শরীফুল রুকন, চট্টগ্রাম

  ২৭ জানুয়ারি, ২০১৮

নামেই ট্যুরিস্ট পুলিশ!

কেবল পর্যটন স্পটে টহল ও থানা পুলিশকে সহায়তার মধ্যে সীমাবদ্ধ কার্যক্রম

পর্যটকদের নিরাপত্তায় চার বছর আগে যাত্রা শুরু করে ট্যুরিস্ট পুলিশ। তবে তাদের নেই কোনো বিধিমালা। ফলে পুলিশ হয়েও প্রকৃত ক্ষমতার প্রয়োগ করতে পারছে না তারা। আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া, আসামি গ্রেফতার কিংবা তল্লাশির ক্ষমতাও নেই তাদের। কেবল পর্যটন স্পটে টহল ও থানা পুলিশকে সহায়তার মধ্যে সীমাবদ্ধ ট্যুরিস্ট পুলিশের কার্যক্রম।

ট্যুরিস্ট পুলিশের চট্টগ্রাম জোনের সহকারী পুলিশ সুপার মো. ফখরুল ইসলাম এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘ট্যুরিস্ট পুলিশের গেজেট প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু বিধিমালা হয়নি। ফলে পর্যটকদের চাহিদা অনুযায়ী কাজ করার সক্ষমতা ট্যুরিস্ট পুলিশের নেই। চট্টগ্রাম নগরে বিদেশি পর্যটক এলে বিভিন্ন জায়গা থেকে আমাদের চিঠি দিয়ে নিরাপত্তা চাওয়া হয়। বেশির ভাগ সময় আমরা ওই পর্যটকদের নগর পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দিই। এভাবেই চলছে ট্যুরিস্ট পুলিশের কার্যক্রম’।

তিনি আরও বলেন, ‘বিমানবন্দর, বাস স্টেশন, রেল স্টেশন ও লঞ্চঘাটের নানা স্থানে ট্যুরিস্ট পুলিশের নম্বর দেওয়া থাকে। সেখান থেকে নম্বর নিয়ে অনেকেই আমাদের ফোন করেন। নিরাপত্তাসহ নানা বিষয়ে সাহায্য চান। তখন আমরা সরাসরি গিয়ে তাদের সহযোগিতা করতে পারছি না। এ ক্ষেত্রে থানা পুলিশের মাধ্যমে সহায়তার চেষ্টা করি আমরা।’

এদিকে চট্টগ্রাম নগরের বাকলিয়ায় ১ একর জায়গার ওপর ট্যুরিস্ট পুলিশের চট্টগ্রাম জোনের স্থায়ী কার্যালয় স্থাপন প্রক্রিয়াধীন আছে। বর্তমানে নগরের খুলশী ১ নম্বর রোডে একটি ভাড়া বাসায় কার্যক্রম চলছে ট্যুরিস্ট পুলিশের। একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে চট্টগ্রাম জোনের কার্যক্রম চলার কথা থাকলেও ওই পদে এখন পর্যন্ত কেউ নেই। মঞ্জুরীকৃত ৪৫ জনবলের মধ্যে আছেন ৪২ জন। এর মধ্যে আছেন একজন সহকারী পুলিশ সুপার, একজন পরিদর্শক, তিনজন উপপরিদর্শক, ১৮ জন সহকারী উপপরিদর্শক, পাঁচজন নায়েক ও ১৫ জন কনস্টেবল। এর বাইরে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত এলাকায় একটি বাসা ভাড়া নিয়ে কার্যক্রম চলছে ট্যুরিস্ট পুলিশের; সেখানে মোট ১৬ জন পুলিশ সদস্য কর্মরত আছেন।

চট্টগ্রাম জোনের অর্ধশত জনবলের দায়িত্ব পালনের জন্য ট্যুরিস্ট পুলিশের রয়েছে একটি মাত্র পিকআপ। সেটি নিয়ে চট্টগ্রাম থেকে ২৫ কিলোমিটার দক্ষিণে পারকী সমুদ্র সৈকতে দায়িত্ব পালনে যেতে হয় ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্যদের। আবার একই গাড়িকে ছুটতে হয় চট্টগ্রাম থেকে ৩৭ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে সীতাকুন্ড ইকোপার্কে। এ ছাড়া নগরের ফয়’স লেক, রাঙ্গুনিয়ার শেখ রাসেল অ্যাভিয়ারি পার্কসহ চট্টগ্রামের নানা পর্যটন স্পটে টহলে যেতে ওই একটি পিকআপই ট্যুরিস্ট পুলিশের ভরসা।

ট্যুরিস্ট পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার মো. ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘বিধিমালা থাকলে আমাদের ওপর দায়িত্বটা বাড়ত ও পরিষ্কার হতো। এখন তো আমাদের দায়িত্ব নেই। এমনি ঘুরছি। এখন পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে কোনো অঘটন ঘটলে থানা পুলিশ যদি বলে তোমার তো এখানে কাজ নেই। তখন আমাকে সেখান থেকে চলে আসতে হবে। পর্যটন স্পটে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার অধিকার আমাদের নেই।’

ট্যুরিস্ট পুলিশের চট্টগ্রাম বিভাগের অতিরিক্ত ডিআইজি মুহাম্মদ মুসলিম বলেন, দেশের সম্ভাবনাময় খাতের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ পর্যটনশিল্প। এ খাতকে এগিয়ে নিতে চালু করা হয় ট্যুরিস্ট পুলিশ। দেশি-বিদেশি পর্যটকদের নিরাপত্তা প্রদানসহ অন্যান্য সেবা দানে ট্যুরিস্ট পুলিশ ভূমিকা রাখছে। বিধিমালা হলে ট্যুরিস্ট পুলিশের কাজে আরো গতি আসবে।’

পিডিএসও/তাজ

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
পর্যটন,ট্যুরিস্ট পুলিশ,চট্টগ্রাম,পর্যটকদের নিরাপত্তা
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist