নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮

দরপতন থামছে না পুঁজিবাজারে উদ্বিগ্ন বিনিয়োগকারীরা

তারল্য সংকটের ভয়কে কারণ মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা

বড় পতন থেকে যেন কোনোভাবেই রেহাই পাচ্ছে না পুঁজিবাজার। সূচকের ওঠানামা অস্থির হয়ে উঠেছে। এক দিন সূচক বাড়ছে তো অন্যদিন ব্যাপক দরপতন হচ্ছে। কয়েক সপ্তাহ ধরে বাজারে এমন চিত্রই দেখা যাচ্ছে। এর কারণ হিসেবে বাজারসংশ্লিষ্টরা ব্যাংকিং খাতে তারল্য সংকটকে দায়ী করছেন। তারা বলছেন, ব্যাংকিং সেক্টরে তারল্য সংকটের কথা খোদ গভর্নরই স্বীকার করে নিয়েছেন। এমনকি তিনি সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে আমানত তুলে না নেওয়ার সুপারিশ করেছেন। এতে বাজারে সংকট আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে ব্যাংকিং খাতে তারল্য সংকট দেখা দেওয়ায় এর প্রভাব পড়েছে পুঁজিবাজারে। পুঁজিবাজারেও তারল্যের অভাব দেখা দিয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে ঋণ-আমানত অনুপাত কমানোর সিদ্ধান্তের পর থেকেই তারল্যের অভাব হঠাৎ করে একটি সমস্যা হয়ে দেখা দেয়। অথচ কিছুদিন আগেও ব্যাংকগুলোতে প্রচুর তারল্য জমা হয়েছিল। এখন মানুষের মধ্যে ভয় থেকেই এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা

গতকাল বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউস ঘুরে দেখা গেছে, ব্যাপক দরপতনে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন বিনিয়োগকারীরা। তারা বলছেন, বাজারে দরপতন হতেই পারে। তাই বলে এত উত্থান-পতন আশঙ্কাজনক। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রি করে দেওয়ার কারণেই সূচক এভাবে কমে যাচ্ছে বলে মনে করেন বিনিয়োগকারীরা। তারা বলছেন, ঋণ-আমানত অনুপাত কমানোর ফলে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের সক্ষমতা কমে গেছে। ফলে তারা বাধ্য হয়ে শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছেন। তাছাড়া অনেকে শেয়ার বিক্রি না করলেও শেয়ার কেনার সক্ষমতা নেই। ফলে সূচক ব্যাপকভাবে কমে যাচ্ছে। এ অবস্থায় প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ বাড়ানোর বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি বিনিয়োগকারীদের।

আইডিএলসি ইনভেস্টমেন্টসের দৈনন্দিন বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গতকাল বাজারে দরপতনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা ছিল ব্যাংকিং খাতের। এ খাতের কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দাম গড়ে প্রায় ৩ শতাংশ কমেছে। এ ছাড়া ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক খাতের কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দাম গড়ে প্রায় ২ দশমিক ২০ শতাংশ কমেছে। এ ছাড়া বস্ত্র ও প্রকৌশল খাতের কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দাম গড়ে প্রায় দেড় শতাংশ করে কমেছে। গতকাল বাজারে লেনদেনের ক্ষেত্রেও এগিয়ে ছিল ব্যাংকিং খাত। এ খাতের কোম্পানিগুলোতে ৬৬ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে; যা ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৫ শতাংশেরও বেশি। এ ছাড়া প্রকৌশল খাতের কোম্পানিগুলোতে লেনদেন হয়েছে ৬১ কোটি টাকা; যা ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৪ শতাংশ।

গতকাল দিনের শুরু থেকেই ডিএসইর সূচক ব্যাপকভাবে কমতে থাকে। তথ্যে দেখা গেছে, গতকাল ডিএসইর সার্বিক সূচক ৯৯ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৬৪ শতাংশ কমে ৫ হাজার ৯৫০ পয়েন্টে নেমে এসেছে। আর ডিএস৩০ সূচক কমেছে ৩৭ পয়েন্ট। ডিএসইতে গতকাল লেনদেন হয়েছে ৪৪০ কোটি ২৩ লাখ টাকার শেয়ার; যা আগের দিনের তুলনায় প্রায় ১৪ শতাংশ কম। অন্য বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) মূল্যসূচক সিএএসপিআই ২৫১ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১৮ হাজার ৪৭০ পয়েন্টে। সিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ২২৭টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৩৭টির, কমেছে ১৭৬টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৪টির শেয়ারদর।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist