বাগেরহাট প্রতিনিধি

  ২৮ এপ্রিল, ২০২০

করোনার প্রভাব

বাগেরহাটে পানির দামে বিক্রি হচ্ছে দুধ

করোনাভাইরাসের প্রভাব পড়েছে উপলকূলীয় জেলা বাগেরহাটের দুগ্ধ শিল্পে। যে কারণে দুধের ন্যায্য মূল্য না পেয়ে এক প্রকার পানির দামে দুধ বিক্রি করছেন জেলার ডেইরি ফার্ম খামারিরা। ৫০ থেকে ৬০ টাকা লিটারের দুধ বিক্রি হচ্ছে মাত্র ২৫ থেকে ৩০ টাকায়। কখনও আবার এ মূল্য গিয়ে ঠেকছে মাত্র ১৫ টাকায়।

এমন অবস্থায় দুধ বিক্রির টাকা দিয়ে গরুর খাদ্য কিনতে পারছে না খামারিরা। আর এ কারণে জেলার কয়েক হাজার দুগ্ধ খামারি পরিবারে চলছে হাহাকার। সংশ্লিষ্ট খামারি বলছেন, দ্রুত এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে জেলার ৩১ হাজার ডেইরি ফার্ম খামারি পথে বসবে।

বাগেরহাট প্রাণিসম্পদ বিভাগের তথ্য মতে, বাগেরহাট জেলায় ডেইরি ফামর্মের সংখ্যা ৩১ হাজার। এর মধ্যে একটি বা দুটি গাভী পালনের আয় দিয়ে বছরজুড়ে পরিবার চলে এ জেলার কয়েক হাজার দুগ্ধ খামারি পরিবারের। এসব খামারের উৎপাদিত দুধ জেলার চাহিদা মিটিয়ে বরিশাল, পিরোজপুর, খুলনা, গোপালগঞ্জ জেলায় সরবরাহ হয়ে থাকে। প্রতিদিন গড়ে এসব ডেইরি ফার্ম থেকে ২৫০ টন দুধ উৎপাদন হয়ে থাকে। করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে বর্তমানে এসব জেলার সাথে একদিকে যেমন যোগাযোগ বন্ধ, অন্যদিকে জেলার সব দধি মিষ্টির দোকানও বন্ধ থাকায় বাগেরহাটে উৎপাদিত দুধ এখন পানির দামে বিক্রি হচ্ছে। দুধ বিক্রির সেই টাকা দিয়ে কেনা যাচ্ছে না গো-খাদ্য। এমনই অবস্থায় দুই-চারটি গাভী পালনকারী ক্ষুদ্র দুগ্ধ খামারি পরিবারে চলছে হাহাকার।

বাগেরহাট জেলা দুগ্ধ মালিক সমবায় সমিতি সহসভাপতি ফজলুল করিম বলেন, জেলায় গ্রাম ও প্রত্যন্ত অঞ্চল গুলোতে অনেক খামারি আছেন, যারা একটা থেকে দুটি গাভী পালন করেন। তারা মূলত দুধ বিক্রি করেই তাদের পরিবার চালান। করোনার প্রভাবে বর্তমানে বাজারে দুধের কোনো ক্রেতা নেই বললেই চলে। এক প্রকার পানির দামেই দুধ বিক্রি করা হচ্ছে। এছাড়া বাজারগুলোতে দোকান-পাট বন্ধ থাকায় গরুর খাবারও ঠিকমত পাওয়া যাচ্ছে না। এমন অবস্থায় সরকারিভাবে জেলার দুগ্ধ খামারিদের সহযোগিতা না করা হলে জেলা দুগ্ধ শিল্প হুমকির মুখে পড়বে।

বাগেরহাট জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. লুৎফর রহমান বলেন, বাগেরহাট জেলা একটি দুগ্ধ প্রধান জেলা। এখানে ক্ষুদ্র,মাঝারি ও বড় আকারের কয়েক হাজার দুগ্ধ খামার রয়েছে। এ জেলা থেকে দুধ ও ছানা পার্শ্ববর্তী বরিশাল, পিরোজপুর, খুলনা ও গোপালগঞ্জ জেলাতে বিক্রি করতো খামারিরা। কিন্তু লকডাউনের কারণে এসব জেলার সাথে খামারিদের যোগাযোগ বন্ধ। এ কারণে জেলায় দুধের দাম অনেক কমে গেছে।

আগে ৫০ থেকে ৬০ টাকায় লিটার বিক্রি হলেও এখন ২৫ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এমন অবস্থায় আমরা স্থানীয়ভাবে জনসাধারণদের দুধ খেতে উৎসাহিত করছি, যাতে দুধের চাহিদা বৃদ্ধি পায়। এছাড়া, করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে দুধের দামও স্বাভাবিক হয়ে আসবে বলে জানান তিনি।

পিডিএসও/হেলাল

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
বাগেরহাট,ডেইরি ফার্ম,দুধ
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close