বাণিজ্য ডেস্ক

  ১৮ অক্টোবর, ২০১৭

এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে

৬ বছরে কাজ মাত্র ৯ শতাংশ

নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি হয়েছিল ২০১১ সালে, ওই বছরই ভিত্তি স্থাপন; কিন্তু ছয় বছরে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ এগিয়েছে মাত্র ৯ শতাংশ। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের (পিপিপি) এ প্রকল্পে বিনিয়োগ ও নির্মাণকাজের দায়িত্বে আছে ইতাল-থাই ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি। প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জমি অধিগ্রহণে জটিলতা আর নির্মাতা প্রতিষ্ঠান সময়মতো অর্থ জোগাড় করতে না পারায় দীর্ঘদিন আটকে ছিল এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ। তবে সেসব বাধা ‘অনেকটাই কেটে যাওয়ায়’ আগামী তিন বছরে পুরো প্রকল্পের কাজ শেষ করে ২০২০ সালে নির্ধারিত সময়েই তা যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া যাবে বলে আশা করছেন ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের পরিচালক কাজী মুহাম্মদ ফেরদৌস। তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত প্রকল্পের ভৌত অগ্রগতি ৯ শতাংশ। কাজের গতি স্লো, এটা ঠিক। তবে এত দিন মাটির নিচের কাজ বেশি হওয়ায় ভিজিবল হয়নি। এখনো ওপরের কাজ তেমন শুরু হয়নি। ডিসেম্বর থেকে ফুল সুইংয়ে কাজ শুরু হবে।’

প্রকল্প এলাকাকে তিন অংশে ভাগ করা হয়েছে। প্রথম অংশে বিমানবন্দর থেকে বনানী পর্যন্ত ৭ দশমিক ৪৫ কিলোমিটার, দ্বিতীয় অংশে বনানী থেকে মগবাজার পর্যন্ত ৫ দশমিক ৮৫ কিলোমিটার এবং তৃতীয় অংশে মগবাজার থেকে কুতুবখালী পর্যন্ত ৬ দশমিক ৪৩ কিলোমিটার। প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে আট হাজার ৯৪০ কোটি টাকা। এর মধ্যে দুই হাজার ৪১৩ কোটি টাকা দেবে সরকার। বাকি টাকা নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ইতাল-থাই বিনিয়োগ করবে। প্রকল্পের জন্য মোট ২২০ দশমিক ১৬ একর জমি অধিগ্রহণ করতে হবে। এক্সপ্রেসওয়ে চালু হলে ২৫ বছর পর্যন্ত টোল আদায় করবে ইতাল-থাই।

ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের জন্য ২০১১ সালের ১৯ জানুয়ারি ইতাল-থাইয়ের সঙ্গে প্রথম চুক্তি করে সেতু বিভাগ। সে বছর ৩০ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিত্তি স্থাপন করেন। তবে ভূমি অধিগ্রহণ নিয়ে জটিলতায় কাজ আটকে থাকে দুই বছর। নকশা পরিবর্তন ও মূল্যস্ফীতির কারণে প্রকল্প ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় ২০১৩ সালের মাঝামাঝি সময়ে নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে নতুন করে চুক্তি করতে হয়।

প্রকল্প পরিচালক ফেরদৌস বলেন, ‘ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা দিয়ে মূল অ্যালাইনমেন্ট যাওয়ার কারণে জমি অধিগ্রহণে সমস্যা হয়েছে। দুই-তিন বছর পিছিয়ে যেতে হয়েছে আমাদের। তা ছাড়া বিনিয়োগকারীর ফান্ডিং কনফার্ম হয় নাই। এ কারণেও সময় বেশি লেগেছে।’ তবে নির্মাতা প্রতিষ্ঠান আশ্বাস দিয়েছে, আসছে ডিসেম্বরের মধ্যেই প্রকল্পের অর্থের জোগান হয়ে যাবে। আর তাহলেই পুরোদমে কাজ শুরু করা যাবে বলে তিনি আশা করছেন।

গত সোমবার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সামনে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, নির্মাণকাজের জন্য আনা হয়েছে ভারী যন্ত্রপাতি। বিমানবন্দরের সামনে প্রি-কাস্ট ইয়ার্ড তৈরি করা হচ্ছে। ওই ইয়ার্ডে এক্সপ্রেসওয়ের গার্ডার তৈরি করা হবে। পরে তা নিয়ে মূল কাঠামোর সঙ্গে জোড়া দেওয়া হবে।

নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ইতাল-থাইয়ের কর্মকর্তারা জানান, এক্সপ্রেসওয়ের ২ নম্বর পায়ারের ওপর ক্রস বিম বসানোর জন্য স্টিলের কাঠামো তৈরির কাজ শেষ। পরে ক্রস বিমের ওপর বসানো হবে গার্ডার। এভাবেই প্রকল্পের সুপার স্ট্রাকচার দৃশ্যমান হবে।

প্রকল্পের প্রথম অংশে বিমানবন্দর থেকে বনানী ওভারপাস পর্যন্ত ৭ দশমিক ৪৫ কিলোমিটারের মধ্যে ২৩৩টি পায়ার বসবে। তার মধ্যে এখন পর্যন্ত ১০টি পায়ার পুরোপুরি নির্মাণ হয়েছে, আংশিক শেষ হয়েছে ২৭টি।

২০২০ সালের মধ্যে এ প্রকল্পের কাজ আদৌ শেষ করা সম্ভব কি না- এমন প্রশ্নে প্রকল্প পরিচালক বলেন, ‘সরকার আমাদের ওই পর্যন্ত সময় দিয়েছে। এই সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে না পারলে আমাদের জবাবদিহি করতে হবে।’

পিডিএসও/তাজ

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে,পিপিপি,ইতাল-থাই,সেতু বিভাগ
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist