আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি

  ২০ মে, ২০২০

ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের প্রভাবে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি

বরগুনার আমতলীতে ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের প্রভাবে বরগুনার আমতলী ও তালতলী উপজেলার পায়রা নদীসহ সকল নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। তলিয়ে গেছে এ দুই উপজেলার বেড়িবাঁধের বাইরে বসবাসরত হাজার হাজার ঘরবাড়ি। বিকেলের জোয়ারে নদ-নদীতে আরও বেশি পানি বৃদ্ধি পাবে বলে আশংকা করছেন স্থানীয়রা।

ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বুধবার সকাল থেকে পায়রা নদী ভয়ংকর রূপ ধারণ করছে। বড়বড় ঢেউ তীরে আছড়ে পড়ছে। নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বেড়িবাঁধের উচ্চতা ছুঁইছুঁই করছে। আমতলী ও তালতলী উপজেলার বালিয়াতলী, পশুরবুনিয়া, লোচা, নয়াভেঙ্গুলী, ফেরীঘাট, লঞ্চঘাট, আমুয়ারচর, বৈঠাকাটা, আঙ্গুলকাটা, নাইয়াপাড়া, ফকিরহাট, জয়ালভাঙ্গা, গাবতলী, মৌপাড়া, তুলাতলী, বগী, পচাঁকোড়ালিয়া এলাকায় বেড়িবাঁধের বাইরে বসবাসরত কয়েক হাজার পরিবারের বসত বাড়িতে জোয়ারের পানি উঠে তলিয়ে গেছে। এসব এলাকার লোকজন বেড়িবাঁধের উঁচু স্থানে ও কাছাকাছি সাইক্লোন সেল্টারে আশ্রয় নিয়েছেন বলে জানা গেছে। স্থানীয়রা আশংকা করছেন রাতের জোয়ারে নদ-নদীতে পানি আরও বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের প্রভাবে আজ সকালে বরগুনার প্রধান তিনটি নদীসহ ছোটবড় নদীতে চেয়ে যেটুকু পানি বৃদ্ধি পেয়েছে, তা স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে অনেক বেশি। সকাল ৯টায় তিনটি নদী (পায়রা, বিষখালী ও বলেশ্বর) জোয়ারের পানির উচ্চতা ছিল ২.৮৫ সেন্টিমিটার। যা বিপদসীমার সমান সমান। এর এক ঘণ্টা পরে এই নদীতে পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়ে ৩.১০ সেন্টিমিটার হয়।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপক মাহাতাব হোসেন মুঠোফোনে বলেন, বরগুনার তিনটি প্রধান নদী পায়রা, বিষখালী ও বলেশ্বর নদীর পানি স্বাভাবিক জোয়োরের চেয়ে বিপদসীমার ২৫ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে রাতের জোয়ারে নদীতে আরও বেশি পানি বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

আমতলী ফেরিঘাট এলাকার বাসিন্ধা জাহাঙ্গীর হোসেন মৃধা বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে পানি বৃদ্ধি পেয়ে ফেরিঘাটের গ্যাংওয়েসহ ওয়াবদা বেড়িবাঁধের বাইরে বসবাসরত এখানকার শতাধিক পরিবারের বসতঘর পানিতে তলিয়ে গেছে।

তালতলীর জয়ালভাঙ্গা এলাকার মাঝি আবুল কাশেম বলেন, পায়রা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বেড়িবাঁধের উচ্চতা ছুঁইছুঁই করছে। নদীতে প্রচণ্ড ঢেউ শুরু হয়েছে। রাতের জোয়ারে এর চেয়ে যদি বেশি পানি বৃদ্ধি পায় তাহলে তা লোকালয়ে ঢুকে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বেড়িবাঁধের বাইরে বসবাসরত কয়েক হাজার পরিবারের ঘরবাড়ীতে পানি উঠে গেছে। তারা এখন উঁচু স্থানে ও কাছাকাছি আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন।

তালতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আসাদুজ্জামান মুঠোফোনে বলেন, বেড়িবাঁধের বাইরে বসবাসরত সকল পরিবারকে বাধ্যতামূলক সংশ্লিষ্ট আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিতে হবে। যদি কোনো পরিবার আসতে না চায় তাদেরকে পুলিশ দিয়ে ধরে আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসা হবে।

আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনিরা পারভীন মুঠোফোনে বলেন, বেড়িবাঁধের বাইরে বসবাসরতদের আশ্রয় কেন্দ্রে এসে আশ্রয় নেওয়ার জন্য মাইকিং করা হয়েছে। সাইক্লোন সেল্টার আশ্রয় নেওয়াদের জন্য শুকনো খাবার, সাহরি, ইফতার ও বিশুদ্ধ খাবার পানি, মাস্ক ও হাত ধোয়ার জন্য সাবানের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

পিডিএসও/হেলাল

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
পানি বৃদ্ধি,ঘূর্ণিঝড়,আম্ফান,আমতলী,নদ-নদী
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close