিপক্ষ জাকের হোসেন ও তার পরবিারের সদস্যদের হয়রানি করার চেষ্টা করেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে হারুনুর রশিদকে অবরুদ্ধ অবস্থায় না পেয়ে তার ওপর ক্ষুব্ধ হন।

জাকের হোসেন ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যার অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে আবুল কাশেমের ছেলে পুলিশ সদস্য হারুনুর রশিদ বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বলেন আমার কল রেকর্ড আংশিক উপস্থাপন করা হয়েছে এবং আমি কথার প্রসঙ্গে কোটি টাকার মালিকানার কথা বলেছি। আসলে আমার কাছে এত টাকা নাই।

সুধারাম থানার সহকারী পুলিশ পরিদর্শক মিজান উদ্দিন জানান, ৯৯৯ এর ফোন পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে কাউকে অবরুদ্ধ পাইনি। পুলিশ সদস্য হারুনুর রশিদের ঘরের সিসিটিভি ফুটেজেও অবরুদ্ধের কোন ঘটনা দেখতে পাইনি। এটা জায়গা-জমি নিয়ে পারিবারিক একটা সমস্যা।

সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহেদ উদ্দিন সাধারণ ডায়েরি অন্তভুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, জিডির তদন্ত শেষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
ভূমি বিরোধ,নোয়াখালী
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close