গোবিন্দগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি

  ০৫ জুন, ২০২০

আজ বিশ্ব পরিবেশ দিবস

গোবিন্দগঞ্জ পৌর এলাকায় মারাত্মক পরিবেশ দূষণ

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ পৌর এলাকায় পরিবেশ দূষণ মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। শহরে সোনা পোড়ানোর নাইট্রিক এসিডের ঝাঁঝালো গন্ধ, বিভিন্ন যানবাহনের কালো ধোঁয়া, ওয়েল্ডিং কারখানার অতি বেগুনি রশ্মি, খড়ির মিলের ধোঁয়ার ঝাঁঝালো উৎকট গন্ধ আর যত্রতত্র ময়লা-আর্বজনার দুর্গন্ধ জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। নানাভাবে পরিবেশ দূষণের ফলে মানুষ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নাকের ডগায় এসব পরিবেশ দূষণ ঘটলেও অজ্ঞাত কারণে তারা নিরব রয়েছেন।

গোবিন্দগঞ্জে এসিড পোড়ানোর সরকারি নীতিমালাকে উপেক্ষা করে পৌরশহরের কেন্দ্রস্থলে জনবহুল মার্কেট ও হাট এলাকায় জুয়েলারি তৈরির কারখানাগুলোতে সোনার গহনা তৈরি, উজ্জ্বল ও পাকা করণের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে মানবদেহ ও পরিবেশের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর নাইট্রিক ও সালফিউরিক এসিড। এসব এসিডের ধোঁয়া পথচারী, বাসাবাড়ি, মার্কেট ও বিভিন্ন অফিসের লোকজন ও পরিবেশের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিদিন এসব এসিডের ধোঁয়ার ঝাঁঝালো ও উৎকট গন্ধে মানুষজন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে।

অপরদিকে প্রতিদিন প্রকাশ্যে শ্যালো মেসিন দিয়ে তৈরি ক্রুটিপূর্ণ, ঝুকিপূর্ণ যানবাহন ভটভটি, পাওয়ার টিলার চলাচলে এসব যানবাহনের কালো ধোঁয়ায় মারাত্মকভাবে পরিবেশ দূষণ আর বিকট শব্দে শব্দদূষণ ঘটছে। এসব কালো ধোঁয়ার পরিবেশ দূষণে পৌর শহরের মানুষের শ্বাসকষ্টজনিত বিভিন্ন রোগসহ শব্দ দূষণে ছাত্রছাত্রীদের পড়াশুনা বিঘ্নিত হচ্ছে। যানবাহনের হর্নের বিকট শব্দে শিশুদের রক্তচাপ বৃদ্ধি ও হার্টের রোগীদের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। এছাড়া শহরের মধ্যে বিভিন্ন সড়কসহ মহাসড়কের দুই পাশে ও আবাসিক এলাকায় প্রায় শতাধিক ওয়েল্ডিং কারখানায় প্রকাশ্যে ঝালাইয়ের কাজ করা হচ্ছে। এসব ঝালাইয়ের অতি বেগুনি রশ্মি জনসাধারণসহ শিশুদের চোখে মারাত্মক ক্ষতি করছে।

পৌরসভার ময়লা-আবর্জনা ফেলার নির্দিষ্ট ভাগার এবং পর্যাপ্ত ডাস্টবিন না থাকায় বিভিন্ন সড়ক ও পুকুরের পাশ দিয়ে প্রতিদিন ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। কোনো কোনো স্থানে ডাস্টবিন উপচে পঁচা দুর্গন্ধযুক্ত ময়লা আবর্জনা সড়কে ছড়িয়ে পড়ছে। এসব ময়লা-আবর্জনার দুর্গন্ধে বায়ু দূষিতসহ জনস্বাস্থ্যের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে।

শহরে জনসাধারণের চলাচলের ফুটপাত দখল করে বিল্ডিং নির্মাণের ইট, খোয়া, বালু রাখায় পরিবেশ মারাত্মকভাবে দূষিত হলেও পৌর প্রশাসনের পক্ষ থেকে অজ্ঞাত কাণে তাদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে না। এরকম বিভিন্নভাবে পরিবেশ দূষণের ফলে মানুষ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হলেও পরিবেশ অধিদপ্তর ও স্থানীয় প্রশাসন নীরব থাকায় জনমনে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

এ ব্যাপারে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার রামকৃষ্ণ বর্মন বলেন, পৌরসভার মধ্যে বিভিন্ন কারণে পরিবেশ দূষণ হচ্ছে এটা ঠিক, কিন্তু এসব ব্যাপারে কেউ অভিযোগ করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে অথবা ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে জরিমানা করা হবে।

পিডিএসও/হেলাল

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
পরিবেশ,গোবিন্দগঞ্জ,দূষণ
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close