রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ চত্বরে শেষ হলো তিন দিনব্যাপী জাতীয় সবজি মেলা ২০১৮। কৃষি মন্ত্রণালয় তৃতীয়বারের মতো এই মেলার আয়োজন করে। মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল¯œাহ্। তিনি বলেন, জাতীয় সবজি মেলা সবার মধ্যে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে। সবজি উৎপাদনকে উৎসাহিত করতে এ মেলা গুর¤œত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। মেলায় প্রায় ৬০ লাখ টাকার সবজি বিক্রি হয়েছে বলে তিনি জানান।

তিনি বলেন, সংরÍগণের কারণে আমাদের অনেক সবজি নষ্ট হয়ে যায়। এ বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। ফসল বিন্যাসের মাধ্যমে নতুন প্রযুক্তি দিয়ে আমাদের উৎপাদন বাড়াতে হবে। মানসম্পন্ন সবজি উৎপাদন করে সবজি রফতানির আহ্বান জানান তিনি। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (পিপিসি) মোহাম্মদ নজমুল ইসলাম বলেন, আমাদের সবজির বার্ষিক চাহিদা প্রায় তিন কোটি মেট্রিক টন, উৎপাদন হচ্ছে এক কোটি মেট্রিক টন। উন্নত জাত ও গবেষণার মাধ্যমে উৎপাদন বাড়িয়ে এ চাহিদা পূরণ করতে হবে। সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি সবজি চাষে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, জেলা ও মেলায় অংশগ্রহণকারী স্টলের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন। পুরস্কার হিসেবে ছিল ক্রেস্ট, সনদ ও টাকা।

জাতীয় পর্যায়ে ২০১৭ সালে শাকসবজি আবাদে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার মোছা. নূর¤œন্নাহার বেগমকে প্রথম পুরস্কার প্রদান করা হয়। দ্বিতীয় হয়েছেন বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার মো. মিজানুর রহমান। তৃতীয় হয়েছেন খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার নবদ্বীপ মলি¯œক।

বিশেষ পুরস্কার পেয়েছেন ঝিনাইদহের কালিগঞ্জ উপজেলার মোছা. মনোয়ারা বেগম ও সিরাজগঞ্জ সদরের মো. আবদুস সাত্তার। এ ছাড়াও বাড়ির ছাদে শাকসবজি আবাদে বিশেষ অবদানের জন্য ব্যক্তি পর্যায়ে ঢাকার ধানমন্ডি এলাকার ডা. ফেরদৌস আরা চৌধুরী, মোহাম্মদপুরের মোহাম্মদ লুতফর রহমান ও মো. মোশারফ হোসেনকে বিশেষ পুরস্কার প্রদান করা হয়।

শাকসবজি উৎপাদনে হেক্টরপ্রতি গড় ফলন সর্বোচ্চ ও দেশের সবজির চাহিদা পূরণে বিশেষ অবদান রাখায় মুন্সীগঞ্জ জেলাকে প্রথম, দ্বিতীয় জয়পুরহাট ও গাইবান্ধা জেলাকে তৃতীয় পুরস্কার প্রদান করা হয়। স্টলের যথার্থতা, সাজসজ্জা, প্রদর্শিত দ্রব্যের মান ও পরিমাণ, প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতা ও স্টলের উপস্থাপন করে জাতীয় সবজি মেলায় অংশগ্রহণকারী স্টলগুলোর মধ্যে সরকারি পর্যায়ে প্রথম হয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর, যৌথভাবে দ্বিতীয় হয়েছে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) ও বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) এবং তৃতীয় হয়েছে হর্টেক্স ফাউন্ডেশন।

বেসরকারি পর্যায়ে প্রথম হয়েছে মেটাল অ্যাগ্রো লিেিমিটড, দ্বিতীয় হয়েছে লাল তীর সিড লিমিটেড এবং যৌথভাবে তৃতীয় হয়েছে ব্রাক সিড অ্যান্ড অ্যাগ্রো এন্টারপ্রাইজ ও সোলারগাও। মেলায় অংশগ্রহণকারী অন্যান্য সব প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কৃত করা হয়। মেলায় মোট ৫৭টি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করে। এবারের মেলার প্রতিপাদ্য ছিল ‘সারা বছর সবজি চাষে, পুষ্টি-স্বাস্থ্য-অর্থ আসে’। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মহাপরিচালক কৃষিবিদ মো. আবদুল আজিজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের হর্টিকালচার উইংয়ের পরিচালক মিজানুর রহমান।

"